খোলা বাজার২৪,বুধবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৫: তুর্কমেনিস্তান-আফগানিস্তান-পাকিস্তান-ভারত (টাপি) গ্যাস পাইপলাইনে যুক্ত হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।
পাকিস্তানের ফেডারেল পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক সম্পদ বিষয়ক মন্ত্রী শাহিদ খাকান আব্বাসি বিষয়টি জানিয়েছেন। এক্সপ্রেস ট্রিবিউন
এই পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি সঙ্কটে থাকা দেশগুলোতে প্রতিদিন ৩২০ কোটি ঘন ফুট গ্যাস সরবরাহ দেবে ৫৫ লাখ জনসংখ্যার মধ্য এশিয়ার দেশ তুর্কমেনিস্তান। দেশটিতে রয়েছে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম প্রমাণিত গ্যাসের মজুদ।
১০০০ কোটি ডলার ব্যয়সাপেক্ষ ১৮১৪ কিমি দীর্ঘ এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। আব্বাসি মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন- এ প্রকল্পের একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হলো চুক্তি সম্পাদন করা। ১৯৯০ সাল থেকে এ চুক্তি নিয়ে গড়িমসি করা হচ্ছিল। অবশেষে গত আড়াই বছর ধরে অংশীদার দেশগুলো তা বাস্তবায়নে কঠোর পরিশ্রম করেছে।
তিনি আরো জানান, প্রকল্প হাতে নিতে সব অংশীদার ছিলো উদগ্রীব। তবে এক্ষেত্রে গুরুত্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে। এখন প্রকল্পে সবচেয়ে বড় অর্থদাতা হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তুর্কমেনিস্তান।
এক প্রশ্নের জবাবে আব্বাসি বলেছেন, এ প্রকল্পের পাকিস্তান অংশের কাজ শুরু হতে পারে ২০১৭ সালে। আফগানিস্তান সীমান্তে গ্যাসের দাম হবে অশোধিত ব্রেন্টের দামের শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ। পাইপলাইনের টোল ফি যুক্ত হয়ে প্রতি মিলিয়ন ব্রটিশ থার্মাল ইউনিট গ্যাসের দাম দাঁড়াতে পারে ৫.৭ থেকে ৬.২ ডলার।
আব্বাসি বলেন, টাপি প্রকল্পে গ্যাস ক্ষেত্রগুলোর উন্নয়ন ও ১৬৮০ কিলোমিটার গ্যাস পাইপলাইন মেরামতে তুর্কমেনিস্তান বিনিয়োগ করবে ২৫০ কোটি ডলার। অন্য অংশীদার দেশগুলো পাইপ লাইন নির্মাণে শতকরা ৫ ভাগ অর্থ দেবে। টাপি পাইপলাইন কোম্পানি লিমিটেড তুর্কমেনিস্তানের গিলকিনিশ ও পার্শ্ববর্তী অন্য গ্যাস ক্ষেত্র সংযুক্ত করতে ৫৬ ইঞ্চি ব্যাসের পাইপ লাইন বসাবে। এ দায়িত্ব তাদের।
এ পাইপ লাইন হেরাত, কান্দাহার, চামন, ঝোব, ডিজি খান, মুলতানের মধ্য দিয়ে পাকিস্তান-ভারত সীমান্তে পৌঁছাবে। এই কোম্পানির পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছে পাকিস্তান।
ভারত ও আফগানিস্তানের মতো পাকিস্তানও এ প্রকল্পে শতকরা ৫ ভাগ অর্থ দিচ্ছে। প্রকল্প শেষ হলে প্রতিদিন আফগানিস্তান মোট ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস পাবে।
পাকিস্তান ও ভারত প্রত্যেকে প্রতিদিন পাবে ১৩২ কোটি ৫০ লাখ ঘনফুট গ্যাস। তবে যদি আফগানিস্তান তার ভাগের গ্যাস বিক্রি করতে চায় তাহলে সেই গ্যাস কিনতে পারবে ভারত বা পাকিস্তান।
আব্বাসি বলেন, এই গ্যাসের দাম হবে সর্বনিম্ন। এ প্রকল্পের অংশ হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। তবে এ বিষয়টি দেখবে দিল্লি ও কাবুল।
বলা হয়, টাপি প্রকল্পের যেসব দেশ অংশীদার হবে তাদের অংশের পাইপলাইনের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট দেশকে নিশ্চিত করতে হবে। ওদিকে পাকিস্তানের ভিতর দিয়ে গ্যাসপাইপ লাইন নেয়ার কারণে ভারতের কাছ থেকে পাকিস্তান ট্রানজিট ফি বাবদ পাবে ২৫ কোটি ডলার। আবার পাকিস্তানের কাছ থেকে একই পরিমাণ অর্থ পাবে আফগানিস্তান।