খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৫: সাম্রাজ্যবাদের করাল গ্রাসে তৈরি হয়েছে লক্ষ শরণার্থী। যারা হারিয়েছে তাদের পরিচয়। তেমনি একজন সিরিয়ান শরণার্থী আলী আলসো। হারিয়েছেন তার পরিবারকে।
বৃহস্পতিবার শরণার্থী বোটে তিনি তার স্ত্রী ও সাত সন্তানকে হারিয়েছেন। তিনি বলেন, আর কেউ যেন মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে সাগর পাড়ি না দেয়। তিনি সতর্ক করে বলেন ‘তুমি তোমার পরিবারকে হারাতে পার’ ?
তাদের বাড়ি দিয়ার ইজ জোর ইসলামিক স্টেটের জঙ্গীরা দখল করে নেয়ায় তিনি তার পরিবারসহ ইউরোপে আশ্রয় খোঁজার চেষ্টা করেন। তার স্ত্রী, সাত সন্তান ও বোনকে নিরাপদে গ্রীসে পৌঁছে দেয়ার জন্য পাচারকারীদের হাতে সাত হাজার ডলার দিয়ে ছোট্ট কাঠের নৌকায় তুলে দেন। তরা বলে ১৫ মিনিটের মধ্যে তার পরিবারকে পৌঁছে দিবে। কিন্তু সময় শেষ হবার আগেই সাগরে প্রচন্ড ঝড়ে নৌকার ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে নৌকা উল্টে যায়। তার পরিবারের সবাই সাগরে ডুবে মারা যায়।
তিনি এবং তার বোন তার চার সন্তানের লাশ শনাক্ত করেছে বাকিরা নিখোঁজ ।
মি: আলসো বিবিসি রেডিও তে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন,‘আমি হত্যাকান্ড থেকে আমার প্রিয় স্ত্রী ও সন্তান কে বাচাঁতে সিরিয়া থেকে পালিয়ে এসেছিলাম। ইউরোপে আমার সন্তানদের জন্য উজ্জল ভবিষ্যৎ এর আশা করেছি। কিন্তু এখন আমি আমার পরিবার কে হারিয়েছি। যারা আমার পৃথীবি ছিল।
হাজারো শরণার্থী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে আসতে চায় । তিনি তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি বারবার বলছি তোমরা সাগর পাড়ি দেবার ঝুঁকি নিওনা, তুমি তোমার পরিবারকে হারাতে পার।
তিনি পাচারকারীদের সম্পর্কে বলেন,‘তারা বিশ্বাসঘাতক হয়’ তারা বলে ১৫ মিনিটের মধ্যে গ্রীস পৌছে দিবে, ভুলে ও তাদের ফাঁদে পা দিওনা, সিরিয়া যতই বিপজ্জনক হোক না কেন সিরিয়াতে থাক।
ভূমধ্যসাগর থেকে ইউরোপে যাবার পথে এ পর্যন্ত আফগানিস্তান, মধ্যপ্রাচ্য, পাকিস্তান এবং দক্ষিণ আফ্রিকার আট লাখ মানুষ চোরাচালানকারীদের খপ্পরে পড়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে ৩ হাজার মানুষ সাগর পাড়ি দিতে গিয়ে ডুবে মরেছে। সারা বিশ্ব তিন বছরের শিশু আয়লান আল কূর্দির লাশ দেখে কেপেঁ উঠেিেছল। তার লাশ তুরস্ক সাগর পাড়ে ভেসে উঠতে দেখা যায় ।
ইংল্যান্ড ২০২০ সালের মধ্যে বিশ হাজার সিরিয়ান শরণার্থী নিতে রাজি হয়েছে এবং শরণার্থীদের জন্য এক বিলিয়ন ডলার ত্রাণ সহায়তা দিয়েছে।
-ইভনিং স্ট্যান্ডার্ড