Sun. May 4th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

76খোলা বাজার২৪॥ মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর ২০১৫: পৌরসভার নির্বাচনী এলাকায় প্রকল্প অনুমোদন ও ফলক উন্মোচন, ভিত্তিপস্তর স্থাপনসহ নির্বাচনের আগে সব ধরনের উন্নয়ন কর্মসূচিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একই সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরাও কোনো ধরনের উন্নয়নমূলক কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন না।
ইসি কর্মকর্তা বলছেন, নির্বাচন প্র্রভাবমুক্ত রাখতেই্ ইসি এসব নির্দেশনা দিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয় শাখা-১ এর জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব মো. রাজীব আহসান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত নির্দেশনা মঙ্গলবার সকল রিটার্নিং অফিসারদের কাছে পাঠানো হয়েছে। পাঠানো পরিপত্রের অনুলিপি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়েও পাঠানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তার নির্বাচনী এলাকায় সরকারি উন্নয়ন কর্মসূচিতে কর্তৃত্ব পারবেন না। কিংবা এ ধরনের কোনো সভায় তারা অংশ নিতেও পারবেন না।’
এছাড়া নির্বাচনপূর্ব সময়ে পৌরসভার মেয়র বা কাউন্সিলর বা অন্য কোনো পদাধিকারী সংশ্লিষ্ট এলাকায় উন্নয়নমূলক কোনো প্রকল্প অনুমোদন বা ইতোপূর্বে অনুমোদিত কোনো প্রকল্পে অর্থ ছাড় বা প্রদান করতে পারবেন না।
তাতে আরো বলা হয়, ‘নির্বাচন পূর্ব সময়ে কোনো সরকার, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে রাজস্ব বা উন্নয়ন তহবিলভুক্ত কোনো প্রকল্পের ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে রাজস্ব বা উন্নয়ন তহবিলভুক্ত কোনো প্রকল্পের অনুমোদন, ঘোষণা বা ভিত্তিপ্রস্তর, স্থাপন কিংবা ফলক উন্মোচন করা যাবে না।’
কোনো সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সরকারি বা আধা-সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের তহবিল থেকে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী বা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে কোনো প্রকার অনুদান ঘোষণা বা বরাদ্দ কিংবা ছাড় দিতে পারবে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক ইসির জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব পর্যায়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে সব ধরনের প্রকল্প অনুমোদন ও ফলক উন্মোচন, ভিত্তিপস্তর স্থাপনসহ নির্বাচন পূর্ব সব ধরনের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। নির্বাচনকালীন এসব উন্নয়নমূলক কাজ হলে নির্বাচন প্রভাবিত হওয়ার সম্ভবনা থাকে। তাই এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
সড়ক বন্ধ করে পথসভা নয়
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পথসভা ও ঘরোয়া সভা ছাড়া কোনো জনসভা বা শোভাযাত্রা বের করা যাবে না। একই সঙ্গে ঘরোয়া সভা বা পথসভায় জনগণের চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি হয় এমন কর্মসূচিও দিতে পারবে না প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা।
ইসির নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রার্থী বা রাজনৈতিক দল কিংবা তার মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাদের পক্ষে কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান পথসভা বা ঘরোয়া সভা ছাড়া কোনো জনসভা বা শোভাযাত্রা করতে পারবেন না। তবে পথসভা, ঘরোয়া সভা করতে হলে সভার ২৪ ঘণ্টার পূর্বে তার স্থান এবং সময় সম্পর্কে স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে। যাতে ওই স্থান চলাচল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পুলিশ প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করতে পারেন।
জনগণের চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি হয় এমন কোনো সড়কে পথসভা করতে বা সেজন্য কোনো মঞ্চ না তৈরি করতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজ বলেন, ‘পথসভা বা ঘরোয়া সভার বিষয়ে ২৪ ঘণ্টা আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করলে তারা সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে পারবে। এছাড়া ঘরোয়া বা পথসভাতে যেন কোনো ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম না হতে পারে সেটাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ভালোভাবে খেয়াল রাখতে পারবে।’
ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রচারণা নয়
ধর্মীয় উপাসনালয় ব্যবহার করে কেউ যেন প্রচারণা না চালাতে পারেন সে বিষয়েও ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছে ইসি।
তাতে বলা হয়েছে, প্রার্থী বা রাজনৈতিক দল কিংবা তার মনোনীত প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী কিংবা তাদের পক্ষে কোনো ব্যক্তি মসজিদ, মন্দির, গির্জা বা অন্য কোনো ধর্মীয় উপসানালয়ে কোনো প্রকার নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারবেন না।
বিধান লঙ্ঘণের শাস্তি
ইসির নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলেও পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। বিধান লঙ্ঘন করলে ইসি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রার্থিতা বাতিলসহ অনধিক ৬ মাসের কারাদণ্ড অথবা অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করতে পারেন্। অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করতে পারবেন।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর ২৩৬টি পৌরসভায় এক যোগে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তবে আইনী জটিলতায় মংলাপোর্ট পৌরসভায় নির্বাচন স্থগিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
গত ২৪ নভেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। তফসীল অনুযায়ী- মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৩ ডিসেম্বর, যাচাই-বাছাই ৫ ও ৬ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৩ ডিসেম্বর।