খোলা বাজার২৪,রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৫: সাবেক মার্কিন সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি ১৯৭১ সালে ভারতে বাঙালি শরণার্থীদের ত্রাণ শিবির পরিদর্শন শেষে খুবই মর্মাহত হন।
১৯৭১ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে পাকিস্তানী দখলদার বাহিনীর গণহত্যাকে তিনি ‘সারা বিশ্বের জন্য ট্রাজেডি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
তিনি বলেছেন, এটা শুধুমাত্র পাকিস্তানের জন্য পূর্ববাংলার ট্রাজেডি নয়, এটা ভারতের জন্যও শুধুমাত্র একটি ট্রাজেডি নয়, এটা সমগ্র বিশ্ব সম্প্রদায়ের জন্য একটি ট্রাজেডি এবং এই সঙ্কট নিরসনের জন্য একসাথে কাজ করাটা বিশ্ব সম্প্রদায়ের দায়িত্ব ছিল।
১৯৭১ সালের অক্টোবরে মাদার তেরেসাসহ ৬০ জন পুরুষ ও নারীর বিবরণ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটরের বক্তব্য সম্বলিত মার্কিন ভিত্তিক ত্রাণ প্রতিষ্ঠান অক্সফাম ‘দ্যা টেস্টিমনি অফ সিক্সটি’ শীর্ষক একটি প্রকাশনা বের করেছিল, প্রকাশনাটি তখন সারা বিশ্বের মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
এই প্রকাশনা জন্য আর্ন্তজাতিক সাংবাদিকদের মধ্যে আরো যারা বিশেষভাবে বক্তব্য দিয়েছিলেন তারা হচ্ছেÑ আইটিএন’র মাইকেল ব্রনসন, ডেইলি টেলিগ্রাফ’র কেয়ার হোলিংওর্থ, রেডিও স্যুইস’র ক্লদ মোসি, টরেন্টো টেলিগ্রাফ’র ফ্রেডেরিক নোস্সাল্ল, ডেইলি মিরর’র জন পিলগার ও সানডে টাইমস্’র নিকোলাস তোমালিন এবং এছাড়াও ব্রিটিশ, ইউরোপীয়, নর্থ আমেরিকান, ভারতীয় সংস্থার ত্রাণকর্মীগণ।
অক্সফাম’র সংস্করণে অন্তর্ভূক্ত একজন কানাডিয়ান সাংবাদিক স্ট্যানলি বার্ক একটি প্রতিবেদনে বলেছেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় লুসিতানিয়া ঢুবে যাওয়া কয়েক শত মানুষের প্রাণহানির তুলনায় এটি ছিল আরো ভয়াবহ।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিরোশিমায় বোমার আঘাতে ১৫০,০০০ প্রাণহানীতে মানুষ মর্মাহত হয়েছিল। আজ সারা বিশ্বের এই ট্রাজেডিতে (পূর্ববাংলায় ১৯৭১ সালে ট্রাজেডি) লক্ষ-লক্ষ প্রাণহানী হচ্ছে।
১৯৭১ সালের ট্রাজেডি নিয়ে অক্সফাম’র ‘দ্যা টেস্টিমনি অফ সিক্সটি’ শীর্ষক প্রকাশনায় জেরাল্ড স্কার্ফ’র চারটি ফটোগ্রাফ সম্বলিত বিবরণ রয়েছে।
১৯৭১ সালের সাক্ষী হিসেবে জেরাল্ড স্কাফর্কে একটি লেখা পাঠাতে অনুরোধ করা হলে তিনি সেই চারটি ফটোগ্রাফ পাঠিয়ে বলেছিলেন ‘আমি শুধু একজন কথার মানুষ নই’।
অক্সফাম পরিচালক লেসলি বলেন, যুদ্ধের ভয়াহতার সত্যি ঘটনা সম্পর্কে সম্ভবত বিশ্বের মানুষ জানে না, আমরা তা জানালেও মনে হয় তারা তা ধারণাও করতে পারবে না।
সুইডেন ও নিউজিল্যান্ডের জনসংখ্যার সমান সংখ্যক লোক ইতিমধ্যে একসঙ্গে তাদের স্বদেশ থেকে পালিয়ে গেছে। এখনো আরো লক্ষ-লক্ষ মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি।