Wed. May 7th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

17খোলা বাজার২৪, রবিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৫ : মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের কথা জাতিকে মনে রাখার তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “আমরা কারও কাছে হার মানি না, পরাজিত হই না। সেইভাবে আমাদের নিজেদের গড়ে তুলতে হবে।”

তিনি বলেছেন, “বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীকে গড়ে তুলতে হবে অজেয় রূপে।”

রোববার বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে রাশিয়ার তৈরি কমব্যাট প্রশিক্ষণ বিমান ইয়াক-১৩০ এবং ইতালির তৈরি অনুসন্ধান ও উদ্ধার হেলিকপ্টার অগাস্টা এডব্লিউ-১৩৯ এর অন্তর্ভুক্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

ঢাকার কুর্মিটোলায় বিমান বাহিনীর ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুতে এ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, “সম্পদের সীমাবন্ধতা আছে। কিন্তু তা কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে না। যদি আমাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস থাকে, সেই আত্মবিশ্বাস আর আত্মমর্যাদা বোধ নিয়েই বাংলাদেশের জনগণ এগিয়ে যাবে।”

বিমানবাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে সরকার প্রধান বলেন, উন্নত প্রযুক্তিসমৃদ্ধ সরঞ্জাম ও ব্যবস্থাপনা এ বাহিনীর ‘দক্ষতা ও অপারেশনাল কার্যক্ষমতা’ আরও বৃদ্ধি করবে।

“সম্পদের সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আপনাদের যতটুকু সহায়তা দেওয়া সম্ভব, বর্তমান সরকার এ ব্যাপারে কোনো কার্পণ্য করেনি, ভবিষ্যতেও করবে না।”

বিমানবাহিনীতে শিগগিরই পাঁচটি নতুন এমআই-১৭১ এসএইচ হেলিকপ্টার এবং ১২টি পিটি-৬ প্রশিক্ষণ বিমান যুক্ত করার কথাও বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী সকালে ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুতে পৌঁছালে বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল আবু এসরার এবং ঘাঁটির অধিনায়ক এয়ার কমোডর এম ওবায়দুর রহমান তাকে স্বাগত জানান।

প্রধানমন্ত্রী কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ করে ২১ নম্বর স্কোয়াড্রন লিডার উইং কমান্ডার হাসান আশরাফুজ্জামানের হাতে ইয়াক-১৩০ এবং ১ নম্বর স্কোয়াড্রন লিডারের হাতে অগাস্টা এডব্লিউ-১৩৯ এর অন্তর্ভুক্তির আদেশ তুলে দেন।

কুচকাওয়াজ শেষে প্রধানমন্ত্রী বিমান বাহিনীতে নতুন সংযোজিত এই প্রশিক্ষণ বিমান এবং হেলিকপ্টারের ডিসপ্লে দেখেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ‘ফ্লাই বাই ওয়ার’ প্রযুক্তিতে নিয়ন্ত্রিত ইয়াক-১৩০ বিমান আধুনিক ও বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ সুবিধার পাশাপাশি যুদ্ধকালীন সময়ে আকাশ প্রতিরক্ষা, প্রয়োজনে আক্রমণ এবং সোনা ও নৌ বাহিনীকে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতা দিতে সক্ষম।

এই বিমানের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় এক হাজার ৬০ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ ২ হাজার ৩০০ কিলোমিটার পাল্লার এ বিমান ভূমি থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ১২ হাজার মিটার উচ্চতায় টানা তিন ঘণ্টা ২০ মিনিট উড়তে পারে।

কেএবি-৫০০ টিভি দূর নিয়ন্ত্রিত বোমা, আর-৭৩ ক্ষেপণাস্ত্র, জিএসএইচ-২৩ গান, এস-৮, এস-১৩, এস-২৫ রকেট এবং ৫০ থেকে ৫০০ কেজি বোমাসহ তিন হাজার কিলোগ্রাম গোলাবারুদ বহন করতে সক্ষম ইয়াক-১৩০।

অটো পাইলট প্রযুক্তি সম্বলিত অনুসন্ধান ও উদ্ধার হেলিকপ্টার অগাস্টা এডব্লিউ-১৩৯ প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও উপকূল ও সমুদ্র এলাকায় উদ্ধার কাজ চালিয়ে যেতে পারে।

এছাড়া উপকূল ও সমুদ্রসীমায় সামরিক ও আধা সামরিক বাহিনীকে কৌশলগত সহায়তাও দিতে পারে এই হেলিকপ্টার।

বর্তমানে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ফাইটার পাইলটরা বেসিক জেট প্রশিক্ষণ শেষ করে সরাসরি হাই পারফরমেন্স ফাইটার বিমানের অপারেশনাল প্রশিক্ষণে নিয়োজিত হন। কিন্তু উন্নত দেশে যুদ্ধবিমানের বৈমানিকদের প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে বেসিক জেট ট্রেনিং শেষে অ্যাডভান্সড জেট ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে।

এ বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের বিমানবাহিনীর বৈমানিকদের সময়োপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উন্নততর যুদ্ধবিমান পরিচালনায় উপযুক্ত হিসাবে গড়ে তুলত অ্যাডভান্সড জেট ট্রেইনিংয়ের বিমানও সংগ্রহ করা হচ্ছে।”

আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিমানবাহিনীর উন্নয়নে নেওয়া পদক্ষেপগুলোর কথাও প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে তুলে ধরেন। পরে তিনি বঙ্গবন্ধু অ্যারোনটিক্যাল সেন্টারে যুদ্ধবিমান ওভারিহলিং কার্যক্রম দেখেনে।

মন্ত্রিসভার সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, কূটনীতিক, নৌবাহিনী প্রধান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারসহ সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।