Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

53খোলা বাজার২৪ ॥শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর ২০১৫: বেচারা টিম সাউদি! শাপ-শাপান্তই করতে পারেন অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালামের টস-ভাগ্যকে! টসে নিউজিল্যান্ড অধিনায়কের ‘দুর্ভাগ্যে’র কারণেই যে একটুর জন্য ইতিহাসে নাম লেখাতে পারলেন না সাউদি। পারলেন না গোলাপি বল হাতে আন্তর্জাতিক মঞ্চে বল করা প্রথম বোলার হতে!
বেচারার দুর্ভাগ্যটাও দেখুন, আজই সিরিজে প্রথম টস জিতলেন ম্যাককালাম। সত্যিই তো, আজই ম্যাককালামের টস জিততে হবে! টস জিতে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং নেওয়াটা দলীয় সিদ্ধান্ত, তাই চাইলেও ম্যাককালামকে দোষারোপ করতে পারছেন না সাউদি। কিন্তু একটু আক্ষেপ কী হচ্ছে তাঁর – ‘ইশ, টসের মুদ্রাটা উল্টো পিঠে পড়লে কী এমন মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যেত!’
সাউদির দুর্ভাগ্যটাই মিচেল স্টার্কের জন্য সৌভাগ্য হয়ে এল। যেভাবে ক্রিকেট মাঠে উন্নতির সিড়ি বেয়ে তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছেন, তাতে ক্যারিয়ারে আরও অনেক অর্জন হবে সন্দেহ নেই। তবে ইতিহাস সৃষ্টি করা টেস্টে প্রথম বলটি করা তো নিজের অর্জনের চেয়েও বেশি প্রকৃতি-নির্ধারিত ব্যাপার। বলটা মানের বিচারে সাধারণই ছিল – লেংথ বল যেটি কিনা একটু সুইং করে মিডল ও লেগ স্টাম্পের দিকে ঢুকে যাচ্ছিলৃগত কিছুদিনের আগুন ঝরানো মিচেল স্টার্কের মানের বিচারে তো ‘অতি-সাধারণ’, তবু এটি ইতিহাস সৃষ্টিকারী বল। মুহূর্তটাকে স্মৃতিতে তো বন্দী করে রাখবেনই, স্টার্ক হয়তো এক-দুজন চিত্রগ্রাহকও ঠিক করে রেখেছেন এই মুহূর্তটাকে ফ্রেমবন্দী করে রাখার জন্য। এমন মূহুর্ত তো আর প্রতিদিন আসে না!
শুধু বোলার নন, ‘প্রকৃতি-নির্ধারিত’ একজন ব্যাটসম্যানও ইতিহাসে নাম লিখিয়েছেন – মার্টিন গাপটিল। স্টার্কের বল ঠেকিয়ে দিয়ে ইতিহাসে নিজের নামটা লিখিয়ে ফেললেন নিউজিল্যান্ড ওপেনার। প্রথম রান করা ব্যাটসম্যানও তিনি – প্রথম ওভারের চতুর্থ বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ঠেলে দিয়ে রানটি নিয়েছেন গাপটিল।
ইতিহাস বদলে দেওয়া টেস্ট, তাতে অনেক প্রথমের হিসেব থাকবেই। অনেকটা যেন কোনো ভর্তি-পরীক্ষা কিংবা চাকরির জন্য পরীক্ষার এমসিকিউ প্রশ্নের মতো – দিবারাত্রির টেস্টে প্রথম বল কে করেছেন? গোলাপি বলে প্রথম ব্যাটসম্যান কে ছিলেন? প্রথম উইকেটটি কার? কে নিয়েছেন?ৃএমন হাজার হাজার প্রশ্ন। চাইলে কিছু প্রশ্ন নিজেও খুঁজে নেওয়া যায়। প্রথম চার কে মেরেছেন, প্রথম রান হয়েছে কততম বলেৃ আজ যে দিবারাত্রির ইতিহাসের প্রথমের দিন!
প্রথম বোলার-ব্যাটসমান-রানের হিসেব তো জেনেই গেলেন। উইকেটের ‘প্রথমে’ও জড়িয়ে গাপটিল। প্রথম উইকেটটি যে তাঁরই। আর গর্বিত বোলারটির নাম – জশ হ্যাজলউড। নিজের দ্বিতীয় ওভারের (ইনিংসের চতুর্থ) দ্বিতীয় বলে এলবিডব্লু করে ফেরত পাঠিয়েছেন গাপটিলকে।
অনেকটা যেন আলফ্রেড শ-অ্যালেন হিলের মতো। টেস্ট ক্রিকেটের প্রথম বোলিং জুটির মতোই – বল ও উইকেটের রেকর্ড ভাগাভাগি করে নিয়েছেন এ দুজনও। ১৮৭৭ সালের ১৫ মার্চ ইতিহাস বদলে দেওয়া দিনটিতে প্রথম বল করেছিলেন শ, কিন্তু প্রথম উইকেটটি গিয়েছিল হিলের দখলেই।
তা-ও ভালো, অস্ট্রেলিয়ার ওপেনিং বোলারের দুজনই অন্তত ভাগাভাগি করে দুটো প্রথমে নাম লিখিয়েছেন। নিউজিল্যান্ডের ওপেনিং জুটিতে গাপটিলের সঙ্গী টম লাথাম তো কোনো কিছুতেই নিজের নামটা লিখিয়ে নিতে পারলেন না। ব্যাটিংয়ের সব প্রথম তো ‘দখল’ করে রেখেছেন গাপটিল। সাউদির মতো ইনিও আরেক ‘বেচারা’। কারণ, প্রথম চার মারার সৌভাগ্যটাও কেন উইলিয়ামসন নিজের করে নিয়েছেন। তবে অনেক খুঁজে-পেতে নেওয়া একটা ‘প্রথমে’ নাম লেখানোর একটা ছোট্ট সুযোগ এখনো আছে তাঁর – প্রথম ক্যাচ বা বোল্ড আউট হওয়া ব্যাটসম্যান হওয়ার। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কিউইদের যে দুজন ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন, দুজনই যে এলবিডব্লু।
অবশ্য ল্যাথামের এত দ্রুত এই ‘রেকর্ডে’ নাম লেখানোর কোনো ইচ্ছা আছে বলে মনে হয় না।