খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫: আবারো শিরোপা উঠছে মাশরাফির হাতে নাকি এবার নতুন নায়ক মাহমুদউল্লাহর? বিপিএলের তৃতীয় আসরের শেষ দৃশ্যপট নিয়ে এখন এ আলোচনা। কেউ এগিয়ে রাখছেন বরিশাল বুলসকে। কেউবা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে। তবে শেষ দৃশ্যের জন্য অপেক্ষা করতে হবে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত।
মিরপুর শেরেবাংলায় অনুষ্ঠিত হবে এ শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ। যে দুইটি দল ফাইনালে আজ লড়ছে তাদের যোগ্যতা নিয়ে আর কারো মনে কোনো সংশয় নেই। শর্টার ভার্সনের এ লিগে সেরা নৈপুণ্য প্রদর্শনকারীরাই উঠেছে ফাইনালে- এটা গতানুগতিক কথাও। তবে তারকা নয়, মাঠে প্রয়োজন রয়েছে পারফরম্যান্সও। সেটাতে দু’টি দলই এবার শ্রেষ্ঠত্ব দেখিয়েছে। কুমিল্লা যেমন পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে প্রথম কোয়ালিফাইং ম্যাচে জিতেই উঠে গেছে ফাইনালে। তেমনি টেবিলের একটু নিচে থেকে বরিশাল বুলসও দুর্দান্ত পারফর্ম করেই শিরোপার দাবিদার হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে।
প্রথম সেমিতে কুমিল্লা সাকিবের রংপুর রাইডার্সকে হারিয়ে উঠে গিয়েছিল ফাইনালে। আর বরিশাল শেষ চারের লড়াইয়ে প্রথম ঢাকা ডায়নামাইটসকে হারিয়ে দ্বিতীয় সেমিতে ওঠে। এরপর আবার হারায় তারা রংপুর রাইডার্সকে। বিশেষ করে রংপুরের বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচে বরিশাল প্রমাণও করে দিয়েছে, শুধু বিদেশী ক্রিকেটার নয় দেশী ক্রিকেটাররাও কিছু করার ক্ষমতা রাখেন। বিশেষ করে ইনজুরিতে পড়া ক্যারিবিয়ান তারকা ক্রিস গেইল না খেলাতে বরিশালকে নিয়ে আগাম অনেক মন্তব্য ছিল।
প্রথমে ব্যাটিং করে রংপুর ১৬০ রান করার পর বরিশালের বড় পরাজয়ও দেখছিলেন অনেকেই। কিন্তু সাব্বির রহমান রুম্মন ও শাহরিয়ার নাফিসরা সেগুলো শুধু ভুলই প্রমাণ করেননি, দেশী ক্রিকেটারদেরও মর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছেন অনেক। ফাইনালেও স্থানীয়দের পারফরম্যান্স অব্যাহতই থাকবে। কারণ কুমিল্লাকেও ফাইনাল পর্যন্ত টেনে নেয়ার কৃতিত্ব মাশরাফির। কখনো ব্যাট হাতে, কখনো বোলিং বা কখনো ক্যাপ্টেনসি দিয়ে।
এক কথায় অলরাউন্ড নৈপুণ্য প্রদর্শন করে এখনো জাতীয় দলে মাশরাফি যে অপরিহার্য সেটার প্রমাণ দিলেন তিনি আরেকবার। তা ছাড়া মাশরাফি এ নিয়ে তিনবারই খেলছেন বিপিএলের ফাইনালে। এবং তিনবারই তিনি অধিনায়ক। প্রথম দুইবার ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস ও এবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে। বরিশালের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহর দলে রয়েছেন রনি তালুকদার, লঙ্কান প্রসন্ন, ড্যাশিং সাব্বির, শাহরিয়ার নাফিস, ওয়েস্ট ইন্ডিজের এমরিত, কেভন কুপার, মোহাম্মাদ সামি, আল আমিন প্রমুখ।
বিশেষ করে দলের ক্রিকেটারদের বোঝাপড়া দারুণ। দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন দুই ক্যারিবিয়ানও। ফলে সম্ভাবনা তাদের এবার শিরোপার। অন্য দিকে মাশরাফি যে দলে সেখানে কিছুটা অ্যাডভান্টেজ এমনিতেই। এতটা অ্যাটাকিং ও বুদ্ধিমত্তার সাথে দল পরিচালনা করেন সেটা এক কথায় অসাধারণ এবং অতুলনীয়।
দলে রয়েছেন আহমেদ শেহজাদ, ইমরুল কায়েস, লিটন দাস, আন্দ্রে রাসেল, আজহার জায়েদি, অলক কাপালী, শুভাগত হোম, আবু হায়দার ও নুয়ান কুলাসেকেরা প্রমুখ। দলটির পেস অ্যাটাক দারুণ। সাথে স্পিন ও ব্যাটসম্যানদেরও দায়িত্বশীল পারফরম্যান্স করতে দেখা গেছে। শিরোপার আশা তাদেরও।
এ দিকে দুই দলই শিরোপা জয়ের আশা প্রকাশ করেছেন। মাশরাফি তার দলে শৃঙ্খলাটাকে প্রধান্য দিচ্ছেন যেমন বুলসের শাহরিয়ার নাফিসও পর পর দুই ম্যাচে জয়টাকে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাওয়া হিসেবে দেখছেন ফাইনালে। এটাই কাজে লাগাতে চান আজ তারা। তবে শিরোপা যে-ই পাক না কেন, রোমাঞ্চকর এক ম্যাচ হোক ফাইনাল, সে প্রত্যাশা আজ দর্শকদেরও।