Fri. Jun 20th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
95611_4
খোলা বাজার২৪ ॥ শুক্রবার, ২০ নভেম্বর ২০১৫ :মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদন্ড কার্যকারিতা অবিলম্বে স্থগিতের আহবান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।
শুক্রবার সংস্থাটির ওয়েবসাইটে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, কর্তৃপক্ষের উচিত অবিলম্বে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদন্ড স্থগিত করা।
দুই নেতার মৃত্যুদন্ড ত্রুটিপূর্ণ উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, মুজাহিদ ও সালাহউদ্দিনের মৃত্যুদন্ড আন্তর্জাতিক আদালতের আগের মামলার মতোই ত্রুটিপূর্ণ। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছে দ্রুত প্রণীত আইনের মাধ্যমে, যা আন্তর্জাতিক আইনে নিষিদ্ধ।
এতে বলা হয়, আদালত প্রাঙ্গন থেকে মামলার বিবাদীর প্রধান সাক্ষীকে সরকারি বাহিনীর হাতে অপহরণের বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ পাওয়ার পরও মানবতাবিরোধী অপরাধে আরেক অভিযুক্ত দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীকে দন্ড  দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্তের আদেশ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শী ও অন্যান্য প্রমাণের স্বল্পতা এবং রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীর অসঙ্গতিপূর্ণ বিবৃতি সত্ত্বেও ২০১৫ সালের এপ্রিলে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয় মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে।
সংস্থাটির এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে যে ভয়াবহ অপরাধ সংঘটিত হয়েছে তার বিচার ও দায় গুরুত্বপূর্ণ। তবে বিচার প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক স্বচ্ছতার মানদন্ড বজায় রাখতে হবে। অসচ্ছ বিচার প্রক্রিয়া প্রকৃত বিচার করতে পারে না, বিশেষ করে যেখানে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়।’
বিবৃতিতে বলা হয়, মুজাহিদ ও সাকার বিচার প্রক্রিয়ায়ও পূর্বের মতো একই অভিযোগ রয়েছে- প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী ও দলিলপত্রাদির স্বল্পতা। মুজাহিদের আইনজীবী তার পক্ষে ১৫০০ সাক্ষীর নাম দিয়েছিলেন। আদালত অবশ্য যৌক্তিকভাবেই ১৫০০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। কিন্তু অযৌক্তিকভাবে মাত্র তিনজনকে মুজাহিদের পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। এ ছাড়া মুজাহিদকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছে, তার অনুগতদের নিপীড়নে প্ররোচিত করার অভিযোগে। অথচ তার অনুগতদের কোনো সাক্ষ্যই গ্রহণ করা হয়নি। রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেওয়ার পরপরই বাড়িতে পুলিশি অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে মুজাহিদের এক আইনজীবী লুকাতে বাধ্য হয়েছেন।
সাকা চৌধুরীর বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের সময় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী বাংলাদেশে ছিলেন-এমন সাক্ষীদের বক্তব্য গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন আদালত। এ ছাড়া সালাউদ্দিন কাদেরের পক্ষে ৪১ জন সাক্ষ্য দিতে চাইলেও আদালত চারজনকে অনুমতি দিয়েছিলেন। রিভিউ শুনানিতে অংশ নেবার জন্য দেশের বাইরে থেকে সাক্ষী আনার দাবি জানালে তাদের আগমনের ব্যাপারে বিমানবন্দরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
ব্র্যাড অ্যাডামস বলেন, রাষ্ট্র ও আসামীপক্ষকে বিচারে সমান সুযোগ দিতে হবে এটাই নিয়ম। কিন্তু ট্রাইবুনাল নিয়মিতই এ মূলনীতি থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। এটা শুধু অভিযুক্তদের বিরুদ্ধেই অবস্থান নিয়েছে। আসামীপক্ষের সাক্ষীদের শারিরীক নির্যাতনের হুমকি, সাক্ষীদের দেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।তিনি বলেন, সাকা-মুজাহিদসহ সব বিচারের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার মান বজায় রাখতে পারেনি ট্রাইবুনাল।