Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

images (1)4খোলাবাজার২৪ : শুক্রবার৪ডিসেম্বর২০১৫:আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ নিবন্ধিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্রভাবে পৌরসভা নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছে প্রার্থীরা। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষদিন গতকাল বৃহস্পতিবার ২৩৬টি পৌরসভায় রিটার্নিং অফিসারের কাছে এসব মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়েছে। এ নির্বাচনে সহস্রাধিক মেয়র প্রার্থীসহ কয়েক হাজার কাউন্সিলর প্রার্থীরা অংশ নিচ্ছে। চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও চট্টগ্রামের রাউজানসহ বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে। প্রার্থীরা যাতে নির্বিঘেœ মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেন এ জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মো. শাহনেওয়াজ। সেই সাথে ভোট গ্রহণের ২১দিন আগে তথা ৯ ডিসেম্বরের আগে কেউ প্রচারণা চালালে প্রার্থীতা বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছেন এই কমিশনার।
এদিকে বিএনপি ২৩৬টি, আওয়ামী লীগ ২৩৬টি ও অন্যান্য নিবন্ধিত পার্টিগুলো নির্দিৃষ্ট সংখ্যক এবং জামায়াতে ইসলামী স্বতন্ত্রভাবে বেশকিছু প্রার্থীদের মনোনয়ন প্রদান করেছে।
গত মঙ্গল ও বুধবার বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে পৌর নির্বাচনের মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীদের মধ্যে প্রত্যয়নপত্র বিতরণ করে বিএনপি। জোটের শরিকরা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যয়নপত্র বিতরণ করেনি। তবে সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন অনেকেই। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মোট কতটি পৌরসভায় শরিক দলের প্রার্থীরা অংশ নেবেন, তা চূড়ান্ত হবে ৫ ডিসেম্বরের পর। এর আগে জোটের শরিকদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা হবে বলে জানা গেছে। তবে দলের শরিক এলডিপি ও মরহুম কাজী জাফরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির জন্য দুটি পৌরসভা ছেড়ে দিয়েছে বিএনপি।
পৌর নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিতে বিএনপির প্রার্থীরা কিছু জায়গায় বাধার সম্মুখীন হচ্ছে স্বীকার করে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে; প্রার্থীরা যাতে নির্বিঘনে  মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে তিনি বলেন, বিএনপির প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা পাওয়ার অভিযোগ কিছুটা সত্য হলেও পুরোটা নয়। তবে ভোট অবাধ, নিরপেক্ষ করতে যা যা করা দরকার আমরা করে যাচ্ছি। চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও চট্টগ্রামের রাউজানে এমন একটি অভিযোগের বিষয়ে শাহনেওয়াজ বলেন, প্রকৃতপক্ষে সে ধরনের কোন ঝামেলা হয়নি। অভিযোগগুলো পুরোপুরি সত্য আমি বলবো না, সামান্য হয়ত দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। শাহনেওয়াজ বলেন, যারা অভিযোগ করেছে তাদের বিষয়টি দেখেছি। কেউ কেউ শুধু অভিযোগ করার জন্যই অভিযোগ করে যাচ্ছে। আবার কিছুটা সত্যতাও রয়েছে। এখন পর্যন্ত আর কোথাও অসুবিধা হচ্ছে বলে জানা নেই। প্রার্থীদের প্রচারণার সময় নিয়ে শাহনেওয়াজ বলেন, ভোটের ২১ দিন আগে কোন প্রচার নয়। কেউ বিধি লঙ্ঘন করলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। কাউকে ছাড় দেব না, এটা বাস্তবে দেখিয়ে দেয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে বসে আছি।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়নপ্রাপ্ত ২৩৬টি পৌরসভার একক মেয়র প্রার্থীর তালিকা নির্বাচন কমিশনে () পাঠানো হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী এসব প্রার্থীরা সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ গতকাল বৃস্পতিবার বিকেল পৌনে ৩টার দিকে ইসির যুগ্ম-সচিব জেসমিন টুলীর কাছে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থীর তালিকা জমা দেন।
আবদুস সোবহান গোলাপ উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইসির ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী দল মনোনীত ২৩৬ জন মেয়র প্রার্থীর তালিকা নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছি। দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাক্ষরিত প্রত্যয়নের মাধ্যমে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে ইসির যুগ্ম-সচিব জেসমীন টুলী বলেন, প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিবেন রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে। তবে যদি কেউ ইসিতে এ তালিকা জমা দেন সেটা হবে দলীয় প্রার্থীর বিষয়ে ইসিকে নিশ্চিত করা মাত্র।
ইসির বিশেষ সর্তকতা আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা, নির্বাচনী এজেন্ট ও পোলিং এজেন্ট নিয়োগে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সৎ, দক্ষ, অভিজ্ঞ ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের যেন নিয়োগ দেয়া হয়। পাশাপাশি তারা যেন কোনো প্রার্থীর অধীন বা পক্ষে কর্মরত না থাকেন সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সহকারী সচিব রাজীব আহসান স্বাক্ষরিত এসব নির্দেশনা সংবলিত পরিপত্র দেশের ২৩৬টি পৌরসভার রিটার্নিং অফিসারদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
পরিপত্রের অনুলিপি মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বিজিবি, র‌্যাব, আনসারের মহাপরিচালককে পাঠিয়েছেন তিনি।
এতে বলা হয়েছে, ভোটগ্রহণের জন্য কর্মকর্তা নিয়োগের সময় স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) নির্বাচন বিধিমালা-২০১০ অনুযায়ী এমন কোনো ব্যক্তিকে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার বা পোলিং অফিসার নিয়োগ করা যাবে না, যিনি কোনো প্রার্থীর অধীন বা কারো পক্ষে কর্মরত আছেন বা ছিলেন।
পৌরসভার মেয়র, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করা যায়, সে লক্ষে সৎ, দক্ষ, অভিজ্ঞ ও নিরপেক্ষ কর্মকর্তা-কর্মকর্তাগণকে প্র্রিজাইডিং অফিসার এবং পোলিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ করতে হবে।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর ২৩৫টি পৌরসভার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ৩ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। ৫ ও ৬ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাই এবং ১৩ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। এ দিনেই প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে।