খোলা বাজার২৪, রবিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৫ ,তোফাজ্জল হোসেন,নরসিংদী থেকে ॥আজ সকাল ১১ টায় নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির উদ্যেগে “ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেললইনকে ডাবল লাইনে উন্নীত করার দাবিতে” মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করেছে বয়েক হাজার নারায়ণগঞ্চবাসী।
কর্মসূচী পালনকালে বক্তরা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডাবল রেললাইন বাস্তবায়নের পক্ষে তাদের অভিমত ব্যক্ত করে বলেন,
ঢাকা-নারায়নগঞ্জ অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি রেলরুট। প্রতিদিন চাকুরিজীবি, ব্যবসায়ী ও ছাত্রসহ হাজার হাজার মানুষ এই রুটে যাতায়াত করেন। অথচ কোচের স্বল্পতা, পুরাতন লোকোমোটিভ ও মেয়াদ উত্তীর্ণ কোচ এবং নিয়মিত রেল লাইন মেরামত না করায় প্রতিদিন যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বর্তমান সরকার ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলরুটে অধিক সংখ্যক ট্রেন পরিচালনার মাধ্যমে যাত্রী সেবা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাতীয় অর্থনৈতিক নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৩৭৮ কোটি ৬৫ লাখ ৫৭ হাজার টাকা ব্যয়ে ডাবল রেল লাইন নির্মাণের প্রকল্প অনুমোদন করেন। বহুল প্রত্যাশিত ডাবল রেললাইন নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করায় নারায়ণগঞ্জবাসী আনন্দিত হলেও আজ অবধি দৃশ্যমান কোন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়নি। ঢাকা- নারায়ণগঞ্জ রেলপথ ডাবল লাইন নির্মাণ করা হলেও শুধু নারায়ণগঞ্জবাসী নয় বরং নারায়ণগঞ্জের নিকটবর্তী জেলাগুলোর মানুষও উপকৃত হবে।
তারা বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে দৈনিক প্রায় ৩২৮ টির মত ট্রেন পরিচালনা করে থাকে। এরমধ্যে যে কয়েকটি ট্রেন লাভজনক তারমধ্যে ঢাকা- নারায়ণগঞ্জ অন্যতম। শুধু তাই নয় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জে একটি ট্রেন একবারে ২৫ লিটার ডিজেল খরচ করে ১৫০০ যাত্রী বহন করতে সক্ষম। এই সমপরিমাণ যাত্রী সড়কে বহন করতে প্রয়োজন হবে ৩৮ টি বাস এবং ২২৮ লিটার ডিজেল। অথচ পরিকল্পনায় লেরকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে না। ঢাকা- যাত্রাবাড়ী ১১.৭ কি.মি. ফ্লাইওভার নির্মানে ২,১৮৭ কোটি টাকা ব্যয় করলেও ঢাকা- নারায়ণগঞ্জ ১৬ কি.মি রেলপথ ডাবল লাইন নির্মানের জন্য ৩৭৮ কোটি টাকা খরচ করতে কালক্ষেপন করা হচ্ছে।
বক্তরাা আরো বলেন, ঢাকা- নারায়ণগঞ্জ রেল লাইনের অবস্থা: নিয়মিত লাইন মেরামত না করায় ঢাকা- নারায়ণগঞ্জ রেল লাইন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সাধারন দৃষ্টিতে মনে হয় পরিত্যক্ত লাইন। রেল লাইনের মধ্যে পর্যাপ্ত পাথর নেই, স্লিপারগুলো ভাঙ্গা। ফলে রেল লাইন দিয়ে রেলগাড়ি ঝুঁকিপূর্ণ ও ধীর গতিতে চলাচল করছে। এতে করে ট্রেনের নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছতে আগের চেয়ে অনেক বেশি সময় ব্যয় হচ্ছে। পাশপাশি প্রায়ই লাইনচ্যুাতর ঘটনা ঘটছে।
প্রতিদিন চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও ছাত্রসহ হাজার হাজার মানুষ এ রুটে যাতায়াত করেন। অথচ কাঙ্খিত যাত্রীসেবা না থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ভাঙ্গা সিট, কোচের স্বল্পতা, পর্যাপ্ত আলোর অভাব, ফ্যান ও পয়ঃব্যবস্থাপনা না থাকা, মহিলা বগিতে আসন সংখ্যা কম এবং পুরাতন লোকোমোটিভ ও নিয়মিত লাইন মেরামত না করায় সিডিউল বিপর্যয়ের কারনে চাকুরিজীবি, ব্যবসায়ী ও ছাত্রসহ হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
বক্তরা আরো বলেন, ঢাকা- নারায়নগঞ্জ যাত্রী সেবা বৃদ্ধি এবং ডাবললাইন নির্মান করা হলে অধিক সংখ্যক কমিউটার ট্রেন চালুর মাধ্যমে যাত্রী সেবা বৃদ্ধি করা সম্ভব। পাশপাশি ঢাকার নিকটবর্তী জেলাগুলোর ( ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, নরসিংদি, ভৈরব, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, প্রভৃতি) সাথে সংযোগ স্থাপন করা যেতেে পারে। এতে করে রেলের ব্যপ্তি বৃদ্ধি পাবে এবং ঢাকা শহরের উপর জনসংখ্যার চাপ কমাতে ভূমিকা রাখবে। যা জেলা পর্যায়ের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করবে। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটিরি নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় রাজিৈনতক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন।