খোলা বাজার২৪, শনিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০১৫ : আমাজনের ঘন জঙ্গলের মধ্যে আছে এক শহর। সেখানে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, ব্যবহৃত তৈজসপত্র, মন্দির, মন্দিরের ভেতরের মূর্তি সবকিছুই নাকি সোনা দিয়ে তৈরি! রূপকথার গল্পের মতো শোনালেও, এই মিথের হাতছানিতেই বহুদিন ধরে অনেক দুঃসাহসী অভিযাত্রী পাড়ি জমিয়েছেন দক্ষিণ আমেরিকার পেরুর দুর্ভেদ্য গভীর অরণ্যে। স্প্যানিশ ভাষায় যে শহরের নাম ‘এল ডোরাডো’। তবে আজ পর্যন্ত কেউই খুঁজে পায়নি সোনায় মোড়া এই শহরটি।
ধারণা করা হয় বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সোনা রয়েছে ইউনাইটেড স্টেটস ব্যাংক অব আমেরিকার অর্থ ভা-ারে। কিন্তু যা নাকি ইনকাদের ধনসম্পদের কাছে অতি নগণ্য মাত্র। বিগত ৪শ বছর ধরে ইনকাদের স্বর্ণভা-ারের খোঁজ করতে অনেক ভূতত্ববিদ ও স্বর্ণ সন্ধানীরা চেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু প্রত্যেকবারই তারা ব্যর্থ হয়ে ফিরেছেন।
কাহিনী হিসেবে প্রচলিত আছে, বহুদিন আগে দক্ষিণ আমেরিকার পাহাড়-জঙ্গলে ঘেরা জায়গায় ইনকারা তাদের সভ্যতা গড়ে তুলেছিল। ইনকারা ছিল প্রভূত ধনসম্পত্তির মালিক। তাদের নেতা ছিলেন আতা হুয়ালপা। কিভাবে যেন ইনকাদের স্বর্ণ-সম্পত্তির খবর পৌঁছে গেল স্পেনীয়দের কানে। অমনি সোনার লোভে ইনকাসাম্রাজ্যে হানা দিল তারা। স্পেনের বিপুল সেনাবাহিনীর সামনে যে তারা খড়কুটোর মতো অসহায়, তা বুঝতে বেশি সময় লাগল না আতা হুয়ালপার।
তার নির্দেশে সব ‘পাইতিতি’ অর্থাৎ ‘স্বর্ণ ভা-ার’ রাতারাতি লুকিয়ে ফেলল ইনকারা। কিন্তু ইনকাদের যুদ্ধে হারিয়ে অনেক খুঁজেও সে স্বর্ণ ভা-ারের হদিস পায়নি স্পেনীয়রা।
তাদের মুখ থেকেই ধীরে ধীরে গোটা দুনিয়া জানতে পারে এল ডোরাডোর কথা।
এল ডোরাডোর রহস্যে যোগ হয়েছে ভিনগ্রহী তত্ত্বও। অনেকে বলেন, পৃথিবীর বাইরে নাকি এমন এক গ্রহ আছে, যার অধিবাসী জীবনধারণের জন্য সোনার ওপর নির্ভরশীল ছিল। তারাই নাকি এল ডোরাডোর স্বর্ণভা-ার থেকে সরিয়ে ফেলেছে সব সোনা! অনেক অভিযাত্রীও সে সোনার সন্ধানে অভিযান চালিয়ে ফিরেছেন শূন্য হাতেই। মায়া-সভ্যতার ধ্বংসাবশেষের মধ্যেও গুপ্তধন খুঁজে বেড়িয়েছেন অনেক রতœ সন্ধানী মানুষ। কিন্তু ফলাফল সেই শুন্য।