খোলা বাজার২৪ ॥ বৃহস্পতিবার, ২৬ নভেম্বর ২০১৫ : সকাল থেকে নাগপুর টেস্ট দেখছেন কি? নাকি একটু দেরিতে শুরু করলেন? দেরিতে যারা শুরু করেছেন, তাঁদের অনেকেই হয়তো চমকে উঠে আবিষ্কার করেছেন, মাত্র ১২ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা! দশ ব্যাটসম্যানের অর্ধেকই সাজঘরে ফিরেছেন মাত্র একত ডজন রান তুলে! এমন লজ্জায় দক্ষিণ আফ্রিকা সর্বশেষ পড়েছিল ১৯০২ সালে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। ১১৩ বছর পর আবারও আজ তাদের এমন লজ্জায় ফেলল ভারত।
নিজেরা ২১৫ রানে অলআউট হয়েও প্রথম ইনিংস বড় লিডের সামনে বিরাট কোহলির দল। ৬৬ রান তুলতেই যে ৮ উইকেট পড়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকার। ভারত এখনো এগিয়ে ১৪৯ রানে। ৩৪ রানে অপরাজিত জেপি ডুমিনি কতক্ষণ টেকেন সেটাই দেখার।
সর্বশেষ আউট হওয়া হার্মারের আউটটি বলে দিচ্ছে নাগপুরে স্পিনের বিষের কালনাগ নিয়ে হাজির ভারত। লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরে পিচ করা অশ্বিনের বলটা অবিশ্বাস্য বাঁক নিয়ে যেভাবে হার্মারের দু পায়ের ফাঁক দিয়ে ঢুকে অফ স্টাম্পে গিয়ে লাগল, শেন ওয়ার্নের শতাব্দীর সেরা ডেলিভারিও ‘লজ্জা’ পেয়ে যাবে। অথচ অশ্বিন অফ স্পিনার! দুসরা কিংবা ক্যারম বলের জাদু? নাকি উইকেটের!
মাত্র ১২ রানে দক্ষিণ আফ্রিকার ৫ উইকেট হারানোর লজ্জা ক্রিকেটেরই লজ্জা হয়ে থাকছে কি না, এই প্রশ্নও তুলতে পারেন। প্রত্যেক দলই নিজ নিজ দেশের কন্ডিশনের সর্বোচ্চ সুবিধা তুলবে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ভারত সেই সুবিধা নিতে গিয়ে ক্রিকেটীয় চেতনার মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে কি না, এমন প্রশ্নও উঠছে। এবং সেটা করছেন ভারতীয় সমর্থকদের অনেকে। টেস্টের দ্বিতীয় দিনের সকালের সেশনটায় দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা যে বল ঠিকমতো ব্যাটেই লাগাতে পারছেন না।
গতকাল ইনিংসের শুরুতে সেই যে ইশান্ত শর্মা দুই ওভার বল করে গেলেন, তাঁকে আর ডাকারই প্রয়োজন বোধ করছেন না বিরাট কোহলি। ইশান্ত তো ইশান্ত, অমিত মিশ্রকেই কোহলি ডেকেছেন আট উইকেট পড়ার পর। যা করার অশ্বিন আর জাদেজাই যে করছিলেন। সমান চারটি করে উইকেট ভাগাভাগি করে নিয়েছেন দুজন। ৩১ ওভারের ২৭ ওভারই হাত ঘুরিয়েছে জাদেজা-অশ্বিন।
১২ কিংবা এর চেয়েও কম রানে প্রথম ৫ ব্যাটসম্যানকে হারানোর লজ্জা টেস্ট ইতিহাসে আছে মাত্র চারটি। ২০১২ সালে নেপিয়ারে জিম্বাবুয়ের ১২ রানে ৫ উইকেট হারানোর ঘটনাটি বাদ দিলে গত ৬৩ বছরে আর এমনটি ঘটেনি! সবচেয়ে কম রানে ৫ উইকেট হারানোর লজ্জাটি অবশ্য ভারতেরই। ১৯৫২ সালে ওভালে ৬ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারায় ভারত।