Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

5খোলা বাজার২৪, শনিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০১৫ : গত কয়েক বছর কুড়িগ্রামে আমন ধানের ফলন ভালো হলেও এবার বন্যার কারণে আশানুরূপ হয়নি।
জেলার নয়টি উপজেলায় আমন ধান কাটা, মাড়াই আর বিক্রয় চলছে। কিন্তু বরাবরের মতো কৃষাণ-কৃষাণীদের আনন্দ দেখা যাচ্ছে না।
বন্যা ছাড়াও ছিল পোকামাকড় আক্রমণ। এছাড়া ন্যায্যমূল্যও পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন কৃষকরা।
সরকারি ভাবে চাল ক্রয়ের সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি বলে জেলা খাদ্য বিভাগ জানিয়েছে।
সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের প্রতাব গ্রামের কৃষক মোফাজ্জল হোসেন (৫০) বলেন, “আমি এবার ৩ একর জমিতে আমন ধান আবাদ করেছি। গেল বছর প্রতি একরে ২০ হাজার টাকার মতো খরচ করে প্রায় ৫০ মণ ধান পেয়েছিলাম। কিন্তু এবার সার, তেল, কীটনাশক মিলিয়ে প্রতি একরে প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ করে ধান পেয়েছি ৪৫ মণের মতো।”
বাজারে ধান প্রতিমণ ৫শ থেকে ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি হওয়ায় উৎপাদন তুলতেই হিমসিম খেতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তিনি মনে করেন, সরকার ডিলারের মাধ্যমে ধান ক্রয় না করে মাঠ পর্যায়ে কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করলে সাধারণ কৃষকরা ন্যায্য দাম পাওয়ার পাশাপাশি ক্ষতিটা পুষিয়ে নিতে পারবে।
একই গ্রামের কৃষক ইসকেন্দার আলী (৩২) দেড় একরে ২৫ হাজার টাকা খরচ করে ফলন পেয়েছেন ৬৫ মণ এবং আনোয়ার হোসেন (৩০) দুই একরে ৪০ হাজার টাকা খরচ করে পেয়েছেন ৮৫ মণ।
বন্যা ছাড়াও পোকামাকড়ের আক্রমণও ফলনের উপর প্রভাব ফেলেছে বলে জানান তারা।
তারা বলেন, এত টাকা খরচ করে ধানের দাম না থাকায় বিপদে রয়েছেন। সামনে ধানের দাম না বাড়লে আগামীতে ধান আবাদই বাদ দিতে হবে।
উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের সাদুল্ল্যা গ্রামের কৃষক সোয়েব আলী (৫৫) জানান, “আড়াই একর জমিতে ধান আবাদ করেছি বাহে। এবারকার বন্যায় দুই একর জমির ধান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। আধা একরের ধান দিয়ে কোনোরকমে নিজেদের সংসারের চাহিদা মেটাতেই যাবে।”
ধান নষ্ট হওয়ার কারণে তার প্রায় ৩০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক শওকত আলী জানান, চলতি বছর ১ লাখ ৩ হাজার ২৯১ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়। দুদফা বন্যায় ২০ দিনের বেশি পানি স্থায়ী থাকায় ৪৪ হাজার ৮৫ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
“ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারিভাবে এবং কৃষকদের সহযোগিতায় বেশ কিছু এলাকায় ধানের বীজ সরবরাহ করেছি। এছাড়া আমনের ফলনে বন্যার ক্ষতি কিছুটা কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।”
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. আশরাফুজ্জামান জানান, আমন মৌসুমে ধান ক্রয় করা হয় না। চাল সংগ্রহ করা হয়। এখন পর্যন্ত মন্ত্রণালয় থেকে চাল সংগ্রহ করার কোনো চিঠি আসেনি।