Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

63খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ২১ নভেম্বর ২০১৫ : যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবার বলেছে, তারা ‘ত্রুটিপূর্ণ’ বিচারে মৃত্যুদণ্ডের অভিযোগ জানিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দেবেন।
২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত আরেক যুদ্ধাপরাধী আলী আহসান মো. মুজাহিদের প্রাণদণ্ড কার্যকর স্থগিত রাখতে রাষ্ট্রপতিকে আহ্বান জানিয়েছে তার পরিবার।
শনিবার দুপুরে যুদ্ধাপরাধী সাব্কে দুটি মন্ত্রীর পরিবারের সংবাদ সম্মেলনের পর রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম বলেছেন, আইনি সব প্রক্রিয়া চূড়ান্ত নিষ্পত্তির পর এখন আসামিদের কাছে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন ছাড়া অন্য কোনো আবেদনের সুযোগ নেই।
দুই পরিবারের সংবাদ সম্মেলনে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে কিছু বলা না হলেও তার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সালাউদ্দিন কাদের ও মুজাহিদ ক্ষমা চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেছেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলছেন, সব বিষয় নিষ্পত্তি হওয়ার পর এখন বিভ্রান্তি তৈরি করতে দুই যুদ্ধাপরাধীর পরিবার রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদনের কথা বলছে।
“এই পর্যায়ে রাষ্ট্রপতির কাছে কেবল মার্সি পিটিশন করতে পারেন। সংবিধানে যে সুবিধা দেওয়া আছে, সেইটুকু তিনি করতে পারবেন। সংবিধান অনুসারে তিনি কেবল মার্সি পিটিশনই করতে পারেন।”
বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সালাউদ্দিন কাদেরের স্ত্রী ফরহাত কাদের চৌধুরী রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দেবেন বলে জানিয়েছেন।
মুজাহিদের স্ত্রী তামান্না ই জাহান বলেন, “আমরা মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে আর্জি জানাই, তার বিরুদ্ধে একটা মামলা বিচারাধীন, সেই মামলা শেষ হওয়া পর্যন্ত আমাকে যেন আইনি লড়াই চালানোর অধিকার দেওয়া হয়।”
মাহবুবে আলম বলেন, “রাষ্ট্রপতি পদ এমন না যে, আসামি তার কাছে চিঠিপত্র লেনদেন করবে। উনি উনার নিকটাত্মীয়দের কাছে চিঠিপত্র লেনদেন করতে পারেন।”
একাত্তরে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা এবং ইন্ধনের দায়ে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত সাবেক মন্ত্রী মুজাহিদ ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার অন্যতম আসামি।
মুজাহিদের স্ত্রী ওই মামলা নিষ্পত্তি পর্যন্ত অপেক্ষার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “২০১১ সালে গ্রেনেড হামলা মামলার সম্পূরক চার্জশিটে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই মামলায় দেড়শর মতো সাক্ষী তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন।
“এমতাবস্থায় আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে এই মামলায় নিজের পক্ষে শেষ পর্যন্ত আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অধিকার রাখেন। সম্পূরক চার্জশিটে একজন হত্যাকারী হিসেবে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করার কারণে তিনি সেই দায় থেকে মুক্তি পেতে চান।”
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, “রাষ্ট্র অভিযোগ আনলেই তিনি দায়ী হয়ে গেলেন না। রায়ে যখন বলা হবে, তখনই তিনি দায়ী হবেন। ওই সময় না এলে প্রশ্নটাই অবান্তর।
“যে পর্যন্ত উনি জীবিত থাকবেন, ওই সময় পর্যন্ত যত মামলা থাকবে, সবগুলোতেই উনি হাজির থাকবেন। উনি যখন জীবিত থাকবেন না। তখন দায়-দায়িত্বের বিষয় থাকে না। তিনি তখন এর ঊর্ধ্বে।”
“কোনো আসামির বিরুদ্ধে যদি পাঁচটিও মামলা থাকে, এর মধ্যে প্রথম মামলাটি যদি নিষ্পত্তি হয়ে যায়, এর মধ্যে প্রথম মামলাটিতে যদি তার মৃত্যুদণ্ড হয়, তাহলে বাকি মামলাগুলো তার ব্যাপারে অকার্যকর হয়ে যাবে। কারণ মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো রায় হয় না।”
“কাজেই এই সব কথার অর্থ নেই ৃ এটা অযৌক্তিক কথাৃএটা জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা,” বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
মুজাহিদের পরিবার কারাগারে তার সঙ্গে আইনজীবীদের দেখা করার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
মাহবুবে আলম বলেন, “রিভিউ নিষ্পত্তির সঙ্গে সঙ্গে আইনি প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গেছে। এখন আর কোনো আইনি প্রক্রিয়া নাই।
“মার্সি পিটিশন সাংবিধানিক অধিকারের বিষয়। এর জন্য আইনজীবী প্রয়োজন নেই। চাইলে উনি এটা করতে পারেন, সহযোগিতার দরকার হলে উনি কারাকর্তৃপক্ষ থেকে সহযোগিতা চাইতে পারেন।