খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫: বাংলাদেশ সফরে বিভিন্ন অংশীদারের সঙ্গে বৈঠকে এ মাসে অনুষ্ঠেয় পৌরসভা নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রসচিব (মনোনীত) টম শ্যানন।
জানা গেছে, বিভিন্ন পর্যায়ের আলোচনায় শ্যানন বলেছেন, গণতন্ত্র বিকাশের পথ উন্মুক্ত রাখতে প্রতিটি সুযোগই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্য সব গণতান্ত্রিক দেশে ‘উন্মুক্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক’ ব্যবস্থা সৃষ্টির জন্য যুক্তরাষ্ট্র আহ্বান জানিয়ে যাবে।
শ্যানন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা যখন অন্য দেশগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে ও আলোচনা করে তখন তাঁরা অন্যদের করণীয় বিষয়ে পরামর্শ দেন না। তাঁরা যা করেন, তা তাঁদের অভিজ্ঞতার আলোকেই করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে শ্যানন মনোনয়ন পেলেও তা এখনো সিনেটের ছাড়পত্র পাওয়ার অপেক্ষায় আছে। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কাজ করছেন যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সিলর হিসেবে। বাংলাদেশের সঙ্গে পরিচিত হতে গত রবি ও সোমবার পররাষ্ট্রসচিব (মনোনীত) হিসেবে শ্যাননের ঢাকা সফরটি ছিল এ দেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বের বহিঃপ্রকাশ। তাঁর সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিশা দেশাই বিসওয়াল ও ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মনপ্রীত সিং আনন্দ।
প্রথমবারের মতো ঢাকা সফরে এসে রাষ্ট্রদূত শ্যানন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীসহ জ্যেষ্ঠ সরকারি ও সংসদীয় নেতার পাশাপাশি বিরোধী দল, গণমাধ্যম, নাগরিক সমাজ ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। শ্যানন সাক্ষাৎকালে জলবায়ু পরিবর্তন, উন্নয়ন ও নারীর ক্ষমতায়ন ইস্যুতে বৈশ্বিক নেতৃত্বের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ গুরুত্ব দেয়। তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং এ দেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের সমর্থনের কথাও প্রধানমন্ত্রীকে জানান। জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে বৈঠকে শ্যানন সক্রিয় ও শক্তিশালী গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে বিরোধী দলের ভূমিকা পালনে তাঁর প্রতি সমর্থন জানান।
বিএনপি চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ মাসে অনুষ্ঠেয় পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেন। শ্যানন এ সফরে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির অর্থায়নে পরিচালিত স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র পরিদর্শন ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ আয়োজিত সেমিনারে ‘যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্ক : বৈশ্বিক ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করা’ শীর্ষক বক্তব্য দেন।
তিনি দুই দেশের নিরাপত্তা, বাণিজ্য, উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়ন ও সহিংস উগ্রবাদ মোকাবিলায় বিদ্যমান সহযোগিতা পর্যালোচনা করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন, যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অংশীদারি ও একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ দিন দিন বাড়বে। যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানায়, ‘শিগগিরই মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার পথে থাকা বাংলাদেশের উন্নয়ন সাফল্য এবং অগ্রগতিতে রাষ্ট্রদূত শ্যানন অভিভূত।’ বাংলাদেশ সফর শেষে টম শ্যানন গতকালই ঢাকা ছেড়েছেন।