খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৫:রাষ্ট্রপতি ও
মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, দেশে শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেলেও শিক্ষার গুণগত মান এখনও কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছেনি।এজন্য শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।শিক্ষকদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘শিক্ষক যখন তার আদর্শ থেকে দূরে চলে যান, তখন শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।’শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের মধ্যে দায়িত্ব সীমাবদ্ধ না রেখে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি আরও মনোযোগী হতে শিক্ষকদের নির্দেশনা দেন তিনি।রাষ্ট্রপতি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতির ভাষণে এসব কথা বলেন।বুধবার বেলা ৩টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। সমাবর্তনে আড়াই হাজার গ্রাজুয়েটকে ডিগ্রী প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর ইমেরিটাস ড. আনিসুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান।নবীন গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘দেশ ও সমাজ তোমাদের এ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। তোমাদের অর্জিত জ্ঞান ও মেধা দিয়ে দেশের কল্যাণ করতে পারলে সেই ঋণ শোধ হবে।’তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা। এ লক্ষ্য অর্জনে গ্রাজুয়েটদের কাজ করতে হবে।’ খুলনা বিদ্যালয়ের গবেষকদের সুন্দরনের জীববৈচিত্র ও উপকূলীয় সম্পদের বিষয়ে গবেষণা জোরদারের আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি।তিনি বলেন, ‘উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তবে গবেষণা হতে হবে আন্তর্জাতিক মানের এবং জীবনমুখী ও মানবকল্যাণে নিবেদিত। গবেষণার ফল যাতে লাইব্রেরিতে বন্দি না থেকে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজে লাগে তা নিশ্চিত করতে হবে।’বেলা ৩টায় শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে সমাবর্তনের কার্যক্রম শুরু হয়। সমাবর্তন উপলক্ষে পুরো ক্যাম্পাস সজ্জিত করা হয়, ছিল উৎসব মুখর পরিবেশ। বেলা সাড়ে ৩টায় রাষ্ট্রপতির অনুমতিক্রমে অনুষ্ঠান শুরু হয়।সমাবর্তন বক্তা অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেন, ‘জ্ঞানের অগ্রগতির অপরিহার্য শর্ত মুক্তবুদ্ধির চর্চা করা, সব বিষয়ে প্রশ্ন করা। বাংলাদেশে আজ যে ধরনের পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা চলছে, তা মুক্তবুদ্ধি চর্চার অনুকূল নয়। ব্যক্তি-স্বাধীনতা, বাক-স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের যে স্বাধীনতা সংবিধান আমাদের দিয়েছে আমরা তা প্রয়োগ করতে চাই।’সমাবর্তনে শুভেচ্ছা বক্তৃতায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন অর্জন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা রাষ্ট্রপতির সামনে তুলে ধরেন।তিনি বলেন, ‘ক্লাসরুম সংকটের কারণে নতুন নতুন ডিসিপ্লিন খোলা কষ্টকর হচ্ছে। গবেষণাগারের অপ্রতুলতা, শিক্ষকদের বসার জায়গার
সমস্যা প্রকট। এতো বছরেও বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি টিএসসি বা অডিটোরিয়াম প্রতিষ্ঠা হয়নি। টিনশেডের ঘরে রয়েছে মেডিকেল সেন্টার। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য ১৯৭ কোটি টাকার প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে।’ প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য রাষ্ট্রপতির সদয় দৃষ্টি ও আনুকূল্য কামনা করেন উপাচার্য। সমাবর্তনে প্রায় আড়াই হাজার গ্রাজুয়েট উপস্থিত থেকে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে ডিগ্রী গ্রহণ করেন। এছাড়া ১৫ জনকে পোস্ট গ্রাজুয়েট ও ১ জনকে পিএইচডি ডিগ্রি এবং অসাধারণ কৃতিত্বের জন্য ১৪ জন শিক্ষার্থীকে গোল্ড মেডেল প্রদান করা হয়।

