খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৫: ম্যাচ শেষে নেইমারের মনটা একটু খারাপ হতেই পারে। ‘এমএসএন’ ত্রয়ীর ‘এম’ আর ‘এস’ দুটি করে গোল পেলেন আর ‘এন’ কিনা গোল-বঞ্চিত! ইশ! পেনাল্টিটি যদি কাজে লাগাতে পারতেন ব্রাজিলীয় তারকা! তাহলে তো রোমার বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগের ম্যাচটির প্রতিবেদনের জন্য শিরোনামটা হতো দারুণ জুতসই।
নেইমার হয়তো গোল পাননি, কিন্তু মেসি আর সুয়ারেজের দুটি করে গোলের সঙ্গে জেরার্ড পিকে আর আদ্রিয়ানোর দুটো গোল মিলিয়ে খেলাটা দারুণ জুতসই খেলল লুইস এনরিকের দল। আর বার্সেলোনার সব অস্ত্র যখন একসঙ্গে কাজ করে তখন দলটি কতটা ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে, রিয়াল মাদ্রিদের পর সেই অভিজ্ঞতা হয়ে গেল ইতালীয় জায়ান্ট রোমারও।
রোমার বিপক্ষে মঙ্গলবার রাতের খেলার ফল ৬-১। খেলার একেবারে অন্তিম মুহূর্তে রোমা সমর্থকদের একটা গোলের সান্ত্বনা উপহার দেন স্ট্রাইকার এডিন জেকো। যদিও এই জেকো নিজেও একটি পেনাল্টি মিসের দোষে দুষ্ট।
কাল রাতে মেসি-সুয়ারেজের যুগল জমেছিল দারুণ। ম্যাচের ১৫ মিনিটেই সুয়ারেজের গোলে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। পুরো দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার পর সুয়ারেজের দায়িত্ব ছিল কেবল বলটিকে গন্তব্যে পৌঁছানো।
১৮ মিনিটে বার্সেলোনা দল দর্শকদের উপহার দেয় দারুণ এক দৃশ্য। পরপর ২৭টি পাস খেলে ‘টিকি টাকা’র অনুপম প্রদর্শনী ঘটায় তারা। লিওনেল মেসির দিকে শেষ পাসটি অবশ্য বাড়ান সুয়ারেজই। উরুগুইয়ান ফরোয়ার্ডের কাছ থেকে বল নিয়ে রোমার রক্ষণের বামপ্রান্ত দিয়ে গোলরক্ষক সেজনির মাথার ওপর দিয়ে বলটি জালে পাঠান আর্জেন্টাইন তারকা।
বার্সেলোনা প্রথমার্ধ শেষ করে ৩-০ গোলে এগিয়ে থেকে। বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে সুয়ারেজ পেয়ে যান তাঁর দ্বিতীয় গোলটি। রোমার রক্ষণসীমার একেবারে ওপর থেকে দুর্দান্ত এক ভলিতে সেজনিকে পরাভূত করেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মেসির পাস থেকে বল পেয়ে গোল করেন হঠাৎ’ই ফরোয়ার্ড হয়ে ওঠা জেরার্ড পিকে।
৬০ মিনিটে সুয়ারেজের পাস থেকে বল পেয়ে মেসি দলকে এগিয়ে দেন ৫-০ গোলে। প্রথমবার তাঁর শটটি রোমা গোলরক্ষক প্রতিহত করলেও ফিরতি বলটি জালে পাঠাতে ভুল করেননি তিনি।
দল পাঁচ গোলে এগিয়ে থাকা অবস্থায় স্কোরশিটে নাম তোলার সুযোগ এসেছিল নেইমারের কাছে। রোমার সালিহ উচান একটি আক্রমণে বক্সের মধ্যে ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ডকে ফেলে দিলে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান।
পেনাল্টিটি কাজে লাগাতে পারেননি ‘এমএসএন’-এর ‘এন’।
নেইমার পেনাল্টিটি কাজে লাগাতে না পারলেও কাজের কাজটা ঠিকই করে দেন আদ্রিয়ানো। গোলরক্ষক সেজনি নেইমারের নেওয়া পেনাল্টিটি ফিরিয়ে দিলেও সেই ফিরতি বলেই বার্সেলোনাকে ৬-০ গোলে এগিয়ে নেন আদ্রিয়ানো।
ম্যাচের শেষ দিকে এডিন জোকো বার্সেলোনার রক্ষণভাগে ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টি পায় রোমা। সেই পেনাল্টিটি অবশ্য গোলে পরিণত করতে পারেননি জোকো। তাঁর শট ফিরিয়ে দেন বার্সা গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেন। খেলার একেবারে শেষ মুহূর্তে এই জোকোই অবশ্য গোল করে ব্যবধান কমিয়েছেন।
এই জয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ ‘ই’ থেকে প্রথম হয়েই শেষ ষোলোতে পা রাখল বার্সেলোনা। ৫ খেলায় তাদের পয়েন্ট ১৩। এ নিয়ে টানা ১২ মৌসুম ইউরোপ-সেরার লড়াইয়ে শেষ ষোলোতে খেলার গৌরব অর্জন কর তারা। সূত্র: রয়টার্স।