Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

42খোলা বাজার২৪, শনিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০১৫ : সৌদি আরবে প্রতিবন্ধী মানুষের জন্য বিশাল অংকের অর্থ বরাদ্দ থাকলেও তাদের যতœ নেবে এমন শিশু বিকাশ কেন্দ্রের ঘাটতি রয়েছে। বিশেষত অটিস্টিক শিশুদের জন্য অভিভাবকেরা পড়েছেন ভোগান্তিতে।
উত্তরাঞ্চলের বেশিরভাগ পরিবারকেই তাদের অটিস্টিক শিশুকে বিশেষায়িত পরিচর্যা কেন্দ্রে রেখে তাদের মেধার বিকাশ ঘটাতে হলে জর্ডান যেতে হচ্ছে। আল-রিয়াদ নিউজপেপার এমন বেশ কিছু অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানতে পারেন তাদের দুর্দশার কথা।
সৌদি এক পিতা আল-রীদ আল-রুয়ালী জানান, ৭ বছর বয়সী অটিস্টিক সন্তান ফাহাদকে চিকিৎসার জন্য জর্ডানে নিয়ে যাওয়া এবং তার সাথে থাকার জন্য তিনি দ্রুত অবসর নিতে বাধ্য হয়েছেন।
তিনি বলেন, আল-জউফে আমাদের বিশেষ কোন অটিজম কেন্দ্র নেই। এমনকি উত্তরাঞ্চলের এলাকাগুলোতেও নেই। তিনি আরও বলেন, চলে আসা ছাড়া আমার কোন উপায় ছিল না কারণ জর্ডানে আমার ছেলে যে কেন্দ্রে যাওয়া আসা করে সেখানে তার কাছাকাছি থাকতেই হবে আমাকে।
জর্ডানে ১৪ টি বিশেষ কেন্দ্র রয়েছে এই প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য। কেন্দ্রগুলো শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সমাজে একীভূত করতে এবং তাদের মানসিক দক্ষতা বৃদ্ধিতে স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি শিক্ষা প্রদান করছে।
দেশটির উত্তরাঞ্চলে আরও অসংখ্য পরিবারের জন্য অটিজম সেন্টার তৈরি হলে আর জর্ডান যাওয়ার জন্য এত ঝক্কি পোহাতে হবে না এমন প্রত্যাশা আল-রুয়ালীর। জর্ডানের এই অটিজম কেন্দ্রে যোগ দেয়ার পর থেকেই ফাহাদের মানসিক এবং শারীরিক উন্নতি বেশ ভালো হয়েছে বলে জানান তিনি।
অপর এক সৌদি মা উম্ম মুহাম্মদের বিশ্বাস রিয়াদের কিছু বেসরকারি পুনবার্সন কেন্দ্র গলাকাটা মূল্য নেয় যা মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর সামর্থ্যের বাইরে। তিনিও বাধ্য হয়েছেন জর্ডান চলে আসতে।
তিনি বলেন, আমার অটিস্টিক ছেলেকে রিয়াদের এই কেন্দ্রে রাখার আগে যেখানে সে ছিল সেখানে অনেক অর্থ ব্যয় করেও কোন লাভ হয় নি। সেখানে কোন যোগ্যতাস¤পন্ন থেরাপিস্ট এবং বিশেষজ্ঞ নেই। ঘরের জন্য খারাপ লাগলেও কিছু করার নেই। আমাকে এখানেই থাকতে হবে জানান এই অভিভাবক।
আরও অনেক অভিভাবকেরই একই অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তাদের সবার একই মত, অটিস্টিক একাডেমিগুলো অতিরিক্ত ব্যয়বহুল।
আমানে অবস্থিত সৌদি আরবের সাংস্কৃতিক কার্যালয়ের বিভাগীয় প্রধান ড. নাইফ আল-জারেহ বলেন, সারা দেশের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রসারে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, শ্রম মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একত্রে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, অল্প যা আছে তা ভাল তবে আরও বৃদ্ধি পাওয়া দরকার। তবে অল্প কিছু অটিজম কেন্দ্রের তুলনা সারা দেশের চিত্রের সাথে যায় না। আমাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিভিন্ন ধরণের প্রতিবন্ধী মানুষের প্রয়োজন অনুযায়ী কেন্দ্র তৈরি করতে পারবো। ৮৯১ জন ছেলে এবং মেয়ে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী পড়ছে জর্ডানের এই বিশেষ কেন্দ্রগুলোতে। সৌদি সাংস্কৃতিক বিভাগের কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ আল-খাতানী জানান, সৌদি সরকার ১০০ মিলিয়ন সৌদি রিয়েল খরচ করেছে এক বছরে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য এবং ৮ মিলিয়ন সৌদি রিয়েল ব্যয় করেছে চিকিৎসাখাতে।
আমরা গুরুত্বের সাথে তদারকি করবো বিষয়গুলো এবং শিক্ষার্থীদের ভালভাবে সেবা দেয়ার চেষ্টা করবো। এ বছর ৩টি কেন্দ্র বাতিল করা হয় নিম্নমানের হওয়ার কারণে। ৮৯১ জন শিক্ষার্থীর মধ্য বেশিরভাগ অটিস্টিক শিক্ষাথী, বাকিরা মস্তিস্ক পক্ষাঘাত প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী, শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী, শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী রয়েছে। সৌদি গেজেট