খোলা বাজার২৪, সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৫: আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে আগামীকাল থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় যাচ্ছে পৌরসভা নির্বাচনের চুড়ান্ত প্রার্থীরা। তবে আনুষ্ঠানিক প্রচারণার প্রথম দিন পড়েছে বুদ্ধিজীবি দিবসে। বিজয় দিবস ও বৃদ্ধিজীবী দিবসে অনুষ্ঠানে যেতে মন্ত্রী-এমপিকে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশন থেকে।
রোববার শহীদ বুদ্ধিজীবী ও বিজয় দিবসে যাতে কোনো প্রার্থী এবং সরকারি সুবিধাভোগী ব্যক্তিরা বিধিলঙ্ঘন না করে সে বিষয়ে নির্দেশনা দিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন(ইসি)।এ সংক্রান্ত নির্দেশনা ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে দেওয়া হবে বলে ইসি সূত্রে জানা যায়।
এ বিষয়ে ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, প্রার্থীরা প্রতীক ছাড়া ৯ ডিসেম্বর থেকে জনসংযোগ-পথসভা শুরু করেছে। তবে সোমবার সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেবে। এরপরই প্রার্থীরাপ্রতীক নিয়ে প্রচারণা চালাতে পারবেন।
নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলগুলোর কাছে, সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের বিষয়ে সংসদ সচিবালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি দেওয়া হয়েছে। প্রার্থী ও ভোটাররা আচরণবিধি যেনো অনুসরণ করে সে ব্যবস্থা নিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে। তিন সাংসদ আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় শোকজ করা হয়েছে, তারা জবাবও দিয়েছেন। আগামীতেও সবাই যথাযথভাবে পালন করবে এমন প্রত্যাশা সবার বলে জানান ইসি সচিব
এ বিষয়ে ইসির নির্বাচন ব্যবস্থপানা ও পরিচালনা শাখার উপ সচিব শামসুল আলম বলেন, আগামীকাল স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। প্রতীক পাওয়ার পরপরেই তারা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন চালাতে পারবেন। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক দল মনোনিত প্রার্থীরাও তাদের নিজ দলের প্রতীক নিয়ে প্রচারণায় নামতে পারবেন।
তবে নির্বাচন বিধি অনুসারে, ভোট গ্রহণের ৩২ ঘন্টা আগে প্রার্থীদের সকল ধরনের নির্বাচনী প্রচারণা বন্ধ করতে হবে।অর্থাৎ প্রার্থীদের ২৯ ডিসেম্বর প্রথম প্রহরের আগেই সকল প্রচারণা বন্ধ করতে হবে বলে জানান তিনি।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, আচরণবিধি অনুসারে পোস্টার ছাপানো, টানিয়ে রাখা, বাড়ি বাড়ি গিয়ে অথবা ঘরোয়া ও পথসভার মাধ্যমে জনসংযোগ, ডিজিটাল বোর্ড বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে প্রচারণা করার সুযোগ পাবে প্রার্থীরা।
পোস্টারে প্রার্থী ও প্রতীক সাদা কালো রঙের, দলীয় প্রার্থীরা সঙ্গে দলীয় প্রধানের ছবি রাখার সুযোগ রয়েছে এবং নির্ধারিত সাইজে প্রতীক তৈরি করে প্রচারণা করতে পারবে; যার ব্যয় বিবরণীয় ইসি ও রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দিতে হবে হবে বলে জানান তারা।
বিজয় দিবসের প্রচারণার সর্তকতা নিয়ে ইসির উপ সচিব সামসুল আলম বলেন, ফরিদপুর-১ আসনের সাংসদ আব্দুর রহমান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে নির্বাচনী এলাকায় যাবেন। বিষয়টি ইসিকে অবহিত করা হয়েছে।
তবে এমন অনুষ্ঠানে গেলেও প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা না করার জন্য রিটার্নিং অফিসারকে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। সেই সঙ্গে প্রার্থীদেরও বিজয় দিবসের কর্মসূচিতে প্রচারণা থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেন, রাষ্ট্রীয় কোনো কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া যাবে না। তবে নির্বাচনী এলাকায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে মন্ত্রী-এমপিকে যেতে হলে ইসিকে জানাতে হবে। তাতে আমরা বাধা দেব না। যদি না জানিয়ে যান তাতে বিধি লঙ্ঘন হবে।
এদিকে দুপুরে আচরণবিধি লঙ্ঘন হলেই রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইসির সুপারিশ বা সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বসে থাকার সুযোগ নেই বলে জানান নির্বাচন কমিশনার জাবেদ আলী।
এবার ২৩৪ পৌরসভায় ১৯টি দল মেয়র পদে প্রার্থী দিয়েছে। এরমধ্যে আওয়ামী লীগের নৌকা অন্তত ২৩১ জন, বিএনপির ধানের শীষ অন্তত ২২৪ ও জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকে ৮৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে পারেন।
ইসির সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, যাছাই-বাছাইয়ের আগ পযন্ত ১২ হাজার ৭২৮ জন প্রার্থীকে বৈধ ঘোষনা করেছে ইসি। এর মধ্যে মেয়র ১০৫৬ জন, সংরক্ষিত আসনে কাউন্সিলর ২ হাজার ৫১৩ জন ও সাধারণ আসনে ৯ হাজার ৯১৫৯ জন।
এর মধ্যে মেয়র পদে দলীয়ভাবে ৬৭১ জন ও স্বতন্ত্র ৩৮৫ জন প্রার্থীরা মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।