খোলা বাজার২৪,বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫: পৌরসভা নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকদের ভয়ভীতি দেখানো, পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা এবং মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশে এখন ‘হাসিনা মার্কা’ নির্বাচনের চল হয়েছে।
নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “দেশে হাসিনা মার্কা নির্বাচনের একটি ব্র্যান্ড তৈরি হয়েছে। সেই ব্র্যান্ডটি হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সশস্ত্র দলীয় ক্যাডারদের দিয়ে নির্বাচনী এলাকায় ভয়াল পরিবেশ তৈরি করে ভোটকেন্দ্রে যেতে আতঙ্কগ্রস্ত করে তোলা।
“ব্যালট বাক্স উধাও করে দেওয়া, ব্যালট পেপার ছিনতাই করে পুড়িয়ে ভোট তছনছ করা এবং ৪টার মধ্যে লোক দিয়ে ব্যালট বাক্স ভরে ফেলা, প্রতিপক্ষের এজেন্টদের বের করে দিয়ে কেন্দ্র দখল ও পুলিশের পক্ষপাতমূলক আচরণ ও জাল ভোট- এসব হচ্ছে হাসিনা মার্কা নির্বাচনের নিদর্শন।”
সারাদেশের দলীয় প্রার্থীদের নানা অভিযোগ তুলে ধরতে ডাকা এ সংবাদ সম্মেলনে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন রিজভী।
তিনি বলেন, “গতকাল মন্ত্রী-হুইপ-এমপিরা বিজয় র্যালিতে সরকারি দলের প্রার্থীদের নিয়ে প্রচার চালিয়েছেন এবং ভোটারদের কাছে ভোট চেয়েছেন। এটি নির্বাচনী আচরণবিধির চূড়ান্ত লঙ্ঘন। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের যে পদক্ষেপ, তা আমরা দেখছি না।
“কেবল তাই নয়, বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। আমাদের রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার তাহেরপুরে পৌরসভার মেয়র প্রার্থী শামসুর রহমান মিন্টু আমাকে জানিয়েছেন, তাকে প্রচারে বাধা দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় ক্ষমতাসীনদলের ক্যাডাররা ঘরে ঘরে গিয়ে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জের তারাব পৌরসভায় ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে প্রচার চালাতে দেওয়া হচ্ছে না। কারণ ক্ষমতাসীন দলের এমপি সাহেবের সহধর্মিনী সেখানে নির্বাচন করছেন।’’
বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘গণগ্রেপ্তারের’ মাধ্যমে নির্বাচনী পরিবেশ আতঙ্কগ্রস্ত করে তোলা হয়েছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, “অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন ডিসকাউন্ট রেটে নয়, একেবারে বিনা পয়সায় শাসকদলের অশুভ ইচ্ছার কাছে নির্বাচনী পরিবেশ বিক্রি করে দিচ্ছে।”
ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা হলফনামায় তথ্য গোপন করেছেন বলেও অভিযোগ করেন এই বিএনপি নেতা।
“ফেনীর দাগুনভূঞা পৌরসভায় ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী প্রাণ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশনে জানিয়েছেন, নৌকা মার্কার প্রার্থী তার লাইসেন্সকৃত অস্ত্রের কথা হলফনামায় উল্লেখ করেননি। ওই ব্যক্তি অস্ত্র নিয়ে কবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। অথচ হলফনামায় সেই অস্ত্রের তথ্য দেননি।”
বিএনপি নেতা আবদুল হাই, যুবদল সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আবদুল লতিফ জনি, শিরিন সুলতানা, আসাদুল করীম শাহিন, রফিক শিকদার, তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।