খোলা বাজার২৪ : শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর ২০১৫:ভারতের পিচগুলোর কিউরেটরদের একটা ধন্যবাদ দিতে পারেন ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা। উইকেট তো অন্য সব সিরিজে সব ধরনের পিচেই পাওয়া যায়, কিন্তু সব পিচ কি আর রেকর্ডে তাঁদের নাম জড়িয়ে দিতে পারবে? এই সিরিজের পিচ নিয়ে এত কথা, এত সমালোচনা… অথচ বোলারদের (পড়ুন স্পিন বোলারদের) স্বর্গোদ্যান এই পিচগুলোর কারণেই তো ১১০ বছর আগের একটা রেকর্ডে যুক্ত হয়ে গেল ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের নাম!রেকর্ডটি সিরিজের প্রথম দিনে উইকেট পতনের। সিরিজে ৪টি টেস্টে প্রথম দিনের খেলা হয়েছে। টেস্টে তো প্রথম দিন থাকবেই, তবু এই সিরিজে ‘প্রথম দিনে’র কথাটা একটু বিশেষ ভাবে বলতে হচ্ছে, কারণ বৃষ্টির কারণে দ্বিতীয় টেস্টটা ভেসে যাওয়ার আগে অন্তত প্রথম দিনের খেলা পুরোটাই হয়েছে। না হলে হয়তো রেকর্ডটা হতোই না।সিরিজের চার টেস্টের প্রথম দিন মিলিয়ে উইকেট পড়েছে মোট ৪১টি। চার বা তার চেয়ে কম টেস্ট হয়েছে, এমন যেকোনো দ্বিপক্ষীয় সিরিজে টেস্টের প্রথম দিনে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড এটি। অবশ্য ‘সিংহাসন’টি ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের একার নয়, ভাগাভাগি করে নিতে হচ্ছে আরও দুটি সিরিজের সঙ্গে। এর আগেও যে দুবার চার বা কম টেস্টের সিরিজের প্রথম দিনে ৪১ উইকেট পড়ার রেকর্ড আছে।সিরিজের প্রথম টেস্টে মোহালিতে প্রথম দিনে পড়েছিল ১২ উইকেট। ব্যাঙ্গালোরে বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়া দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে পড়েছে ১০টি। তৃতীয় টেস্টে নাগপুরের ‘মাইনফিল্ড’ পিচেও প্রথম দিনে পড়েছে ১২টি উইকেট। ওই টেস্টটার পরই পিচ নিয়ে সমালোচনা, পাল্টা-সমালোচনা বেশি হয়েছে। আইসিসিও নাগপুরের পিচকে ‘খারাপ’ বলে রায় দিয়েছিল। দিল্লিতে চলতি চতুর্থ টেস্টে তাই একটু ‘ভালো’ পিচ বানিয়েছে ভারত। তারই ফল পাওয়া গেল – এবার প্রথম দিনে পড়ল মাত্র ৭টি উইকেট! কী দরকার ছিল এত ‘ভালো’ পিচ বানানোর? না হলে যে এত ‘লোভনীয়’ একটা রেকর্ড এই সিরিজের একার হয়ে যেত।অবশ্য সমালোচনা, কটূক্তির একটা কড়া জবাব দিয়ে দিতে পারেন কোহলিরা। ১১০ বছর আগের সর্বশেষ এমন কীর্তি গড়া সিরিজেও তো জড়িয়ে আছে দক্ষিণ আফ্রিকার নাম। সেই সিরিজটি হয়েছিল আবার প্রোটিয়াদের ঘরের মাটিতে। যদিও তখন ‘হোম অ্যাডভান্টেজ’, ‘পিচ মডিফিকেশন’ – শব্দগুলোর জন্ম হয়েছিল কী না কে জানে। ১৮৮৯ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার ৭ বছর পর প্রোটিয়ারা সেবার তিন টেস্টের সিরিজ খেলতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ইংল্যান্ডকে। কিন্তু অতিথিরা এসে পুরো ঘর দখল করে নিল। ৩-০ তে সিরিজ জিতেছিল ইংল্যান্ড, এর মধ্যে দুটিতে জয় ইনিংস ব্যবধানে।এর বাইরে ১৩৮ বছরের ইতিহাসে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে আর একবারই এমন রেকর্ড দেখেছে টেস্ট ক্রিকেট। ১৮৮১-৮২ সালে ৪ টেস্টের ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া সিরিজেও প্রথম দিনে পতন হওয়া উইকেটের যোগফল ৪১।ক্রিকেট ইতিহাসের ভুলে যাওয়া স্মৃতি ফিরিয়ে আনার জন্যও তো ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের পিচ কিউরেটরদের ধন্যবাদ দিতে হয়।