খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৫: মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ফাঁসির আদেশ বহাল থাকায় মামলার সাক্ষীরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তবে সেই সঙ্গে তাঁরা নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কাও প্রকাশ করেছেন।
আজ বুধবার খবর শুনে ১৯৭১ সালে শহীদ অধ্যক্ষ নূতন চন্দ্র সিংহের ছেলে ও মামলার সাক্ষী প্রফুল্ল রঞ্জন সিংহ বলেন, ‘জাতি তার প্রত্যাশিত রায় পেয়েছে। আমারও ভালো লাগছে। কারণ, আমরা ক্ষতিগ্রস্ত। এতে আমার বাবার আত্মা শান্তি পাবে।’ রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘রায় যত তাড়াতাড়ি কার্যকর করা যায়, তত ভালো হয়।’
একাত্তরে চট্টগ্রামে অধ্যক্ষ নূতন চন্দ্র সিংহসহ গণহত্যার দায়ে আদালত সাকা চৌধুরীকে ফাঁসির দণ্ড দেন। মৃত্যুদণ্ড পুনর্বিবেচনার আবেদন আজ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ খারিজ করে দেওয়ায় ফাঁসির আদেশ বহাল থাকল।
হাবিবা সুলতানার চোখের সামনেই একাত্তরে তাঁর স্বামী শেখ মো. আলামগীর ও শ্বশুর আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মোজাফফর আহমদকে হত্যা করা হয়েছিল সাকা চৌধুরীর নেতৃত্বে। মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল থাকায় তিনি স্বস্তি প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার চোখের সামনে দুজনকে হত্যা করেছে। আমি ফাঁসির দিনের জন্য অপেক্ষা করছি। এই রায়ে আমার স্বজনদের আত্মা শান্তি পাবে। আমাদের একটি দায়িত্ব ছিল। ওই দায়িত্ব পালনের জন্য আমরা আদালতে সাক্ষী হয়েছি।’
নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে হাবিবা সুলতানা বলেন, ‘তাঁর (সাকা) অনেক ক্যাডার বাহিনী রয়েছে। তাই কিছুটা নিরাপত্তা জটিলতা রয়েছে। রায় কার্যকর হোক, এটাই আমার প্রত্যাশা।’
একই শঙ্কা প্রকাশ করেছেন একাত্তরে শহীদ শেখ মোজাফফর আহমদের ছেলে শেখ জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, ‘নিরাপত্তা নিয়ে আমরা চিন্তিত। ট্রাইব্যুনাল সাক্ষীদের নিরাপত্তা দিতে বলেছেন। কিন্তু সেভাবে নিরাপদবোধ করছি না। রায়ে খুশি আমরা। তবে এই রায় যেন তাড়াতাড়ি কার্যকর হয়।’
সাকা চৌধুরীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল থাকায় সন্তোষ প্রকাশ করে চট্টগ্রামে গণজাগরণ মঞ্চ মিছিল বের করেছে। মিছিল শেষে চেরাগি পাহাড় মোড়ে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।