খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫: মোশাররফ বাবলু : মধ্যবর্তী নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী এবং ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেন, দেশে শক্তিশালী এমন কোনো বিরোধী দল নেই যে তারা আন্দোলন করে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করবে। বিএনপি যদি এমন কোনো পরিবেশ নিয়ে আসতে পারতো তাহলে হয়তো নির্বাচনের কথা ভাবা যেতো। যার কারণে ২০১৯ সালের আগে নির্বাচনের সুযোগ দেখছি না।
মঙ্গলবার সকালে ‘দৈনিক আমাদের অর্থনীতি’ কার্যালয় পরিদর্শন ও সাংবাদিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রনালয়ের বিভিন্ন উন্নয়নের দিক নিয়ে কথা বলেন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। দেশে মধ্যবর্তী নির্বাচনের সুযোগ আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আমিতো মধ্যবর্তী নির্বাচনের সুযোগ দেখছি না। কেনই বা মধ্যবর্তী নির্বাচন করতে হবে এর কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাই না। কারণ দেশেতো এমন কোনো বিরোধী দল নেই যে তারা আন্দোলন করবে। বিএনপি যদি এমন একটা পরিবেশ নিয়ে আসতে পারতো, তাহলে হয়তো এটা ভাবা যেতো।
এরশাদ সরকারের সময়ের আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, অতীতে আমাদের অভিজ্ঞতা হয়েছে। সকল রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ ছিলো এরশাদ সরকার বিরোধী আন্দোলনে। সেখানেও আমরা দেখেছি সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়েও নির্বাচন আনতে অনেক সময় লেগেছে। নির্বাচন আনা একটি কঠিন কাজ। এই জায়গাটায় আমিতো মনে করি ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই সরকার থাকবে। বিরোধী দল হিসাবে যদি দেশে শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকে, তাহলে একটা সমস্যা দাঁড়ায় এবং দাঁড়াবে। এক ধরনের প্রবণতামুলক সৃষ্টি হয়। তবে আমাদের একটা সুবিধা হচ্ছে যে বাংলাদেশের মানুষ এতবেশি গণতন্ত্র প্রিয় তাতে আমাদের সবার একটি ‘ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের’ ঐতিহ্য আছে। যে কারণে বাংলাদেশে শক্ত বিরোধী দল নেই। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন মহল নির্বাচনের কথা বললেও পরিবেশ নেই। সুযোগও সৃষ্টি হয়নি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, জিএসপি’র সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই।
জামায়াত নিষিদ্ধ হওয়া সময় সাপেক্ষ: মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, জামায়াত নিষিদ্ধকরণ যে আইন করা হয়েছে তা প্রস্তুত। সময়টাই হচ্ছে মুল বিষয়। এখন সরকারের মুল লক্ষ্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার আগে শেষ করা। এই সময় নতুন আরেকটি বিষয় নিয়ে এগুতে হচ্ছে। এমনিতেই আমরা চাপের মধ্যে আছি। তিনি আরও বলেন, জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসির সময় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিসহ বিভিন্ন জনের ফোন এসেছে। হিউম্যান রাইট ওয়াচ নিয়মিত বিবিৃতি দিয়েছে। এ অবস্থায় জামায়াত নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে একটু সময় লাগবে।
জাতীয় ঐক্য ও সংলাপ কার সঙ্গে সংলাপ হবে : মন্ত্রী মেনন বলেন, জাতীয় ঐক্যতো আমিও চাই। কিন্তু জাতীয় ঐক্য কার সঙ্গে করব। আমাদেরতো একটা বেসিক জায়গা তৈরি করতে হবে। আমাদের দেশে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছিল। তিনি বলেন, জামায়াতকে কোলে তুলে বিএনপি সংলাপ চাইবে তা হতে পারে না। মন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন ছিল বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিএনপি জাতীয় ঐক্যের পাশাপাশি সংলাপ চায়। তাদের সঙ্গে সংলাপের পরিবেশ আছে কিনা। এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আপনাদের অবশ্যই স্মরণ আছে যে আমরা ১৫ দল ও ৭ দল যুগপৎ আন্দোলন করেছি। আমরা তিন জোটের রূপরেখায় উপনীত হয়েছিলাম। একটি বেসিক জায়গাতো তৈরি করতে হবে। সেজন্য এক জায়গা একমতও হয়েছিলাম। তারা ছিল প্রেসিডেয়াম পদ্ধতিতে আমরা ছিলাম সংসদীয় গণতন্ত্রের মাধ্যমে। সবাই মিলে ‘সার্বভৌম সংসদ’ বের করলাম। একটি জায়গাতো মিলতে হবে। বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, জামায়াতকে কোলে তুলে বিএনপি সংলাপ চাইবে তা হতে পারে না। কি নিয়ে সংলাপ করবে তারা।