
ফেনী সদর পৌরসভায় বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী বিএনপি নেতা ফজলুর রহমান বকুল ও পরশুরাম পৌরসভায় মেয়র প্রার্থী যুবদল নেতা মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। শনিবার তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করে।
এদিকে ফেনী পৌরসভা, দাগনভুঁইয়া ও পরশুরাম পৌরসভায় ৩৩টি কাউন্সিলর পদে ক্ষমতাসীন দলের বাইরে অন্য কাউকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন বিএনপির মূখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন। শুক্রবার নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, যেসব জায়গায় প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন, প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে, তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেয়া হয়নি, সেখানে নতুন করে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার তারিখ নির্ধারণের জন্য আমরা নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
দলের মূখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি, শুক্রবার পত্র-পত্রিকায়ও প্রকাশিত হয়েছে, কিভাবে বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘনের মহাৎসব চলছে। বরগুনার বেতাগী, ভোলার দৌলতখান, যশোরের কেশবপুর, ময়মনসিংহের গৌরিপুর, ঢাকার ধামরাই, সাভার, ফেনী সদর, দাগনভুঁইয়া, পরশুরাম প্রভৃতি জায়গায় আচরণবিধি ল্ঘংন করে ক্ষমতাসীন দলের এমপিদের নেতৃত্বে প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান।
তিনি বলেন, যেসব রিটার্নিং অফিসার সরকারের ইশারায় চলছেন, যারা আচরণবিধি লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেননি তাদেরকে অবিলম্বে নির্বাচনের দায়-দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। কারণ তাদেরকে স্ব-স্ব জায়গায় রাখলে নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে না। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন কি ব্যবস্থা নেয়- বিএনপি তার প্রতীক্ষায় আছে বলেও মন্তব্য করেন রিপন।
এছাড়া চাঁদপুরেও ছেংগারচর পৌরসভায় বিএনপির মেয়র প্রার্থী সারোয়ারুল আবেদীনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
তবে বিএনপি প্রার্থী সারোয়ারুল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, “আমি মনোনয়নপত্র জমাদানকালে প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র জমা দিয়েছি। কোনো ধরনের ভুলত্রুটি ছিল না। এরপরও কেন আমার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে তা আমার বোধগম্য নয়।” এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করবেন বলে জানান তিনি।
রাজনীতি সচেতন মহলের মতে, উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রার্থীতা বাতিল এবং মনোনয়নপত্র জমা দিতে না দেয়ায় নির্বাচন কমিশন যে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আন্তরিক নয় তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। বস্তুত, সরকারি দলের নীলনকশা বাস্তবায়ন করছে নির্বাচন কমিশন। এব্যাপার নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতমূলক ভূমিকা জাতিকে হতাশার মধ্যে ফেলেছে বলে মন্তব্য করছেন অনেকে। এছাড়া পৌরসভা নির্বাচন আদৌ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হবে কিনা তা নিয়েও সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
এদিকে পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে বিরোধী দলের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কমীদের গণগ্রেফতার চলছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে।