খোলা বাজার২৪ ॥ রবিবার, ২২ নভেম্বর ২০১৫ : নিজে শুধুই স্কুলের গণ্ডির মধ্যে ছিলেন। কলেজে যেতে পারেননি, তাই চাইছেন, আর কিছু করুক আর না করুক, ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা করতেই হবে। সারা তেণ্ডুলকার এখন কী করছেন? রটে গিয়েছিল, সারা নাকি চিত্র জগতে অভিনয় করতে চলেছেন। গর্জে উঠে প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্বয়ং শচীন তেণ্ডুলকার এবং শনিবার রাতে খবর পেলাম, সারা এখন লন্ডনে। ডাক্তারি পড়তে গেছেন। মধ্য লণ্ডনে অভিজাত এলাকায়, মাদাম তুষোর জাদুঘরের অদূরেই শচীনের সেই বাড়ি। তবু, সারাকে থাকতে হচ্ছে কলেজের হোস্টেলে। মা অঞ্জলি ডাক্তার। সেই সুবাদেই ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছে। পড়াশোনায় বরাবরই ভাল, তাই বিলেতের মতো কলেজ থেকে ডাক্তারি পাস করার লক্ষ্য নিয়েই ইংরেজদের দেশে গিয়েছেন। সংসার সামলাতে গিয়ে, আরও পরিষ্কার করে বললে, শচীনের অনুপস্থিতিতে পুত্র-কন্যা, শাশুড়িকে আগলে রাখার কারণে সোনার পদক পাওয়া অঞ্জলির আর ডাক্তারিতে মন দিতে পারেননি। চাইছেন, তাঁদের মেয়ে যেন মায়ের মতো হতে পারে।
মায়ের মতো ডাক্তার হবে কন্যা, আর বাবার মতো না হলেও ক্রিকেটার হবে পুত্র। এটাই এখন তেণ্ডুলকার পরিবারের লক্ষ্য। অর্জুন তেণ্ডুলকার যে ক্রিকেটার হতে চাইছে, এ কথা তো দেশের সব মানুষ জানেন। সত্যিই অর্জুন কি দেশের হয়ে খেলতে পারবে? বড় কঠিন প্রশ্ন। প্রবল ক্রিকেট-প্রেম। হওয়াই স্বাভাবিক এবং শচীন লড়ে যাচ্ছেন ছেলেকে সব রকমের পরামর্শ ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে। গরমকালে পুত্র অনুশীলন করে লর্ডসে। সঙ্গে থাকে বাবার কড়া নজর। বেশ লম্বা। বাঁহাতি জোরে বোলার হতে চায় অর্জুন। প্রথমে ওয়াসিম আক্রাম ছিল তার আদর্শ (বাবা তো আদর্শই)। পরে জাহির খান, মাঝে মিচেল জনসনের ভক্ত হয়ে পড়েছিল। সুযোগ পেলেই শচীন কিন্তু এঁদের সবাইকে দিয়ে পরামর্শের ডালি অর্জুনের সামনে মেলে ধরেছেন। দু-সপ্তাহ আগে ফিল্ডিং করার সময় আঙুলে চোট পেয়েছিল। সেলাই পর্যন্ত করতে হয়েছিল। শচীন তখন ব্যস্ত আমেরিকায়। বাড়িতে অভিভাবক বলতে ছিল ঠাকুমা রজনী তেণ্ডুলকার এবং পুরানো বাড়ি থেকে জ্যাঠা অজিত এসে অর্জুনের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এখন সুস্থ। আবার অনুশীলন করতে শুরু করেছে। তবে ব্যাটে হাত দেয়নি এখনও। ইতিমধ্যেই শচীন নিয়োগ করেছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার সুব্রত ব্যানার্জিকে ছেলের সারাক্ষণের কোচ হিসেবে। সুব্রত এ কারণে কোনও রঞ্জি দলের সঙ্গেও নিজেকে জড়িয়ে ফেলতে পারছেন না। শচীনের একটাই কথা, সুব্রতকে শুধু নজর দিতে হবে অর্জুনের দিকে। বাকিটা তিনি নিজে দেখে নেবেন, যাতে সুব্রতর ভবিষ্যত জীবন সুরক্ষিত থাকে। স্বয়ং শচীনের কাছ থেকে এমন প্রস্তাব পাওয়ার কারণে, সুব্রত মন দিয়ে শুধুই অর্জুনকে গড়ে তোলার দিকে নজর দিয়েছেন।
অর্জুনের পড়াশোনা? অবশ্যই বই খাতা নিয়ে টেবিলে বসতে হয়। স্কুলেও যেতে হয়। আম্বানিদের অভিজাত স্কুলে পড়াশোনা করছে। দুবেলা অনুশীলন, দুপুরে শরীর চর্চা। এরই মাঝে স্কুলে ঢুঁ মারতে হয়। অর্জুন হল শচীনপুত্র, তাই স্কুলের সব নিয়ম-কানুন তাকে হুবহু অনুসরণ করতে হয় না। নানা রকমের ছাড়ের অনুমতি দিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ কারণেই অর্জুন ক্রিকেট মন দিতে পারছে পুরোপুরি। দিদি ডাক্তার, নিজে ক্রিকেটার হওয়ার জন্য লড়ে একই পরিবারের দুই সন্তান। কেউ বিলেতে, কেউ মুম্বাইয়ে।