খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৫: শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, বাংলাদেশ সরকার সব ধরণের সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। দেশের ভেতরে সন্ত্রাসী চক্রসমূহকে কোনো ধরণের ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।
শিক্ষামন্ত্রী ও ইউনেস্কো’র ভাইস প্রেসিডেন্ট নুরুল ইসলাম নাহিদ গতরাতে প্যারিসে ইউনেস্কো সদর দপ্তরে আয়োজিত ইউনেস্কো লিডার্স ফোরামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিনিধি হিসেবে বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
জাতিসংঘ সংস্থাটির ৭০ বছর পূর্তিতে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফাঁসোয়া ওঁলাদ এর ভাষণের পরপরই বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী ভাষণ দেন।
শিক্ষামন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় প্যারিসে গত সপ্তাহে ঘৃণ্য হামলায় বহু নিরপরাধ ব্যক্তি নিহত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ফরাসী সরকার ও জনগণের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়ে বলেন আমরা এ হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের সন্ত্রাসী হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। সন্ত্রাসীদের কোন ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র নেই। সন্ত্রাসী ও জঙ্গীরা কোনো দেশের সীমারেখায় সীমাবদ্ধ থাকে না উল্লেখ করে জনাব নাহিদ বলেন, সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সকল দেশের সাথে একযোগে কাজ করতে প্রস্তুত। শিক্ষামন্ত্রী সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ মোকাবেলায় ইউনেস্কোর ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখ করে বলেন উগ্রজঙ্গীদের সঙ্গ থেকে দূরে রাখতে যুবসমাজকে সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় বাংলাদেশে শিক্ষার প্রসারে গৃহিত বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা বাস্তবায়নে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ গড়ে তুলতে বাংলাদেশের শিক্ষাকে জাতীয় উন্নয়ন এজেন্ডার মূলভিত্তি বিবেচনা করা হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন শিক্ষায় টেকসই বিনিয়োগের মাধ্যমে ইতোমধ্যে বাংলাদেশে প্রাথমিক স্তরে প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থী ভর্তি এবং মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ছাত্রছাত্রী সংখ্যা সমতা অর্জন করেছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ জাতিসংঘের সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সমর্থ হয়েছে। ২০১০ সাল থেকে বছরের প্রথম দিনে আমরা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সকল ছাত্রছাত্রীকে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করে আসছি। এ ধরণের কার্যক্রমকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করে জনাব নাহিদ বলেন, এ বছর আমরা প্রায় ৩৩ কোটি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করেছি। ২০১৬ সালে আমরা ৩৫ কোটি পাঠ্যবই বিতরণ করবো। তিনি বলেন, দেশে ১ কোটি ৩৪ লাখ দরিদ্র শিক্ষার্থী সরকারের উপবৃত্তি সুবিধা পাচ্ছে, যার মধ্যে ৭৫ ভাগই ছাত্রী।
শিক্ষামন্ত্রী আরো বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার নতুন প্রজন্মকে দক্ষ ও যোগ্য বিশ্বনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে মানসম্মত শিক্ষার প্রসারের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বিপুলসংখ্যক শিক্ষকের প্রশিক্ষণ, কারিগরি-বৃত্তিমূলক ও তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষার প্রসার এবং মাদ্রাসা শিক্ষার আধুনিকায়নের বিষয়সমূহ উল্লেখ করেন। নারী শিক্ষার মাধ্যমেই বাল্যবিবাহ রোধ, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা রোধ এবং সমাজ উন্নয়নে নারীর ভূমিকা বিষয়ে গণমানুষের মনোভাব পরিবর্তন সম্ভব বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন সরকার নারী শিক্ষার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে চলেছে।