Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

77খোলা বাজার২৪ ॥মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর ২০১৫: দুই দলের ব্যবধান আকাশ আর পাতাল। একটি দল বিশ্বকাপ খেলেছে চারবার, আরেকটি আঞ্চলিক প্রতিযোগিতার শিরোপা জিততে মাথা কুটে মরে। সুযোগ-সুবিধা, অবকাঠামো-সব দিক দিয়েই অসম দুটি দল অস্ট্রেলিয়া আর বাংলাদেশের ফুটবল ম্যাচে কী কী হতে পারে, সেটা বোধ হয় ম্যাচের আগেই অনেকটা অনুমান করে ফেলা যায়। পার্থের অ্যাওয়ে ম্যাচে প্রথম ২৯ মিনিটেই ৪-০ গোলে পিছিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। মঙ্গলবার ঢাকার হোম ম্যাচে বাংলাদেশের জালে চারবার বল পাঠাতে অস্ট্রেলিয়া সময় নিল ৪১ মিনিট পর্যন্ত। শেষ ৪৯ মিনিট কোনো গোল খায়নি বাংলাদেশ। উন্নতি কী তবে এটাই?
নাহ্, এই ম্যাচে উন্নতি আরও আছে। পার্থে পুরো ম্যাচেই নিজেদের সীমানায় অস্ট্রেলিয়ার আক্রমণের তোড় সামলাতে ব্যস্ত ছিল বাংলাদেশের রক্ষণভাগ। আজ কিন্তু আক্রমণ সামলানোর সঙ্গে সঙ্গে কখনো কখনো অস্ট্রেলিয়ার চোখে চোখ রেখেও কথা বলেছে বাংলাদেশ। ম্যাচের একটি বিশেষ মুহূর্ত তো বিশেষভাবেই স্মরণীয়। ১৩ মিনিট থেকে ১৭ মিনিট-এই চার মিনিট দারুণভাবেই ছিল বাংলাদেশের আধিপত্য।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে উপস্থিত হাজার বিশেক দর্শককে উন্মাতাল করে অস্ট্রেলীয় সীমানায় বল প্লে করে যাচ্ছিলেন মামুনুল, আবদুল বাতেন কোমল, নাসির, হেমন্ত, জীবনরা। এই সময়ের বাইরেও পুরো ম্যাচে অনেকবারই অস্ট্রেলিয়ার সীমানায় ছিল বাংলাদেশের বিচরণ। দ্বিতীয়ার্ধে তো বাংলাদেশের সাহসী ফুটবলের সামনে রীতিমতো চাপেই থাকল অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয়ার্ধের পুরো সময় অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে সমান তালে খেলাটাকে আপনার প্রশংসা করতেই হবে।
চার গোলের তিনটিই করেছেন। অস্ট্রেলীয় ফুটবলের এই বড় তারকা তাঁর গোল স্কোরিং ক্ষমতায় মোহিত করেছেন সবাইকে। তিনি যে পরিস্থিতি থেকে হাফ চান্সকে গোলে পরিণত করেছেন, সেগুলোই আসলে ম্যাচে দুই দলের পার্থক্যটা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া প্রথম গোল পায় ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই। তার আগে অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার একটি আক্রমণ দাঁতে দাঁত চেপেই ঠেকিয়েছিলেন নাসিরুল আলম। বাংলাদেশের রক্ষণসীমানার একটু সামনে পাওয়া ফ্রি কিকটি অ্যারন মুই দুর্দান্তভাবে গোলমুখে ফেললে, তাতে আলতোভাবে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন কাহিল। তিনি পরের দুটো গোল করেন ৩২ ও ৩৬ মিনিটে। ৪১ মিনিটে অ্যারন মুইয়ের আরও একটি ফ্রি কিকে ফাঁকায় দাঁড়িয়ে চতুর্থ গোলটি করেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক মাইল জেডিনাক।
বাংলাদেশের গোলবারে আজ দুর্দান্তই ছিলেন শহীদুল আলম। অস্ট্রেলিয়ার লম্বা ফরোয়ার্ডদের মাথার ওপর থেকে তিনি যেভাবে ছো মেরে একের পর এক লুফে নিয়েছেন, তা প্রশংসা পাওয়ারই যোগ্য। দেশের এক নম্বর গোলরক্ষক হয়ে ওঠার সব গুণাবলিই যে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের এই দীর্ঘদেহী গোলরক্ষকের মধ্যে বিদ্যমান, সেটা তিনি আজ খুব ভালোভাবেই প্রমাণ করেছেন।
মধ্যমাঠে জামাল ভূঁইয়া আজ দারুণ পরিশ্রম করে খেলেছেন। অস্ট্রেলিয়ার মধ্যমাঠের খেলোয়াড়দের সঙ্গে টক্কর দিয়ে তিনি বারবারই বল কেড়ে নিয়েছেন। প্রথমার্ধের ১৬ মিনিটে মামুনুলের একটি ক্রস থেকে অস্ট্রেলিয়ার গোলমুখে বল পেয়েও ঠিকমতো শট নিতে না পারেননি তিনি। অস্ট্রেলীয় গোলরক্ষক অ্যাডাম ফেডারিচি ঠিক ওই সময় যে জায়গায় ছিলেন, তাতে জামাল গোলে শট নিতে পারলে তাতে কিছু ঘটলেও ঘটতে পারত।