খোলা বাজার২৪ ॥ বৃহস্পতিবার, ১৯ নভেম্বর ২০১৫ : ফাঁসির আসামি আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ছেলে বলেছেন, তার বাবা রাষ্ট্রের অভিভাবক রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করবেন কি না তা আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানাবেন।
যুদ্ধাপরাধে এই জামায়াত নেতার মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন বুধবার আপিল বিভাগে খারিজ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তার সঙ্গে দেখা করতে যান পরিবারের সদস্যরা।
বেলা ২টা ৪০ মিনিটের দিকে কারাগার থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মুজাহিদের ছেলে আলী আহমেদ মাবরুর।
প্রাণভিক্ষা চাওয়ার বিষয়ে মুজাহিদের মত জানতে চাইলে মাবরুর বলেন, “তিনি (বাবা) বলেছেন, ‘রাষ্ট্রপতি আমাদের রাষ্ট্রের ও জনগণের অভিভাবক। তিনি একজন আইনজীবীও। সুতরাং তার কাছে আবেদন করব কি-না আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেব’।”
এই যদ্ধাপরাধীর পরিবারের ১২ সদস্য বৃহস্পতিবার বেলা ২টার আগে কারাগারে পৌঁছে প্রায় ঘণ্টাখানেক ভেতরে অবস্থান করেন।
এসময় মাবরুর ছাড়াও ছিলেন মুজাহিদের স্ত্রী তামান্না ই জাহান, ছেলে আলী আহমেদ তাহজিব, আলী আহমেদ তাহকীক, মেয়ে তামান্না বিনতে মুজাহিদ, ভাই মোহাম্মদ খালেদ, পূত্রবধূ সৈয়দা রুবাইয়াজা, নাসরিন আকতার ও ফারজানা জেরিন, আত্মীয় নুরুল হুদা মাহমুদ, আ ন ম ফজলুল হাবিব সাব্বির ও ওযায়ের এম এ আকরাম।
মুজাহিদের ছেলে সাংবাদিকদের বলেন, “বাবা রিভিউ পিটিশন খারিজ হওয়ার কথা শুনেছেন। তবে জেল কর্তৃপক্ষ তাকে লিখিতভাবে জানায়নি বা খারিজের কপি দেখায়নি।
“বাবা বলেছেন, ‘আমি নির্দোষ। তারপরেও যদি ফাঁসি দেওয়া হয়, তাহলে এটাকে ঠাণ্ড মাথায় হত্যা করার সামিল বলব।’”
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মুজাহিদ ‘সুস্থ’ রয়েছেন বলেও জানান মাবরুর।
দলের প্রতি তিনি কোনো নির্দেশনা দিয়েছেন কি-না জানতে চাইলে তার ছেলে বলেন, “এ বিষয়ে কোনো কথা হয়নি।”
এর আগে দুপুরে কারাগারে এসে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আরেক যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করে যান তার পরিবারের সদস্যরা। তারাও প্রায় এক ঘণ্টা ভেতরে ছিলেন।
যুদ্ধাপরাধের দায়ে সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনার যে আবেদন জামায়াত নেতা মুজাহিদ ও বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন করেছিলেন, বুধবার তা খারিজ করে আপিল বিভাগ। এর মধ্য দিয়ে তাদের যুদ্ধাপরাধ মামলার আইনি লড়াইয়ের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়।
তারা এখন কেবল রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন। আসামি তা না চাইলে বা রাষ্ট্রপতির ক্ষমা না পেলে সরকার দিনক্ষণ ঠিক করে কারা কর্তৃপক্ষকে ফাঁসি কার্যকরের নির্দেশ দেবে।