Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

78খোলা বাজার২৪ ॥মঙ্গলবার, ১৭ নভেম্বর ২০১৫: চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি ও মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার আগের অর্থবছরের মতোই থাকবে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।
ঢাকায় আইএমএফের আর্টিকেল ফোর মিশনের দুই সপ্তাহের সফর শেষে মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ পূর্বাভাস দেওয়া হয়।
মিশন প্রধান রডরিগো কিউবেরো বলেন, “সরকারি খাতে বেতন, বিনিয়োগ ও রেমিটেন্স বাড়ার প্রভাবে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের মূল্যস্ফীতি ও প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধি আগের ২০১৪-১৫ অর্থবছরের মতোই থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।”
গত অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ দশমিক ৫ শতাংশ; মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশ।
জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতিতে ইতিবাচক পরিস্থিতি বিরাজমান থাকলেও বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
“কর-জিডিপি অনুপাত বিশ্বের মধ্যে কম। একভাবে সমমানের অন্য দেশের চেয়ে অবকাঠামো ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে সরকারের বিনিয়োগ কম। এসব খাতে প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ দরকার, যা বাংলাদেশের জন্য চ্যালেঞ্জ।”
জ্বালানি ও পরিবহন খাতের দুর্বলতার কারণে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ একটি নির্দিষ্ট জায়গায় আটকে রয়েছে মনে করেন আইএমএফের এই অর্থনীতিবিদ।
“উচ্চ মাত্রার খেলাপি ঋণ ও দুর্বল সুশাসন ব্যাংকিং খাতে, বিশেষত রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের জন্য একটি বড় বোঝা, যা ঋণের সুদহার বাড়াচ্ছে ও অর্থনীতিতে ঋণপ্রবাহ কমিয়ে দিচ্ছে।”
প্রবৃদ্ধির জন্য সরকারি ব্যয় বাড়ানোর পাশাপাশি বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বিদ্যুৎ ও পরিবহন অবকাঠামো উন্নয়নের উপর জোর দেন আইএমএফ প্রতিনিধি।
“আর সরকারের ব্যয় বাড়াতে হলে দেশের কর রাজস্বও বাড়াতে হবে।”
একইসঙ্গে কর ও শুল্কায়ন পদ্ধতি, বৈদেশিক মুদ্রা নীতি ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমুলকার‌্যক্রম আরও দক্ষ করে তোলার পরামর্শ দেন তিনি।
এছাড়া ২০১৬ সালের জুলাই থেকে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের জন্য কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করেছে আইএমএফ মিশন।
আইএমএফ মনে করে, নতুন ভ্যাট আইন দরিদ্রদের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের রক্ষা করবে। একইসঙ্গে কর প্রশাসনকে আরও স্বচ্ছ করবে।
সরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের আর্থিক প্রতিবেদনকে আরও স্বচ্ছ করতে বাইরের প্রতিষ্ঠান দিয়ে নিরীক্ষা করার প্রস্তাব করেছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশের সরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক প্রতিবেদনে সঠিক তথ্য তুলে ধরে না বলে দীর্ঘ দিন ধরে অভিযোগ করে আসছে আইএমএফ।
আর্থিক খাতকে আরও শক্তিশালী করা ও ঋণ প্রবাহকে আরও উদ্দীপ্ত করার জন্য আর্থিক আইন বাস্তবায়ন ও পরিদর্শন বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে আইএমএফ।
সরকারের আর্থিক চলক হিসেবে সঞ্চয়পত্রের উপর নির্ভরতা তা কমানোতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে আইএমএফ মিশন।
৪ নভেম্বর রড্রিগো কিউবেরোর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের এই মিশন বাংলাদেশে আসে।
সফরে অর্থমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, অর্থসচিব, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, ব্যবসায়ী ও ব্যাংকিং খাতের বিভিন্ন প্রতিনিধি, শ্রমিক ইউনিয়ন ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হয়।