Sun. May 4th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

40খোলা বাজার২৪ ॥ বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৫ : আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসেই উপহার দিয়েছেন বিস্ময়ের পর বিস্ময়। বাংলাদেশের ক্রিকেটে সোনালী বছরটির শেষার্ধে স্পটলাইটের উজ্জ্বল আলোটা নিয়মিতই পড়ল মুস্তাফিজুর রহমানের ওপর। ভারত সিরিজে দুর্দান্ত শুরুর পর ছন্দটা ধরে রাখলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও। এর পর জিম্বাবুয়ে সিরিজ দিয়ে অসাধারণ সমাপ্তি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বন্ধুর পথে তরতরিয়ে এগিয়ে যেতে ভান্ডারে যোগ করতে হয় নানা অস্ত্র। তা তূণে নতুন কী তীর যোগ করলেন সাতক্ষীরার পেসার? এপ্রিলে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি অভিষেক থেকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ টি-টোয়েন্টি—আট মাসে নিজের পরিবর্তন নিয়ে মুস্তাফিজের জবাব যথারীতি সংক্ষিপ্ত, ‘নতুন কিছু যোগ হয়নি!’
প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানরা যদি তাঁকে পড়ে ফেলেন, তখন? মুস্তাফিজের মুখে ধরা দিল সরল হাসি, ‘ধরে ফেললে নতুন কিছু তো আনতেই হবে, দেখা যাকৃ।’ উত্তর যতই হেঁয়ালিপূর্ণ হোক, মুস্তাফিজের ক্ষুরধার ক্রিকেটীয় মস্তিষ্কের পরিচয় মিলল এর পরই, ‘ব্যাটসম্যানের যেমন অনেকগুলো অপশন থাকে, বোলারের থাকে না। বোলারের যতটুকু সুযোগ আছে, সেটাই ভালোভাবে কাজে লাগাতে হয়। আমি তাই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পরিশ্রম করে যাচ্ছি।’
দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের আগে মুস্তাফিজের সাবেক কোচ রণদেব বসু প্রথম আলোকে জানিয়েছিলেন, ‘ওর গতিটা বাড়াতে হবে। ঘণ্টায় ১৩৬-১৩৭ কিলোমিটার করতে পারলে ভালো।’ সর্বশেষ দুটি সিরিজে ঘণ্টায় ১৩৬-১৩৭ কিলোমিটার গতিতে বল করতে দেখা গেছে মুস্তাফিজকে। অবশ্য নিজেও জানেন না গতি আসলেই বেড়েছে কিনা, ‘গতি বাড়ছে কিনা জানি না। নিজে তো আর দেখতে পাই না!’ তবে বাউন্সারটা আগের চেয়ে ভালো দিতে পারেন, সেটা নিশ্চিত, ‘এখন বাউন্সারটা ভালো হয়। এটা নিয়ে নেটে নিয়মিত কাজ করি। তবুও ম্যাচে মারতে ভয় পাই! ইনশা আল্লাহ এটাও হয়ে যাবে। আমি তো আর মাস্টার নই। ধীরে ধীরে আয়ত্ত করে ফেলব।’
অফ কাটারে দুর্দান্ত হলেও লেগ কাটারটা শেখা হয়নি ঠিকমতো। নিজেকে নিত্য ভাঙার প্রচেষ্টা থাকলেও প্রতিপক্ষকে ভয় না পাওয়ার মানসিকতায় আসেনি কোনো বদল, ‘সময় ভালো গেছে বলে গত কয়েক সিরিজে সব প্রতিপক্ষকেই সহজ মনে হয়েছে। খেলাটা কঠিন ভাবলে তো আর মাঠে নামা যায় না! দেশের হয়ে যখন খেলবেন, প্রতিপক্ষকে কঠিন ভাবলে চলবে না। কোনো ব্যাটসম্যানকেই ভয় পাই না। এ ভাবনা আমাদের মধ্যে কাজও করে না।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কঠিন এক জায়গা, জেনে গেছেন এরই মধ্যে। এ-ও জেনেছেন, নিয়মিত থাকবেন প্রতিপক্ষের রাডারে, তাঁর বোলিং নিয়ে হবে প্রচুর কাটাছেঁড়া। তাঁকে নিষ্ক্রিয় করতে প্রতিপক্ষ আঁটবে নানা ছক। তবে সেরাদের মূল বৈশিষ্ট্যই তো প্রতিপক্ষের সব কৌশল-পরিকল্পনাকে ব্যর্থ করে এগিয়ে যাওয়া। আপাতত এ পরীক্ষায় সফল মুস্তাফিজ। এখন তাঁর আসল চ্যালেঞ্জ, সাফল্যের রেখাটা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর করা। সেটি মুস্তাফিজও খুব ভালোই জানেন।