Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

61খোলা বাজার২৪ ॥মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর ২০১৫: আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন মিচেল জনসন। মঙ্গলবার শেষ হতে যাওয়া নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে পার্থ টেস্টই এই ফাস্ট বোলারের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ।
ম্যাচে আগে তো বটেই, পার্থ টেস্টের প্রথম চার দিনেও ছিল না কোনো ইঙ্গিত। পঞ্চম দিনের খেলা শুরু হওয়ার আগে ঘোষণাটা এলো হঠাৎ করেই। পার্থ টেস্টের শেষ দিনটিই হতে যাচ্ছে জনসনের আন্তজার্তিক ক্যারিয়ারের শেষ দিন!
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সঙ্গে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটকেও বিদায় বলে দিয়েছেন জনসন। ইতি টানলেন প্রায় ১০ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের। তবে এই যুগের আর বেশিরভাগ ক্রিকেটারের মতোই টি-টোয়েন্টির ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোয় খেলে যাবেন বাঁহাতি এই ফাস্ট বোলার।
জনসনের বিদায়ের ঘোষণাটা চমকে দেওয়ার মত অনেক কারণেই। কিছু দিন আগে এক বার জানান, গত অ্যাশেজ শেষেই অবসরের কথা ভেবেছিলেন। কিন্তু পরে আবার শুরু করেছেন নতুন উদ্যমে। অস্ট্রেলিয়ার নবীন পেস আক্রমণে হতে চেয়েছেন অভিজ্ঞতার ঢাল। ৩০০ টেস্ট উইকেট ছোঁয়ার পর চোখ রেখেছিলেন বোলিং গুরু ডেনিস লিলির ৩৫৫ উইকেটে।
পার্থ টেস্ট শুরুর আগে স্বীকার করেছিলেন, অবসর ভাবনা এখন তার নিত্যসঙ্গী। তবে সঙ্গে এটাও যোগ করেছিলেন, “এখনই অবসর নিচ্ছি না। যতদিন পারফর্ম করছি, দলে নিজের কাজ করছি এবং মানসিকভাবে ভালো অনুভব করছি, আমি খেলে যাব।”
পার্থ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ওভারপ্রতি সাড়ে পাঁচ করে রান গুণেছেন, ১৫৭ রান খরচায় ১ উইকেট নেওয়ার পরই বদলে গেছে তার ভাবনা।
এই মাসেই ৩৪ পূর্ণ করা জনসন বিদায়ের ঘোষণায় জানালেন ক্যারিয়ার নিয়ে তৃপ্তির কথা।
“আমার মনে হয়েছে, বিদায় বলে দেওয়ার সেরা সময় এখনই। আমি সৌভাগ্যবান যে অসাধারণ একটি ক্যারিয়ার ছিল আমার। দেশের হয়ে খেলা প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করেছি। অবিশ্বাস্য একটি যাত্রা ছিল এটি। তবে এক সময় এই যাত্রা শেষ করতেই হতো।”
মনের ভেতর নিজেকে নিয়ে সংশয় জন্মেছে বলেই অবসরের ঘোষণা, জানালেন জনসন।
“অনেক ভেবেই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি ঠিক নিশ্চিত নই, এই ম্যাচের পর ব্যাগি গ্রিন মাথায় চাপিয়ে যে পর্যায়ের পারফরম্যান্স করা উচিত, সেটি আমি করতে পারব কিনা। ক্যারিয়ারে অনেক ওঠা-নামা ছিল আমার। তবে নিজের প্রতি সৎ থেকে বলতে পারি, সব সময় নিজের সর্বোচ্চটা উজার করে দিয়েছি। অ্যাশেজ জয় এবং বিশ্বকাপ জয়ের স্মৃতি রোমন্থন করব আজীবন।”
২০০৫ সালের ডিসেম্বরে ওয়ানডে দিয়ে জনসনের আন্তর্জাতিক অভিষেক। ১৫৩ ওয়ানডেতে নিয়েছেন ২৩৯ উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে চতুর্থ সফল ওয়ানডে বোলার তিনি। জিতেছেন ২০০৭ ও ২০১৫ বিশ্বকাপ। গত বিশ্বকাপের ফাইনালই হয়ে থাকল তার শেষ ওয়ানডে। ৩০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ফাইনাল জয়ে রেখেছিলেন বড় অবদান।
তবে জনসনের সেরাটা দেখেছে টেস্ট ক্রিকেট। পার্থ টেস্টের প্রথম ইনিংস পর্যন্ত ৭৩ টেস্টে উইকেট ৩১১টি। ওয়ানডের মতো টেস্টেও অস্ট্রেলিয়ার চতুর্থ সফল বোলার। টেস্ট ইতিহাসের চতুর্থ সফল বাঁহাতি বোলারও। ২০১৩-১৪ অ্যাশেজে ৩৭ উইকেট নিয়ে ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করা তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা সিরিজ।
তবে স্রেফ পরিসংখ্যানে বাধা যাবে না জনসনকে। ব্যাটসম্যানদের মনে কাঁপন ধরানো ভীতি জাগানিয়া ফাস্ট বোলিং ক্রিকেটে ফিরিয়ে এনেছিলেন তিনি। জনসনের বিদায়ে আপাতত সমাপ্তি ভীতিকর ফাস্ট বোলিংয়ের অধ্যায়েরও।