খোলা বাজার২৪,বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫: ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজ দলে তুলোধুনো হচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির এই মনোনয়নপ্রত্যাশীর কর্মকাণ্ডে দলের অনেকেই আতঙ্কিত। ট্রাম্প দলের ক্ষতি করছেন বলেও বলা হচ্ছে।
এমন প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে ট্রাম্প কি দুমুখো গুপ্তচর? রিপাবলিকান দলকে ধ্বংস করার জন্যই কি তাঁকে পাঠানো হয়েছে? তিনি কি তবে ডেমোক্র্যাটদের তুরুপের তাস (ট্রাম্পকার্ড) ?
রিপাবলিকান দলের আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী ও ফ্লোরিডার সাবেক গভর্নর জেব বুশের ভাবনা, তেমনটা হতেও পারে।
জেব বুশ বলেছেন, ট্রাম্প তাঁর বন্ধু ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনয়নপ্রত্যাশী হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে একটা সমঝোতা করে থাকতেও পারেন। হিলারি এই হিসাব কষে থাকতে পারেন—এভাবেই হয়তো হোয়াইট হাউসে যেতে পারবেন তিনি।
ট্রাম্পের রাজনৈতিক ইতিহাস খুব একটা ভালো নয়। তিনি যা করছেন, যা বলছেন, তাতে দলই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে কারও কারও অভিমত।
ট্রাম্পের বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য সম্পর্কে রিপাবলিকান সিনেটর মিচ ম্যাককনেল বলেছেন, দেশের মানুষকে বিভক্ত করা ঠিক নয়।
কংগ্রেসের রিপাবলিকান স্পিকার পল রায়ান বলেছেন, ট্রাম্পের বক্তব্য দলের নীতিবিরোধী।
অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দলের জয়ের সম্ভাবনা কঠিন করে দিচ্ছেন ট্রাম্প। আর সম্ভবত উদ্দেশ্যমূলকভাবেই এসব করছেন তিনি।
ফ্লোরিডার রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান কার্লোস কারবেলোর ভাষ্য, রাজনৈতিক সার্কাস সৃষ্টির জন্যই ট্রাম্পকে নিয়োগ করেছে বামরা।
বিল ক্লিনটন ও হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের অভিযোগ এনেছেন কোনো কোনো রিপাবলিকান। তাঁরা বলছেন, ট্রাম্পের সবশেষ বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন ক্লিনটন দম্পতি। ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে সহায়তাও দিয়েছেন তিনি। হিলারির সিনেট নির্বাচনের প্রচারে ট্রাম্পের ভূমিকা ছিল। এসব বিষয় খুবই সন্দেহজনক।
কিছু রক্ষণশীল মনে করেন, ট্রাম্প যতবার বিতর্কিত কথাবার্তা বলেন, ততবারই হিলারি লাভবান হন।
রক্ষণশীল ভাষ্যকার ব্রায়ান ক্যাটেসের দাবি, আমেরিকার প্রতি গভীর ভালোবাসা, রিপাবলিকান হওয়া কিংবা রক্ষণশীলতার প্রতি দায় থেকে নির্বাচনী লড়াইয়ে নামেননি ট্রাম্প। বিল ক্লিনটন অনুরোধ করেছেন বলে ট্রাম্প এই লড়াইয়ে নেমেছেন।
সমালোচকদের পর্যবেক্ষণ, ট্রাম্পের উল্টাপাল্টা কথায় ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টি ও দলটির মনোনয়নপ্রত্যাশী হিলারির দুর্বলতা, সমালোচনা চাপা পড়ে যাচ্ছে। কারণ, সবাই ট্রাম্পকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ছে।
এমন কিছু রিপাবলিকান আছেন, যাঁরা এখন ট্রাম্পকে দলের বন্ধুর চেয়ে শত্রু হিসেবেই বেশি গণ্য করছেন।
ট্রাম্পকে নিয়ে কিছু রিপাবলিকান এখন প্রকাশ্যে যা-ই বলুক না কেন, গত প্রায় এক দশক ধরে এই দলটি খুব পরিকল্পিতভাবে সে দেশে অতি দক্ষিণপন্থী মনোভাব লালন ও চর্চা করেছে। ট্রাম্পের বক্তৃতার বিষয়বস্তুকে তারাই উৎসাহিত করেছে। তা ছাড়া এখনো রিপাবলিকানদের মধ্যে ট্রাম্প-সমর্থকদের অভাব নেই। বিবিসি অনলাইন অবলম্বনে