Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

18খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৫: নাহ, পারলেন না নেইমার। পারলেন না বার্সেলোনার হয়ে দুর্দান্ত ফর্মটাকে জাতীয় দলের জার্সিতে টেনে আনতে। তবে তাতেও অবশ্য থেমে থাকেনি ব্রাজিল। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে পেরুকে হারিয়েছে ৩-০ গোলে।
সর্বশেষ আর্জেন্টিনার ম্যাচে ছিলেন মোটামুটি অদৃশ্য হয়ে। আজ অবশ্য ‘একটু বেশি’ দৃশ্যমান ছিলেন নেইমার। উইলিয়ানের সঙ্গে মিলে বেশ কয়েকটি আক্রমণ সাজিয়েছেন। দুবার গোলের কাছাকাছিও চলে গিয়েছিলেন। প্রথমার্ধের শেষ দিকে তাঁর দুর্দান্ত ওভারহেড কিকটি বার ঘেঁষে চলে যায়। দ্বিতীয়ার্ধের মাঝামাঝি তো বল জালে ঠেলেও দিয়েছিলেন, কিন্তু অফসাইডের খাঁড়ায় সেটি বাতিল হয়ে যায়।
তবে নেইমার জ্বলে উঠতে না পারলেও দুর্বল পেরুকে হারাতে খুব বেশি ঘাম ঝরাতে হয়নি ব্রাজিলকে। প্রথমার্ধে ডগলাস কস্তার গোলের এগিয়ে যায় সেলেকাওরা। আর দ্বিতীয়ার্ধে রেনাতো অগুস্তো ও ফিলিপে লুইসের গোলে ব্রাজিলের দাপট স্পষ্ট হয়ে ওঠে স্কোরলাইনেও। এ জয়ে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের বাছাইপর্বে পয়েন্ট তালিকায় তিন নম্বরে উঠে এল দুঙ্গার দল।
দুঙ্গার ব্রাজিলের বিষয়ে একটা কথা বেশ শোনা যায়-এঁদের খেলা হয়তো ঠিক ‘জোগো বনিতো’ হবে না, তবে এঁরা কার্যকরী ফুটবল খেলে জয় তুলে নিতে পারে। আজকের ম্যাচটিও এর উদাহরণ হয়ে রইল। ব্রাজিল হয়তো ‘ব্রাজিলে’র মতো খেলেনি, তবে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে প্রতিপক্ষের মাঠে টানা ২৪ ম্যাচে জয়হীন পেরুকে হারাতে খুব বেশি কষ্টও করতে হয়নি।
ম্যাচের শুরুতে অবশ্য এমন আভাস ছিল না। বলের দখল শুরু থেকেই ব্রাজিলের বেশি ছিল। তবে প্রথম ২০ মিনিটে আক্রমণে একটু বেশি ভয়ংকর দেখাচ্ছিল পেরুকেই। ৪ মিনিটে স্ট্রাইকার গুরেরো আরেকটু মাথা ঠান্ডা রেখে শটটা নিলে, কিংবা মিনিট চারেক পর ৩৫ গজ দূর থেকে জেফারসন ফারফানের শটটা জালের ঠিকানা খুঁজে পেলে ম্যাচের হিসেবটাই পালটে যেত।
তবে ম্যাচে পেরুর ‘আধিপত্য’ অতটুকুই। এরপর সময় যত গড়িয়েছে, ম্যাচে ব্রাজিলের দাপট আরও সুস্পষ্ট হয়েছে। অমন ভালো শুরুটাকে বরং পেরুর আক্ষেপের গল্প বানিয়ে দিয়ে ২২ মিনিটে ব্রাজিলকে এগিয়ে দিলেন ডগলাস কস্তা। উৎসে ছিল ডান প্রান্ত থেকে উইলিয়ানের ক্রস। এই মৌসুমে ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের অন্যতম বড় আবিষ্কার এই বায়ার্ন মিউনিখ উইঙ্গার দুর্দান্ত ফর্মটা টেনে আনলেন ব্রাজিলের হলুদ জার্সিতেও। আর্জেন্টিনা ম্যাচেও কস্তা মাঠে নামার পরই সমতাসূচক গোলটা পেয়েছিল ব্রাজিল। তারই পুরস্কার হিসেবে আজ শুরু থেকেই ছিলেন একাদশে।
ব্রাজিলের বাকি গোল দুটিতেও এই বায়ার্ন উইঙ্গারের অবদান। ৫৭ মিনিটে দুর্দান্ত ‘সলো রানে’র পর তাঁর বাড়িয়ে দেওয়া বল থেকেই গোল করেন রেনাতো অগুস্তো, ব্রাজিলের জার্সিতে করিন্থিয়ানস মিডফিল্ডারের এটি প্রথম গোল। এর ২০ মিনিট পর কস্তার শট পেরু গোলরক্ষক ফিরিয়ে দেওয়ার পর ফিরতি বলে গোল করেন ফিলিপে লুইস।
কস্তা গোল পেতে পারতেন আরও একটি। ম্যাচের ৩৯ মিনিটে ডান দিক থেকে তাঁর বাঁকানো শটটা বারে লেগে ফেরত আসে। এরপর নেইমারের ওই দুর্দান্ত ওভারহেড কিক কিংবা অফসাইডে গোল বাতিল না হলে আরও বড় ব্যবধানে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়তে পারত ব্রাজিল।
ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে তিন মিনিটে অবশ্য টানা তিনটি সুযোগ তৈরি করেছিল পেরু। তিনবারই গোলে শট নিয়েছিলেন গুরেরো, একবারও তো একেবারে গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ব্রাজিল ডিফেন্ডার গিল।
তবে দিন শেষে সেটি আর কে মনে রাখে। আয়েশি এ জয়ে বাছাইপর্বে ঘরের মাঠে টানা ৪৫ ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ডটাকে আরও এক ম্যাচ বাড়িয়ে নিল ব্রাজিল। সঙ্গে কোচ দুঙ্গার ওপর থেকে একটু চাপও সরে গেল। চার মাস পর বাছাইপর্বের পরবর্তী ম্যাচটা পর্যন্ত অন্তত শান্তিতে রাতে ঘুমোতে পারবেন দুঙ্গা।