Sun. May 4th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

35খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৫: বিপিএলে দারুণ উত্তেজনার ম্যাচ হলো আজ বরিশাল বুলস ও সিলেট সুপারস্টার্সের মধ্যে। একবার ম্যাচ বরিশালের দিকে, আরেকবার সিলেটের দিকে। দুলতে দুলতে সেই ম্যাচ গেলো শেষ বল পর্যন্ত। শেষ বলে চার রান দরকার। সিলেটের শেষ দুই ব্যাটসম্যান ক্রিজে। এলো ২ রান। ১ রানের জয়ে নিয়ে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম কাঁপালো বরিশাল। ৯ উইকেটে মাত্র ১০৮ রান করেই জিতলো তারা! সিলেট ৯ উইকেটে করেছে ১০৭ রান।
আল আমিন হোসেনের হ্যাটট্রিক ও ৫ উইকেটের ম্যাচে ঘটলো অনেক কিছু। দুই ম্যাচের দুটিতে রুদ্ধশ্বাস জয় বরিশালের, দুই ম্যাচের দুটিতেই দুর্ভাগ্যের হার সিলেটের। ১৮ বলে ১৯ রান দরকার সিলেটের। হাতে তিন উইকেট। ছক্কা মিলন বা নাজমুল হোসেন উইকেটে। সঙ্গী শহীদ। তাইজুল ইসলামের করা ১৮তম ওভারে এলো তিন রান। শেষ বলে শহীদের ক্যাচ মিস করলেন উইকেটকিপার ব্রেন্ডন টেইলর। পরের ওভারটি আল আমিনের। প্রথম বলে মিলনের ক্যাচ ছাড়লেন শাহরিয়ার নাফীস। কিন্তু কভারে অবিশ্বাস্য একটি ক্যাচ নিলেন তাইজুল ইসলাম। মিলন আউট ১৫ রানে। আবার বরিশালের পালে লাগে হাওয়া। যদিও শেষ ওভারে সিলেটের লাগে আর ৮ রান! তাইজুলের ওভার।
প্রথম বলেই তুলে নিলেন শহীদকে (২)। তাইজুলই নার্ভ সামলে শেষে ম্যাচটা জেতালেন বরিশালকে। ৪ ওভারে ২৩ রানে ৩ উইকেট ও একটি ম্যাচ ঘোরানো ক্যাচ নিয়ে তিনিও তো হিরো! ৪ ওভারে ৩৬ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ম্যান অফ দ্য ম্যাচ অবশ্য আল আমিন। দ্বিতীয় ওভারে বল হাতে পান আল আমিন। জাতীয় দলের এই পেসার ওই ওভারের পঞ্চম বলে মুমিনুল হকের (২) উইকেট নিয়েছেন। এরপর নিজের দ্বিতীয় ও ইনিংসের চতুর্থ ওভারে আল আমিন ভীতি ছড়িয়ে দেন সিলেটের ডাগ আউটে। দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ বলে তিন উইকেট তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিক করেন তিনি। তার মানে ৫ বলের মধ্যে চার উইকেট নেন তিনি। হ্যাটট্রিকের পথে আল আমিনের প্রথম শিকার রবি বোপারা (৪)।
১৮ রান তখন সিলেটের। বোপারা ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে ব্রেন্ডন টেইলকে। আর এর পরের বলে নুরুল হাসানের (০) মিডল ও লেগ স্টাম্প উড়িয়ে দেন আল আমিন। উইকেটে আসেন বাংলাদেশের টেস্ট দলের এবং সিলেট সুপাস্টার্সের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। তাকে চমৎকার এক লেংথ বলে বোল্ড করে হ্যাটট্রিক করে ফেলেন আল আমিন। ম্যাচে ফেরে বরিশাল। বিপিএলের তিন আসরে এটি দ্বিতীয় হ্যাট্রটিক। আল আমিনের ক্যারিয়ারেও দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক। দ্বাদশ ওভার পর্যন্ত আর উইকেট পড়েনি। ৪ উইকেটে ৬১ রান সিলেটের। দ্বাদশ ওভারে বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুল জোড়া আঘাত হানেন। ওয়াইজ শাহ (১১) ও সেট ব্যাটসম্যান ওপেনার দিলশান মুনাবিরাকে (৩৬) তিন বলের মধ্যে তুলে নিলেন তাইজুল।
আবার ম্যাচ জয়ের আশায় দুলে ওঠে বরিশাল। এরপর ৯০ রানের সময় মোহাম্মদ সামি তুলে নেন নাজমুল ইসলাম অপুর (১৬) উইকেট। শেষ নাটক তারপর শুরু। এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামে বরিশাল। রনি তালুকদার ও শাহরিয়ার নাফীসের ওপেনিং জুটি বরিশালকে চতুর্থ ওভারেই ৩৪ রান এনে দেয়। কিন্তু ওই ৩৪ রানেই দুই ওপেনারকে হারায় তারা। প্রথমে রনি (১৫ বলে ২০) শুভাশিস রায়ের বলে উইকেটের পেছনে মুশফিক রহীমকে ক্যাচ দেন। পরের ওভারে ফিডেল এডওয়ার্ডসের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে আসেন নাফীস (১১ বলে ১২)। গতি আসছিল না বরিশালের ইনিংসে। বাঁ হাতি স্পিনার নাজমুল ইসলামকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ব্রেন্ডন টেইলর (৯)। এরপর ভরসা করা হচ্ছিল অধিনায়ক মাহমুদ উল্লা ও সাব্বির রহমানের জুটির ওপর। কিন্তু ভুল বোঝাবুঝিতে ৭ রান করেই রান আউট মাহমুদ উল্লা। ৫৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে দারুণ বিপদে পড়ে বরিশাল। নাদিফ চৌধুরী ও সাব্বির মিলে দলকে টানছিলেন।
কিন্তু ত্রয়োদশ ওভারে নাজমুল জোড়া আঘাত হানেন। তার স্পিনে সাব্বির (১৫) ক্যাচ দিয়েছেন। এরপর সেকুগে প্রসন্নও (০) আউট হয়েছেন। পরের ওভারে আবার আঘাত। এবার রবি বোপারার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন কুপার (২)। ৮০ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে বরিশাল। বাকি তিন উইকেট পড়েছে ২৮ রানে। নাদিফ ইনিংস সর্বোচ্চ ২৪ রান করেন। তিনটি রান আউট বরিশালের বিপদ আরো বাড়িয়েছে। নাজমুল নিয়েছেন ৩ উইকেট।