খোলা বাজার২৪, সোমবার, ৭ ডিসেম্বর ২০১৫: আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে প্রার্থীদের জন্য নির্বাচনী প্রতীক রাখা হয়েছে গ্যাসের চুলা, কাঁচি, চকলেট, চুড়ি, পুতুল, ফ্রক, ভ্যানিটি ব্যাগ, মৌমাছি, আঙুর ও হারমোনিয়াম। এ নিয়ে আবারও সমালোচনার মুখে পড়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এর আগে চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত ঢাকার দুটি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও নারীদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া প্রতীক নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিল নির্বাচন কমিশন। সে সময় রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে প্রার্থীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রতীক দেওয়ার ব্যাপারে ভবিষ্যতে বিবেচনা করার কথা বলেছিল কমিশন। কিন্তু এবারও আগের ধারাই অনুসরণ করেছে কমিশন।
প্রতীক নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেক নারী কাউন্সিলর প্রার্থী। তাদের ভাষ্য, মেয়েরা বাস্তবিক অর্থে সব ধরনের কাজেই যুক্ত হচ্ছে, অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন কিন্তু এমন গৃহস্থালি সামগ্রীর প্রতীক দিয়ে নারীদের প্রতি পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতারই পরিচয় দিলো।
এ বিষয়ে ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি বিভাগের পরিচালক শীপা হাফিজার মতে, এই ধরনের প্রতীক নারী ও নারী আন্দোলনের জন্য অবমাননাকর।
এতে নির্বাচন কমিশনের সংকীর্ণ মনোবৃত্তির পরিচয় প্রকাশ পেয়েছে। নারীর সমতা, ক্ষমতায়ন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কোনো ধারণা নেই। মনে হয় কমিশন অন্ধকার যুগে বাস করছে।
জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এবার আমরা তাড়াহুড়া করে প্রতীক বরাদ্দ দিয়েছি। তাই বেশি কিছু পরিবর্তন করতে পারিনি। তবে যেসব প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা নিয়ে নারী প্রার্থীদের খুব বেশি আপত্তি থাকার কথা না। কারণ পুরুষরাও কিন্তু এখন চুলায় রান্না করে। তারাও কিন্তু চকলেট খায়,পুতুল নিয়ে খেলে। তবে এটি নিয়ে খুব বেশি বিতর্ক বা আপত্তি থাকলে ভবিষ্যতে বিবেচনা করা হবে।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর ২৩৪টি পৌরসভায় ভোট অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া শেষ হয়েছে। এখন যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে। সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন দুই হাজার ৬৬৮ জন।