খোলা বাজার২৪ ॥ বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৫ : জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী শুনানি ২৬ নভেম্বর ধার্য করেছে আদালত।
এরআগে, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের সময় আদালত থেকে বেরিয়ে যান খালেদা পক্ষের আইনজীবীরা। মূলত বেছে বেছে নির্দিষ্ট কিছু সাক্ষীদের দিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণ করায় তারা ক্ষুব্ধ হয়ে বেরিয়ে যান।
ঢাকার বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদ্দারের আদালতে সাক্ষ্য দেন ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার কামরুজ্জামান।
খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডনে থাকায় আদালতে হাজির হতে পারেননি। তার পক্ষে আইনজীবী এ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, জয়নুল আবেদীন মেজবাহ ও তাহেরুল ইসলাম তৌহিদ হাজিরা দেন।
এদিকে, খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার যে সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে তা বাতিল চেয়ে আপিল বিভাগে রিভিউ পিটিশন দাখিল করা হয়েছে বলে অপর একটি আবেদন দাখিল করেন তার আইনজীবীরা।
এর আগে ১২ নভেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাক্ষ্য দেন মেট্রোমেকার্স এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের সাবেক হিসাবরক্ষক জাকারিয়া খান ও স্যোশাল ইসলামী ব্যাংকের (এসইডিপি) জিয়াউদ্দিন এস ঘূর্ণি। আর সাক্ষী মেট্রোমেকার্স এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের এমডি এ এম জাহাঙ্গীর হোসেনকে জেরা করেন খালেদা ও অন্য আসামির আইনজীবীরা।
৫ নভেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাক্ষ্য দেন মেট্রোমেকার্স এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের এমডি এ এম জাহাঙ্গীর হোসেন ও মেট্রোমেকার্স এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের ডিএমডি মাঈনুল ইমরান চৌধুরী।
এ দিন সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সাবেক জেনারেল ম্যানেজার মেজবাউল হককে জেরা করেন খালেদা আইনজীবী ও অন্য আসামির আইনজীবীরা।
২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাক্ষ্য দেন সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সাবেক জেনারেল ম্যানেজার মেজবাউল হক।
এ দিন সোনালী ব্যাংকের ক্যান্টনমেন্ট শাখার ক্যাশিয়ার ওয়ালিদ আহমেদ, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক কুষ্টিয়া শাখার সিনিয়র অফিসার মামুন উজ জামান, মেট্রোমেকার্স এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের সাবেক সিনিয়র অফিসার সাইফুল ইসলাম এবং দুদকের সহকারী-পরিচালক চৌধুরী এম এন আলমকে জেরা করেন খালেদাসহ অন্য আসামির আইনজীবীরা।
২১ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল দুর্নীতি মামলায় স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক মতিঝিল শাখার তৎকালীন ম্যানেজার নওশাদ মাহমুদ, রিলেশনশিপ ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম ও কাস্টমার সার্ভিস ম্যানেজার অলোক কান্তিকে জেরা করেন খালেদার আইনজীবীরা। তিনজনের জেরা শেষে আদালতে সাক্ষ্য দেন সোনালী ব্যাংকের ক্যান্টনমেন্ট শাখার ক্যাশিয়ার ওয়ালিদ আহমেদ, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক কুষ্টিয়া শাখার সিনিয়র অফিসার মামুন উজ জামান, মেট্রোমেকার্স এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট লিমিটেডের সাবেক সিনিয়র অফিসার সাইফুল ইসলাম এবং দুদকের সহকারী-পরিচালক চৌধুরী এম এন আলম।
১৫ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল দুর্নীতি মামলায় সোনালী ব্যাংকের ডিজিএম ড. মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান, এসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার আমির উদ্দিন, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ম্যানেজার পরিতোষ চন্দ্রকে জেরা করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীসহ অন্য আইনজীবীরা। জেরা শেষে আদালতে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক মতিঝিল শাখার তৎকালীন শাখা ম্যানেজার নওশাদ মাহমুদ, রিলেশনশিপ ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম ও কাস্টমার সার্ভিস ম্যানেজার অলোক কান্তি সাক্ষ্য দেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
ওই মামলার অপর আসামিরা হলেন খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বি আইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
অপরদিকে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুদক।
এ মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমান।
দুর্নীতির দ্ইু মামলায় ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুবেদ রায়।