খোলা বাজার২৪ ॥ রবিবার, ২২ নভেম্বর ২০১৫ : বিপিএলের প্রথম দুই আসরের অভিজ্ঞতা তাঁর জন্য ছিল যেন ক্লান্তিকর। সেই অভিজ্ঞতার বোঝা টেনে চলতে চলতে আজ ছুড়ে ফেললেন তামিম ইকবাল। উদ্বোধনী ম্যাচেই ঝলমলে এক ‘তামিমীয়’ ইনিংস। উল্টো ক্লান্তিটা যেন ভর করল সাকিবের ওপর। যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘ বিমানযাত্রা শেষে ঠিকমতো বিশ্রাম নিতে না-নিতেই মাঠে নেমে পড়া সাকিব টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে তাঁর সবচেয়ে বাজে বোলিংগুলোর একটি করলেন আজ। ২ ওভারে ২২ রান দেওয়ার পর আর বোলিংয়েই এলেন না!
বিপিএলের তৃতীয় আসরের পর্দা উঠল সাকিব-তামিমের এই বিপরীতমুখী যাত্রাতেই। চিটাগং-রংপুর, তামিম-সাকিবের লড়াই দেখতে মিরপুরে দর্শক উপস্থিতি অবশ্য বলার মতো নয়। এখনো প্রথম ম্যাচের অর্ধেক বাকি। তবে মিরপুরের হাজার ছয়েক দর্শক আপাতত তৃপ্ত হতে পারেন তামিমের ব্যাটিংয়ে। বাঁহাতি ওপেনারের ৩২ বলে ৫১ রানের ইনিংসটির সৌজন্যে। ২০ ওভারে চিটাগং করেছে ৭ উইকেটে ১৮৭।
প্রথম ম্যাচে চনমনে এক তামিমের দেখাই মিলল। চিটাগং অধিনায়ক বিপিএলের আগের দুই আসরের ব্যর্থতা ভুলে নতুন যাত্রার প্রতিজ্ঞাই যেন করেছেন। চিটাগং কিংসের হয়ে প্রথম বিপিএলে তামিমের অভিজ্ঞতা মোটেও সুখকর ছিল না। দলের অস্ট্রেলিয়ার টেকনিক্যাল ডিরেক্টর ডিন জোন্সের সঙ্গে বনিবনা না হওয়া, প্রথম ম্যাচের পর কুঁচকিতে চোট পাওয়া—মাঠের বাইরের নানা ঘটনায় অভিজ্ঞতা ছিল বড় তিক্ত।
পরেরবার তো দলই বদল হলো। চট্টগ্রামের ছেলে তামিমের ঠিকানা হলো রাজশাহীতে। দুরন্ত রাজশাহীর হয়ে অবশ্য কিছুটা ভালো হয়েছিল। তবে আরও ভালো হতে পারত, এমন একটা আক্ষেপ রয়েই গিয়েছিল।
সে তুলনায় এবার তামিমের শুরু হলো ভিন্ন। চিটাগংয়ের হয়ে পেলেন প্রথম ফিফটি। বিপিএলে চতুর্থ। চিটাগংকে ভালো শুরু এনে দিল তামিম-দিলশানের উদ্বোধনী জুটি। ২৯ রান করে দিলশান ফিরলে তামিম-এনামুল হকের দ্বিতীয় উইকেটে ৬৫ রান তুলে দলকে বড় সংগ্রহের ইঙ্গিত মিলেছিল। প্রথম ১০ ওভারেই চিটাগং ভাইকিংস ১ উইকেটে করল ১০৩। সে তুলনায় পরের ১০ ওভারে কিছুটা কমই হলো—৬ উইকেটে ৮৭। তারপরও সাকিবদের সামনে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যই ছুড়ে দিয়েছে তামিমের দল।
কাল যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়ে আসা রংপুর অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের নিজেই বল হাতে ইনিংসের শুরুটা করেছিলেন। সেই ওভারটা খারাপও করেননি। একটি চার হজম করে দিয়েছিলেন সাত রান। কিন্তু তাঁর পরের ওভারেই রীতিমতো চড়াও হলেন দিলশান। চার বলের মধ্যে দুটো চার আর এক ছক্কা পিটিয়েছেন। ১৫ রান দেওয়ার পর আর বোলিংয়ে আসেননি সাকিব। তবে বিপিএলে নিজের সেরা বোলিং করলেন সাকলাইন সজীব। ৪ ওভারে ২৬ রানে পেয়েছেন ৩ উইকেট।
রংপুর রাইডার্স জবাবটা ভালোই দিচ্ছিল শুরুতে। চিটাগংকে প্রথমেই মেডেন ওভার এনে দিয়েছিলেন মোহাম্মদ আমির। কিন্তু তাসকিনের করা পরের ওভারেই সৌম্য বেধড়ক মার মেরে ওই ওভারেই রংপুরকে এনে দিয়েছেন ১৭ রান! আমির অবশ্য দলের তৃতীয় ওভারে লেন্ডল সিমন্সকে ফেরান পঞ্চম বলে। শেষ বলে ফিরিয়েছেন ৯ বলে ২০ রান করা সৌম্যকেও। আমির পরের ওভারটা শুরু করবেন হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়িয়ে। যদিও সৌম্য আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তের শিকার হয়ে এলবিডব্লু হয়েছেন।