খোলা বাজার২৪, সোমবার, ৩০ নভেম্বর ২০১৫ : নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আত্মসমর্পণকে কেন্দ্র করে আজ সোমবার ঢাকার জজ কোর্ট এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, জজ কোর্ট এলাকার চারদিকে প্রতিবন্ধকতা (ব্যারিকেড) দিয়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
নিরাপত্তার অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে প্রবেশের একটি ফটক পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আদালতের কর্মীরাও ওই ফটক দিয়ে ভেতরে যেতে পারছেন না।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, সকাল থেকেই আদালত এলাকাজুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। পুলিশের পাশাপাশি র্যাবের একাধিক দল তৎপর রয়েছে।
খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জানিয়েছেন, নাইকো দুর্নীতি মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ-৯ এর আদালতে আজ আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করবেন বিএনপির চেয়ারপারসন।
বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সকাল ১০টায় গুলশানের বাসভবন থেকে খালেদা জিয়ার আদালতের উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে।
নাইকো দুর্নীতি মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়ার করা রিট আবেদন ও এ-সংক্রান্ত রুল গত ১৮ জুন খারিজ করেন হাইকোর্ট। রায়ে আদালত বলেন, বিচারিক আদালতে মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া হলো। রায়ের অনুলিপি পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে বিচারিক আদালতে খালেদা জিয়াকে আত্মসমর্পণ করতে হবে। তবে জামিন অপব্যবহার না করার শর্তে খালেদা জিয়ার জামিন বিবেচনা করবেন আদালত।
বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি জাফর আহমদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের ওই নির্দেশ অনুযায়ী আজ বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন খালেদা জিয়া।
প্রায় সাত বছর ধরে নিম্ন আদালতে এই মামলার কার্যক্রম স্থগিত ছিল। মামলাটি অভিযোগ গঠনের পর্যায়ে আছে।
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার আত্মসমর্পণকে কেন্দ্র করে আদালত প্রাঙ্গণের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ছবিটি সোমবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে তোলা। ছবি: আসাদুজ্জামান
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতির মামলাসহ দুর্নীতির পাঁচটি মামলা রয়েছে। এক-এগারোর পরের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এ মামলাগুলো করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুদক। ২০০৮ সালের ৫ মে এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। এতে আসামিদের বিরুদ্ধে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।
পরে নাইকো মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ও নিম্ন আদালতে মামলার কার্যক্রমে স্থগিতাদেশ চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন খালেদা জিয়া। ২০০৮ সালের ১৫ জুলাই বিচারিক আদালতে মামলার কার্যক্রম স্থগিতের পাশাপাশি রুল দেন হাইকোর্ট। ওই সময় থেকে মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত ছিল। চলতি বছরের শুরুতে মামলাটির কার্যক্রম আবার চালু করার উদ্যোগ নেয় দুদক। গত ১৯ এপ্রিল রুল শুনানি শুরু হয়, ২৮ মে শেষ হয়। ১৮ জুন রায় ঘোষণা করা হয়।