খোলা বাজার২৪ ॥শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর ২০১৫: পৌরসভা নির্বাচনে সাংসদদের প্রচারের সুযোগ রাখার জন্য নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) চিঠি দেবে আওয়ামী লীগ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে দলের কার্যনির্বাহী সংসদ ও সংসদীয় বোর্ডের জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের পদ্ধতিও চূড়ান্ত করা হয়।
দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত রুদ্ধদ্বার এই সভায় দলের জ্যেষ্ঠ ও কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে উপস্থিত একাধিক নেতা সভার এ সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানান।
পৌরসভা নির্বাচনের আচরণবিধিতে বলা আছে—প্রধানমন্ত্রী, সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, মন্ত্রী, চিফ হুইপ, বিরোধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, বিরোধীদলীয় উপনেতা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, হুইপ বা তাঁদের সমমর্যাদার কোনো ব্যক্তি, সিটি করপোরেশনের মেয়র ও সংসদ সদস্যরা নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না। তবে এঁদের কেউ কোনো নির্বাচনী এলাকার ভোটার হলে ভোট দিতে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবেন।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা পরে বলেন, এই আচরণবিধির বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অন্তত ৮-১০ জন মন্ত্রী, সাংসদ ও কেন্দ্রীয় নেতা। তাঁরা বলেন, নির্বাচন হবে দলীয়, কিন্তু আচরণবিধি করা হয়েছে নির্দলীয় নির্বাচনের মতো, যা মেনে নেওয়া যায় না। অনেক মন্ত্রী-সাংসদ জেলা আওয়ামী লীগের পদে আছেন। তাঁদের যেতে না দেওয়া অন্যায়। পরে সিদ্ধান্ত হয়, সাংসদদের প্রচারের সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কমিশনে একটি চিঠি দেওয়া হবে।
এদিকে বৈঠকে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের পদ্ধতিও ঠিক করা হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুসারে, দলটির জেলা, উপজেলা ও শহর বা পৌর কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা স্থানীয় সাংসদের পরামর্শে একটি মনোনয়ন বোর্ড গঠন করবেন। সেই বোর্ড ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পৌর মেয়র পদের জন্য একজন প্রার্থী মনোনয়ন দেবে। পরে কেন্দ্রীয়ভাবে গঠিত আরেকটি বোর্ড চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে। এটাকে স্থানীয় সরকার বা পৌর মেয়র মনোনয়ন বোর্ড হিসেবে নাম দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত দলের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়েও জানিয়ে দেওয়া হয়।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন জাতীয় সংসদের প্রার্থী মনোনয়নের ১১ সদস্যের একটি সংসদীয় বোর্ড রয়েছে। এই বোর্ডে আরও পাঁচজন সদস্য যুক্ত করে স্থানীয় সরকার/পৌর মেয়র মনোনয়নের কেন্দ্রীয় বোর্ড গঠন করা হবে। এই বোর্ড প্রত্যেক মনোনীত প্রার্থীকে চিঠি দিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত জানাবে। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে প্রতীক বরাদ্দের অনুরোধ করবে।
সূত্র বলেছে, প্রধানমন্ত্রী তৃণমূল কমিটি থেকে একক প্রার্থী ঠিক করার বিষয়ে জোর দেন। অবশ্য তিনি বলেন, অনেক তৃণমূল কমিটি একক প্রার্থী নির্বাচন করতে পারবে না। সে রকম হলে সম্ভাব্য সব প্রার্থীর বিস্তারিত রাজনৈতিক জীবনবৃত্তান্ত উল্লেখ করে যেন পাঠানো হয়। সেখান থেকে কেন্দ্রীয় কমিটি একজনকে বাছাই করবে।