খোলা বাজার২৪ ॥ বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৫ : ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে ঢালারচর পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণসহ ৭টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এ সব প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে সরকারের মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ২৬৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
সচিবালয়ে বুধবার দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এ সময় কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, ‘ঈশ্বরদী থেকে পাবনা হয়ে ঢালারচর পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় পাবনা থেকে ঢালারচর পর্যন্ত ৫৩ দশমিক ৮০ কিলোমিটার মেইন লাইন এবং ৩ দশমিক ৯ কিলোমিটার লুপলাইন নির্মাণকাজের প্রস্তাবটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ কাজে ব্যয় হবে ১৪২ কোটি ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। দরপত্রে ‘চায়না রেলওয়ে সিছিঝুঁ গ্রুপ’, দেশীয় প্রতিষ্ঠান ‘তমা কন্সট্রাকশন’ ও ‘ম্যাক্স অটোমোবাইল প্রোডাক্ট লিমিটেড’ অংশ নেয়। তবে সর্বনিম্ন দরদাতা চায়না প্রতিষ্ঠান হওয়ায় তাকে কাজটি দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আওতধীন বঙ্গবন্ধু সেতুর পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের অপারেটর নিয়োগের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ কাজটিতে ‘চায়না কমিউনিকেশনস কন্সট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড’ (সিসিসিসি) সর্বনিম্ন দরদাতা হওয়ায় তাকে কাজটি দেওয়া হয়। এ কাজে মোট ব্যয় হবে ১৪২ কোটি ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দেশের কৃষি উৎপাদনে সারের যোগান অব্যাহত রাখতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) স্বাক্ষরিত চুক্তির আওতায় মোট ৬ লাখ টন ব্যাগড ইউরিয়া সার আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ৫০ হাজার টন সার আমদানি হয়েছে। বাকি সাড়ে ৫ লাখ টন সার আমদানি করা কবে। সরকারি পর্যায়ে চুক্তির আওতায় প্রাইস ফরমুলা অনুযায়ী এ সারের দাম পরিশোধ করা হবে।
এ ছাড়াও বৈঠকে দরপত্রের মাধ্যমে ১ লাখ টন ব্যাগড প্রিল্ড ইউরিয়া সার আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওযা হয়েছে। প্রতিটন ২৮৪ দশমিক ৮৩ ডলার হিসাবে এতে মোট খরচ পড়বে ২২৪ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। ‘মেসার্স প্রোটন ট্রেডার্স’ এই সার সরবরাহ করবে।
তিনি বলেন, বৈঠকে ৭৫ হাজার ব্যাগড গ্রানুলার সার আমদানির আরেকটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে এ সার সরবারহ করবে ‘মেসার্স আর কে এন্টারপ্রাইজ’। প্রতি টনের দাম ২৮২ দশমিক ৬১ ডলার হিসাবে মোট ব্যয় হবে ১৬৭ কোটি ১২ লাখ টাকা।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, বৈঠকে রেলপথ মন্ত্রণালয় পূর্বাঞ্চলের চিকনী আস্তানা-চট্টগ্রাম সেকশনের ১১টি স্টেশনের বিদ্যমান সিগন্যালিং ব্যবস্থার প্রতিস্থাপন ও আধুনিকীকরণ প্রকল্পের কম্পিউটার বেইজড ইন্টারলকিংসহ বিভিন্ন কাজ বাস্তবায়নের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার এক্সিম ব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ১১৫ কোটি ৩৭ লাখ ১৬ হাজার টাকা ব্যয় হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে দক্ষিণ কোরিয়ার ‘এলএসআইএস কোম্পানি লিমিটেড’।
তিনি বলেন, সৌদি সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী দেশটি থেকে সৌদি বেসিক ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন থেকে এক লাখ ৮০ হাজার টন বিভিন্ন ধরনের সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রাইস ফরমুলা অনুযায়ী এ সারের দাম নির্ধারণ করা হবে।
মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এর আগে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে ‘পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ২০০৬ ও পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা-২০০৮’-এর সংশোধন/সংযোজন বিষয়টি উপস্থাপিত হলেও পরে তা মুলতবি ঘোষণা করা হয়। এ বিষয়টি আরও বিস্তারিত আলোচনার জন্য পরবর্তী বৈঠকে উত্থাপন করা হবে বলা জানান তিনি।