খোলা বাজার২৪, রবিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৫ : নতুন কোচ গ্যারি নেভিল এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নেননি। কিন্তু তাঁর দায়িত্ব নেওয়ার আগেই যে বার্সেলোনাকে রুখে দিল ভ্যালেন্সিয়া। নেভিলের দায়িত্ব নেওয়ার ব্যাপারটি কী ভ্যালেন্সিয়া খেলোয়াড়দের নতুন করে উজ্জীবিত করল? টানা ছয় ম্যাচ জেতা বার্সেলোনাকে রুখে দিয়ে ভ্যালেন্সিয়া প্রমাণ করল গ্যারি নেভিলের কোচ হয়ে আসায় দারুণভাবেই উজ্জীবিত তারা।
ভ্যালেন্সিয়ার উজ্জীবিত ফুটবলের পাশাপাশি নিজেদের সেরা খেলোয়াড়দের ব্যর্থতাও বার্সেলোনাকে কাল জিততে দেয়নি। লিওনেল মেসি, নেইমার কিংবা লুইস সুয়ারেজরা মাঠে ছিলেন ঠিকই, কিন্তু তাদের মধ্যে প্রতিপক্ষকে ছিন্নভিন্ন করে ফেলার ক্ষুধাটা তেমন দেখা যায়নি। উপরন্তু মেসি, সুয়ারেজদের মতো খেলোয়াড়দের গোল মিসের মহড়াও ভ্যালেন্সিয়ার মাঠে থেকে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে ফিরতে বাধ্য করেছে বার্সেলোনাকে।
ম্যাচটা ১-১ গোলে ড্র হলেও প্রাপ্ত সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলে বার্সেলোনা বড় ব্যবধানেই জিততে পারত। সুযোগ যে হারে বার্সেলোনার পায়ে লুটিয়ে পড়েছে, তাতে প্রথমার্ধের শেষেই খেলাটায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু মেসি পরপর দুবার খুব সহজ সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে ব্যর্থ হন। দুবারই নেইমারের ক্রস থেকে সুযোগ হাতছাড়া করেন মেসি। প্রথমবার নেইমারের ক্রস থেকে গোলমুখে বল পেয়ে তা পোস্টের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন। পরেরবার একইভাবে নেইমারের কাছ থেকে বল পেয়েও তা তিনি মেরে দেন ভ্যালেন্সিয়া গোলরক্ষক জাউমে ডোমেনেখের গায়ে।
ম্যাচের ৬০ মিনিটের মাথায় লুইস সুয়ারেজের গোলে অবশ্য এগিয়ে গিয়েছিল বার্সেলোনা। গোলটি নিয়ে অবশ্য যথেষ্ট বিতর্ক আছে। ভ্যালেন্সিয়ার দাবি অনুযায়ী সুয়ারেজ নাকি অফসাইডে ছিলেন। বিতর্কের মধ্যেই নিজেদের নতুন করে সাজিয়ে খেলা শেষ হওয়ার ৫ মিনিট আগে বার্সেলোনার সর্বনাশটা করে দেয় ভ্যালেন্সিয়া। লা-লিগা জায়ান্টদের রুখে দেওয়ার গোলটি করেন সান্তি মিনা।
ম্যাচে শেষে হতাশ বার্সেলোনা কোচ লুইস এনরিকে স্বীকার করেছেন, তাঁর তারকাত্রয়ীর নিষ্প্রভ পারফরম্যান্সই ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে দলকে ডুবিয়েছে। ম্যাচে বার্সেলোনা তাদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারেনি বলেও মন্তব্য তাঁর, ‘সাধারণত আমাদের খেলায় যে সহজিয়া ব্যাপারটা থাকে, সেটাই আজ অনুপস্থিত ছিল। সাধরণত আমরা ফাইনাল থার্ডে যেভাবে সুযোগ কাজে লাগাই, আজ সেটা করতে পারিনি।’
গোলের সুযোগ নষ্ট করার খেসারত তাঁর দল দিয়েছে বলেই অভিমত এনরিকের, ‘আমরা আজকে প্রচুর গোলের সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো কাজে লাগাতে পারিনি। আমরা প্রচুর খেটে খেলেছি, কিন্তু সে অনুযায়ী পুরস্কার পাইনি। ভ্যালেন্সিয়াও রক্ষণাত্মক ফুটবলটা ভালো খেলেছে।’
এদিকে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা মনে করেন ভ্যালেন্সিয়া ম্যাচে তাঁর দল দুর্ভাগ্যের শিকার হয়েছে, প্রথমার্ধে আমরা বেশ কয়েকটি নিশ্চিত গোলের সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো কাজে লাগাতে পারিনি। ম্যাচে দলও খুব খারাপ করেনি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাকে সমতাসূচক গোল হজম করতে হয়েছে।’
বার্সেলোনা মিডফিল্ডার প্রতিপক্ষের প্রশংসাও করেছেন উদারচিত্তেই, ‘দেখুন আমরা একের পর এক গোলের সুযোগ মিস করে মাত্র একটা দিতে পেরেছি। আর ভ্যালেন্সিয়া দুই-একটি সুযোগ থেকে একটিতে গোল করে দেখাল। ভ্যালেন্সিয়া আমাদের সহজভাবে খেলাটা খেলতে দেয়নি। ম্যাচটাকে কঠিন করে পয়েন্ট ভাগাভাগির কৃতিত্বটা ওদের দিতেই হবে।’
এই ড্রয়ে জয়রথ থমকে গেলেও লিগের শীর্ষস্থানটায় অবশ্য কোনো পরিবর্তন আসছে না। ম্যাচটা জিতে গেলে অবশ্য দ্বিতীয় স্থানে থাকা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের সঙ্গে পয়েন্টের ব্যবধানটা আরও বাড়িয়ে নিত বার্সেলোনা। গ্রানাডার বিপক্ষে ম্যাচে ২-০ গোলে জিতে বার্সেলোনার সঙ্গে পয়েন্টের ব্যবধান ২-এ নামিয়ে এনেছে অ্যাটলেটিকো।