Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

7খোলা বাজার২৪ ॥ শুক্রবার, ২০ নভেম্বর ২০১৫ : দেশের ‘পরিস্থিতি’ বিবেচনা করে ‘চিকিৎসা অসমাপ্ত রেখেই’ খালেদা জিয়া আগামী শনিবার লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন বলে জানিয়েছে তার দল বিএনপি।
দলের মুখপাত্রের দায়িত্বে থাকা আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ২১ নভেম্বর বিকাল ৫টায় এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজে খালেদা জিয়ার ফেরার কথা রয়েছে।
“দেশের ক্রান্তিকাল ও রাজনীতির সঙ্কট বিবেচনা করেই আমাদের দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসা অসমাপ্ত রেখে তিনি দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।”
এর আগে দুপুরে জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার শুনানি শেষে আদালত থেকে বেরিয়ে খালেদার আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন ও সানাউল্লাহ মিয়া সাংবাদিকদের একই কথা বলেন। পরে বিকালে রিপন সংবাদ সম্মেলনে আসেন।
যুদ্ধাপরাধের দায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনা আবেদন আদালতে খারিজ হয়ে যাওয়ার পরদিন খালেদার ফেরার এই খবর দিল তার দল।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা। সেখানে তিনি চোখ ও বাতের চিকিৎসা নিচ্ছিলেন বলে বিএনপি নেতারা বলে আসছেন।
গত দুই মাস ধরে লন্ডনে বড় ছেলে তারেক রহমান ও তার পরিবারের সঙ্গেই আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন। সেখানেই এবারের কোরবানির ঈদ কেটেছে তার। লন্ডনে বিএনপির আয়োজনে দুটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি বক্তব্যও দিয়েছেন।
খালেদার লন্ডনে অবস্থানের মধ্যেই বাংলাদেশে দুই বিদেশি নাগরিক খুন হয়েছেন এবং তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে দুই পুলিশকে, যেসব ঘটনার জন্য বিএনপি নেত্রীকেই দায়ী করে আসছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরিই বলেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ‘বানচালের উদ্দেশ্যে’ বিদেশে বসে খালেদা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার ‘ষড়যন্ত্র’ করছেন।
অন্যদিকে বিএনপি বলে আসছে, সরকার নিরাপত্তা দিতে ‘ব্যর্থ হয়ে’ এখন তাদের ওপর ‘দায় চাপাচ্ছে’।
চিকিৎসা নিয়ে কোরবানির ঈদের পর খালেদা জিয়া দেশে ফিরবেন বলে এর আগে জানিয়েছিলেন বিএনপি নেতারা। কিন্তু দুই মাসেও তিনি না আসায় খালেদা আদৌ ফিরবেন কি না- সেই সন্দেহ প্রকাশ করতে শুরু করেন আওয়ামী লীগ নেতারা।
নৌমন্ত্রী শাজাহান খান গত সপ্তাহেও এক অনুষ্ঠানে বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া চিকিৎসার কথা বলে স্বেচ্ছায় নির্বাসনে গেছেন। তিনি আর দেশে আসবেন না।”
নাশকতাসহ বিভিন্ন মামলার হুকুমের আসামি খালেদা দেশে ফিরতে চাইলে বাধা দেওয়া হবে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নেরও মুখোমুখি হতে হয়েছে সরকারকে।
গত ১৬ নভেম্বর সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, “দেশে আসাতে (খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান) কোনো বাধা দেব না, স্বাগত জানাব। কারণ বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে আসাই বাঞ্ছনীয়।”
কেক কাটতে মানা
বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রিপন বলেন, “শুক্রবার আমাদের পার্টির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন। দিবসটি পালনে আমাদের নেওয়া কর্মসূচিতে কিছু রদবদল করা হয়েছে।
“আমাদের নেতার জন্মদিনে প্রতিবছর নেতা-কর্মীরা কেক কেটে থাকেন। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে এবং আমাদের অসংখ্য নেতা-কর্মী কারাগারে বন্দি থাকায়, সব দিক বিবেচনা করে এবার তিনি (তারেক রহমান) নেতা-কর্মীদের কেক কাটতে বারণ করেছেন।”
এর বদলে শুক্রবার জুমার পর নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান রিপন।
বিগত সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে লন্ডনে যান তারেক। কয়েকটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে গত সাত বছর ধরে তিনি পরিবারের সঙ্গে সেখানেই আছেন।
অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ওসমান ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, গোলাম আকবর খন্দকার, সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক নিতাই রায় চৌধুরী, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল লতিফ জনি, শামীমুর রহমান শামীম সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।