খোলা বাজার২৪ ॥ রবিবার, ২২ নভেম্বর ২০১৫ : মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। খুন, গণহত্যা, বুদ্ধিজীবী হত্যা, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণের অপরাধে শনিবার রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে একই মঞ্চে পৃথক ফাঁসিকাষ্ঠে ঝুলিয়ে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য ডন, ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়াসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো অনলাইন সংস্করণে গুরুত্বের সঙ্গে এ সংবাদ ছেপেছে।
কাতারভিত্তিক প্রভাবশালী পত্রিকা আলজাজিরা ‘বাংলাদেশে দুই বিরোধী নেতার মৃত্যুদণ্ড’ শিরোনামে সংবাদটি প্রকাশ করেছে। রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ফাঁসিতে ঝুলানো হয় বলে উল্লেখ করে আলজাজিরা।
আলজাজিরা বলে, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাধীনতা যুদ্ধে সাকা ও মুজাহিদের ভূমিকার কারণে তাদের ফাঁসি দেওয়া হয়।
‘মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে এই মৃত্যুদণ্ড অসন্তোষ সৃষ্টি করতে পারে’ বলে আশঙ্কা প্রকাশও করে আলজাজিরা। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সেকুলার ব্লগার ও দুই বিদেশি খুনের কারণে এ ভয় রয়েছে বলে ধারণা সংবাদ সংস্থাটির।
ভারতের প্রভাবশালী টাইমস অব ইন্ডিয়ার অনলাইন সংস্করণে এ সংবাদটির শিরোনাম করা হয়েছে, ‘১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধে বাংলাদেশের দুই বিরোধী নেতার ফাঁসি’।
ইসলামী নেতা আলী আহসান মুজাহিদ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ক্ষমাভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ খারিজ করে দেওয়ার অল্প সময়ের মধ্যে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় বলে খবর প্রকাশ করেছে তারা।
১৯৭১ সালের ‘পাকিস্তান থেকে ভেঙে আসার যুদ্ধে’ সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের দায়ে দুই বিরোধী নেতাকে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়েছে- এমনটাই বলেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া।
বিবিসি অনলাইন সংস্করণে সাকা-মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ডের খবরের শিরোনাম করেছে, ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধে বাংলাদেশ চৌধুরী ও মুজাহিদকে ঝুলিয়েছে।
সাকা চৌধুরী বাংলাদেশে প্রভাবশালী নেতা ও ছয়বারের সংসদ সদস্য এবং মুজাহিদ বৃহত্তম ইসলামী দলের শীর্ষ নেতা উল্লেখ করে বিবিসি বলছে গণহত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগে তাদের এ শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তবে এ অভিযোগ তারা অস্বীকার করেছে।
ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী চট্টগ্রামে তার বাবার বাড়িতে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতন কেন্দ্র গড়ে তুলেছিলেন।
অন্যদিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের নেতা ও বুদ্ধিজীবী হত্যার অভিযোগ আনা হয়।
পাকিস্তানের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ডন ‘বাংলাদেশ বিরোধী জামায়াত নেতার ফাঁসি কার্যকর করছে’ শিরোনাম করেছে। ১৯৭১ সালের স্বাধীতাযুদ্ধে ভূমিকার জন্য বাংলাদেশে শীর্ষ দুই বিরোধী নেতাকে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হচ্ছে বলে উল্লেখ করে পত্রিকাটি।
ডন বলছে, ৬৭ বছর বয়সী মুজাহিদকে ১৯৭১ সালে দেশটির শীর্ষ বুদ্ধিজীবীদের হত্যার মতো যুদ্ধাপরাধে ফাঁসির দণ্ড দেওয়া হয়। মুজাহিদ জামায়াতে ইসলামের দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা বলে খবরে উল্লেখ করা হয়।
১৯৭১ সালে নৃশংসতা যেমন গণহত্যার জন্য ৬৬ বছর বয়সী সাকা চৌধুরীর মৃতুদণ্ড দেওয়া হয়। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির ছয়বারের সংসদ ছিলেন তিনি।