খোলা বাজার২৪ ॥ সোমবার, ২৩ নভেম্বর ২০১৫: মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়া সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ প্রাণভিক্ষা চেয়ে সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে আবেদন করেছিলেন। মুজাহিদের আবেদনের শিরোনামেই সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের কথা ছিল। আর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর আবেদনের শেষ দিকে ছিল সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিষয়টি দেখার অনুরোধ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল গতকাল রোববার সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, শাস্তি মওকুফ করার জন্য, একটা কৌশল বের করার জন্য সব রকম প্রচেষ্টা তাঁরা করেছেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধে গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে সালাউদ্দিন কাদের ও মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। এর আগে তাঁদের প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতি নাকচ করে দেন। কিন্তু দুজনের পরিবারের সদস্যরাই দাবি করেছেন, তাঁরা প্রাণভিক্ষা চাইতে পারেন না।
পরিবারের দাবির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আবেদন করেননি বলেছেন, আবার সাকা চৌধুরীর ছেলে কোনো জায়গায় ছোটাছুটি করতে তো কম করেননি। তাঁর পার্টি চিফের (দলের প্রধান) বাসায়ও গিয়েছেন, সব জায়গায় গিয়েছেন।
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বরাত দিয়ে তাঁর ছেলের করা দাবির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁরা ক্ষমা না চাইলে আমরাই বা কয়েক ঘণ্টা ধরে এ মন্ত্রণালয়, সে মন্ত্রণালয়ে দৌড়াদৌড়ি করলাম? আমরা তো ধরেই নিয়েছিলাম তাঁরা ক্ষমা চাইবেন না। কিন্তু সকালের দিকে মুজাহিদ সাহেব যে আবেদন দিলেন, তার শিরোনামেই আর্টিকেল ফর্টিনাইনের (সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ) কথা ছিল। আর সালাউদ্দিন কাদের আবেদন করেছেন ইংরেজিতে। সেখানেও শেষ দিকে আর্টিকেল ফর্টিনাইনের কথা আছে। আবেদন দুটি প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হলে রাষ্ট্রপতি তা নাকচ করে দেন।’
সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত যেকোনো দণ্ডের মার্জনা, বিলম্ব ও বিরাম মঞ্জুর করার এবং যেকোনো দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকবে।’
তাহলে সাকা চৌধুরীর পরিবার কেন সন্দেহ প্রকাশ করছে—এ প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের হয়তো নলেজের অভাব (জানার ঘাটতি) ছিল। আবেদন তো আমাদের কাছে এসেছিল। তাঁদের কাছে নয়। তাই শুরুতে পরিবারের জানার কথাও নয়।’
দুই মানবতাবিরোধী অপরাধী যে আবেদন করেছেন, তার প্রমাণ সরকারের হাতে আছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (পরিবার) বললে তো হবে না। আমাদের কাছে চিঠি রয়েছে, প্রমাণ রয়েছে। তাদের লিখিত দরখাস্ত আমাদের হাতে রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সেই দরখাস্তের যৌক্তিকতা আছে কি না এবং দরখাস্ত যথার্থ হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়েই আমরা বাকি কাজ করেছি। কাজেই এখানে আর কথা বলার অবকাশ নেই।