Sun. May 4th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

32খোলা বাজার২৪,রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৫: ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে শনিবার বহুল কাক্সিক্ষত জলবায়ু চুক্তি বিষয়ে একমত হয়েছেন বিশ্বনেতারা। চুক্তিটিকে পৃথিবী রক্ষার ‘সবচেয়ে ভাল সুযোগ’ বলে অভিহিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। কার্বন নির্গমনে পৃথিবীর শীর্ষ দেশ চীনও এ চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে।

২০২০ সাল থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এ চুক্তিতে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম রাখতে একমত হয়েছেন শীর্ষ কার্বন নির্গমনকারী দেশগুলোর প্রতিনিধিরা। দীর্ঘদিন ধরে এমন একটি চুক্তি সম্পাদনের লক্ষ্যে বিশ্বনেতারা চেষ্টা করে আসছিলেন। অবশেষে দুই সপ্তাহ ধরে প্যারিসে আলোচনা-সমঝোতার পর ১৯৫টি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং প্রতিনিধিরা এতে একমত হন।

জলবায়ু চুক্তিকে ‘উচ্চাকাক্ষী’ হিসেবে বর্ণনা করে ওবামা বলেন, ‘পৃথিবী এক হলে কী করা সম্ভব একসঙ্গে আমরা সেটাই প্রমাণ করেছি। সক্ষেপে বলতে গেলে, চুক্তিটির অর্থ হচ্ছে আমাদের গ্রহের হুমকি কার্বন নির্গমন কমানো এবং কম কার্বন নির্গমন ভিত্তিক বিনিয়োগের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়ন।’ তবে চুক্তিটি ‘নিখুঁত নয়’ বলেও স্বীকার করেছেন তিনি।

এ বিষয়ে একমত প্যারিস সমঝোতায় অংশ নেওয়া চীনা প্রতিনিধি শি জেনহুয়া। চুক্তিটি ‘আদর্শ নয়’ মন্তব্য করলেও চুক্তিটি সামনের দিনগুলোতে জলবায়ু বিষয়ে ‘ঐতিহাসিক পদক্ষেপের দিকে পৃথিবীকে এগিয়ে যেতে বাধা দিবে না’ বলে মনে করেন চীনের প্রধান এই সমঝোতাকারী।

জলবায়ু চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে প্যারিসে সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলোর প্রতিনিধি গ্রুপের চেয়ারম্যান গিজা গাসপাম মার্টিন বলেছেন, ‘আমরা যা আশা করেছিলাম তার মধ্যে সবচেয়ে ভাল চুক্তি এটি।’

তবে জলবায়ু পরিবর্তনের হাত থেকে পৃথিবীকে রক্ষায় প্যারিস চুক্তি যথেষ্ট নয় বলে দাবি করছেন পরিবেশবাদীরা।

প্যারিস চুক্তির সব অংশ মানা বাধ্যতামূলক না হওয়াই এর সবচেয়ে দুর্বল অংশ বলে বনে করা হচ্ছে। কার্বন নির্গমন লক্ষ্যমাত্রা জমা দেওয়া ও নিয়মিত সেটি পূনর্মূল্যায়নের মতো বিষয়াদি বাধ্যতামূলক হলেও কোন দেশ কী পরিমাণ লক্ষ্য নির্ধারণ করবে সে বিষয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই এ চুক্তিতে।

জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কার্যকর ভূমিকা নেওয়ার পক্ষে প্রচারণাকারী গ্লোবাল জাস্টিস নাউ এর পরিচালক নিক ডিয়ারডেন চুক্তি স্বাক্ষরের পর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘প্যারিসের চুক্তিটি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর অধিকারের অবমূল্যায়ন করবে। চুক্তিটিতে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য জলবায়ু রক্ষায় কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। এরপরও একে সফলতা হিসেবে বর্ণনা করা আসলেই অবমাননাকর।’

প্যারিসের খসড়া ওই চুক্তি অনুসারে ২০২০ সাল থেকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় উন্নত দেশগুলোকে ১০০ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দিতে হবে। গত ৩০ নভেম্বর জাতিসংঘের উদ্যোগে শুরু হওয়া ১৯৫ জাতির এ সম্মেলন শেষ হওয়ার কথা ছিল শুক্রবার। সম্মেলনের নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর ব্যাপক আলোচনার মাধ্যমে শনিবার চুক্তির খসড়া চুক্তিটি চূড়ান্ত হয়।