Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

60খোলা বাজার২৪,মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর ২০১৫: নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে আরও জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকায় নয়টি দেশের রাষ্ট্রদূত, যারা সবাই নারী।

নারীর প্রতি সহিংসতা পুরো জনগোষ্ঠীর জন্য হুমকিস্বরূপ মন্তব্য করে এক নিবন্ধে রাষ্ট্রদূতরা বলেছেন, “এটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হ্রাস করে এবং সহিংসতা ও সংঘাতকে উসকে দেয়।”

বিশ্ব ব্যাংকের সাম্প্রতিক এক গবেষণার বরাত দিয়ে তারা বলেছেন, “নারীর উপর সহিংসতার উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক বিরূপ প্রভাব রয়েছে, যার মধ্যে স্বাস্থ্যসেবায় ব্যয়, নারীদের আয়ের উৎস হারানো, উৎপাদনশীলতা হ্রাস এবং বংশ পরম্পরায় নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে।”

মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো ওই যৌথ নিবন্ধে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধের প্রয়োজনীয়তা জরুরি ভিত্তিতে আমলে নেওয়ার আহ্বান জানান তারা।

এই নয় রাষ্ট্রদূত হলেন- যুক্তরাষ্ট্রের মার্শা বার্নিকাট, ফ্রান্সের সোফি অবেয়ার, নেদারল্যান্ডসের লিওনি মার্গারিটা কুয়েলেনায়ের, ডেনমার্কের হ্যান ফুগল এস্কেয়ার, নরওয়ের মেরেটে লুন্ডিমো, শ্রীলঙ্কার ইয়াসোজা গুনাসেকেরা, ভুটানের পেমা শোডেন, ব্রাজিলের ওয়ানজা ক্যাম্পোস দ্য নব্রেগা ও মালয়েশিয়ার নোরলিন বিন্তি ওসমান।

নিবন্ধে বলা হয়, “গবেষণায় দেখা গেছে, নারীর প্রতি সহিংসতা ভয়ানকভাবে সব পর্যায়ে রয়েছে।

“বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বজুড়ে প্রতি তিনজন নারীর একজন তার জীবনে সঙ্গীর হাতে শারীরিক বা যৌন নিপীড়নের শিকার হন।”

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো পরিচালিত নারীর প্রতি সহিংসতা জরিপ ২০১১-এর তথ্য তুলে ধরে এতে বলা হয়, “বাংলাদেশে বিবাহিত নারীদের শতকরা ৮৭ জন কোনো না কোনো সময় স্বামীর হাতে নির্যাতিত হয়েছেন।”

নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে নয় রাষ্ট্রদূত বলেন, “আমরা সবাই এর প্রতিরোধে কিছু করতে পারি।”

‘ইউএন উইমেন’র বরাত দিয়ে নিবন্ধে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ক্যান্সার, সড়ক দুর্ঘটনা, ম্যালেরিয়া ও যুদ্ধের কারণে ১৫ থেকে ৪৪ বছরের যতো সংখ্যক নারী ও মেয়ে শিশুর মৃত্যু ও প্রতিবন্ধিত্ব বরণ করতে হচ্ছে তার চেয়ে বেশি হচ্ছে নারীর প্রতি সহিংসতায়।

নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে তাদের নিজ নিজ দেশে ২০৩০ সাল মেয়াদী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার আলোকে কাজ শুরু হয়েছে বলে নিবন্ধে উল্লেখ করেন নয় রাষ্ট্রদূত।

“নতুন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা পরস্পর সম্পর্কিত লিঙ্গসমতা এবং নারী ও কন্যাশিশুর ক্ষমতায়নে জোর দেয়। এই বিষয়ে আমাদের অবশ্যই দৃষ্টিপাত করতে হবে, যদি আমরা উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জন করতে চাই। এখন বাস্তবায়নের প্রতি আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে,” বলা হয়েছে তাদের নিবন্ধে।

নারী নির্যাতন রোধে করণীয় সম্পর্কে আলোকপাত করে নিবন্ধে বলা হয়, “নারীর প্রতি সহিংসতা রুখতে আমরা প্রত্যেকেই আমাদের জীবনে পদক্ষেপ নিতে পারি।

“ভুক্তভোগীদের কথা শুনে এবং তাদেরকে বিশ্বাস করে আমরা তাদেরকে সহায়তা করতে পারি। পুরুষ ও ছেলেদেরকে শেখাতে পারি, যেন তারা নারী ও মেয়েদের সহযোগিতা করে এবং তাদের প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে রুখে দাড়ায়।”

কেবল সমন্বিত পদক্ষেপের মাধ্যমেই নারী ও মেয়ে শিশুর প্রতি সহিংসতা চিরতরে নির্মূল সম্ভব- এই উপলব্ধি থেকেই নারীর প্রতি সহিংসতা রোধের উদ্যোগে সম্পৃক্ত হয়েছেন বলে জানান নয় নারী রাষ্ট্রদূত।