খোলা বাজার২৪ ॥ বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৫ : প্রেম করার অপরাধে রফিকুল ইসলাম (১৮) নামে এক কলেজছাত্রকে গরম ইস্ত্রির ছ্যাঁকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বর্তমানে তিনি হাতীবান্ধা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার গেন্দুকুড়ি গ্রামে মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। রফিকুল ইসলাম উপজেলার গোতামারী গ্রামের উকিল মাহমুদের ছেলে।
এদিকে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে মেয়ের পরিবার ওই ছাত্রীকেও হাসপাতালে ভর্তি করেছে। পরিবারের লোকজনের দাবি, রফিকুল ওই রাতে মেয়েটিকে তুলে নিতে এসেছিল। তবে উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কের কথা স্বীকার করে মেয়েটি বলেন, ‘রফিকুলকে ডেকে এনে অন্যায়ভাবে নির্যাতন করা হয়েছে।’
হাসপাতালে বুধবার বিকেলে গিয়ে দেখা গেছে, যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন রফিকুল। তার দু’পায়ে অসংখ্য নির্যাতনের দাগ রয়েছে। পিঠের অধিকাংশ স্থানজুড়ে ইস্ত্রির ছ্যাঁকার চিহ্ন।
রফিকুল বলেন, ‘গেন্দুকুড়ি গ্রামের আব্দুস ছাত্তারের মাদ্রাসা পড়ুয়া মেয়ের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছে আমার। বিষয়টি জানাজানি হলে মেয়ের ভাই চয়ন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এ জন্য প্রায়ই তিনি আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিতেন। এতেও কাজ না হওয়ায় মঙ্গলবার রাতে চয়ন তার স্ত্রীকে দিয়ে মুঠোফোনে আমাকে তাদের বাড়ি আসতে বলেন। আমি আমার প্রেমিকার অসুস্থতার খবর পেয়ে ছুটে আসি। আসামাত্রই চয়ন আর তার মামা লিমন আমাকে ঘরে নিয়ে গিয়ে সাইকেলের রড তালা দিয়ে পেটাতে থাকেন। একপর্যায়ে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। আর কিছু বলতে পারি না। শুনেছি পরে খবর পেয়ে গোতামারী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জালিল ঘটনাস্থলে গিয়ে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে জ্ঞান ফিরলে অনুভব করি আমার পুরো পিঠ শুধু জ্বলছে।’
গোতামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, ‘প্রেম করার অপরাধে এক ছাত্রকে এভাবে ছ্যাঁকা দেওয়ার ঘটনায় এলাকাবাসীরও ক্ষুব্ধ। ফলে রফিকুল সুস্থ হলে এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
রফিকুলের ওপর অত্যাচারের ঘটনায় এলাকাবাসী দায়ীদের বিচারের দাবিতে বুধবার মিছিল করেছেন।
আহত কলেজছাত্রের বাবা উকিল মাহমুদ বলেন, আমার ছেলেকে যেভাবে গরম ইস্ত্রি দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়েছে তাতে সে অল্পের জন্য বেঁচে গেছে। এমন লোমহর্ষক নির্যাতনের বিচারের জন্য আমি মামলা করব।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে কলেজছাত্রকে নির্যাতনের ঘটনাটি শুনেছি। এ ব্যাপারে আহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।