Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

27খোলা বাজার২৪,বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা কখনো ব্যর্থ হতে পারে না। এটা ব্যর্থ হতে দেওয়া হবে না। এ ছাড়া একাত্তরের পরাজিত শক্তির অস্তিত্ব বাংলাদেশে থাকবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বক্তব্যের শুরুতে তিনি ভারত, রাশিয়া ও মার্কিন নাগরিকসহ বাংলাদেশের বিজয়ের পক্ষে যারা কাজ করেছেন সবার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা আওয়ামী লীগের আদর্শে বিশ্বাস করেন, জাতির পিতার আদর্শে বিশ্বাস করেন; তাদের সব সময় এই প্রতিজ্ঞা করতে হবে—এই বাংলাদেশ আমরা স্বাধীন করেছি। স্বাধীনতার পতাকা যে উড্ডীয়মান, তা বিশ্বসভায় মর্যাদার সঙ্গেই উড্ডীয়মান থাকবে। এ দেশের মর্যাদা কেউ কখনো হানি করতে পারবে না। এটা আমরা হতে দেব না। শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও এই পতাকার মর্যাদা আমরা রক্ষা করব। স্বাধীনতার চেতনায় এই দেশ সারা বিশ্বে যে মর্যাদায় পেয়েছে, আরও উন্নত মর্যাদা যেন পায় তার জন্য আমরা কাজ করব। সেইভাবে আমাদের আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদা নিয়ে কাজ করতে হবে। একটি দেশ স্বাধীন করা যেমন কঠিন; স্বাধীনতা রক্ষা ও এর সুফল মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়াটা আরও কঠিন কাজ।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা মনে করলে হবে না, আজকের অর্থনৈতিক উন্নতি আমরা খুব সহজভাবে আনতে পেরেছি। পদে পদে বাধা, ষড়যন্ত্র। অনেক বন্ধুর পথ অতিক্রম করেই আজকে আমাদের এই জায়গা পৌঁছাতে হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা জানি, এই দেশকে নিয়ে অনেক খেলা, অনেক কথা। কিন্তু আমরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে দেশ চালাই। কারণ, এই দেশ আমরা স্বাধীন করেছি। এই দেশকে উন্নত করা, সমৃদ্ধ করা আমাদের কর্তব্য। স্বাধীনতা যেন কোনোভাবে ব্যর্থ না হয়‍। ২১ বছর সময় নষ্ট হয়ে গেছে। আর একটা দিনও, একটা ঘণ্টাও সময় নষ্ট করতে চাই না। বাংলাদেশের উন্নয়ন লক্ষ্যযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে চাই।’ এ জন্য তিনি দলটির নেতা-কর্মী ও সহযোগী সংগঠনসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের সেভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশকে এগিয়ে নিয়েছি। আরও এগিয়ে যেতে হবে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে। ইতিমধ্যে আমরা মধ্যম আয়ের সোপানে পা দিয়েছি। ইনশাআল্লাহ আমরা পারব। জানি বাঙালি পারে, অসাধ্য সাধন করতে পারে। একাত্তরে যেমন করেছি, সেইভাবে আমরা পারব। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বসভায় উন্নত দেশ হিসেবে মর্যাদা পাবে। নিশ্চয় উন্নত দেশ বাংলাদেশ হবে।’

স্বাধীনতাবিরোধীদের উদ্দেশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দুঃখ হয় যখন দেখি স্বাধীনতাবিরোধী ও তাদের দোসররা থাকে বাংলাদেশে আর স্বপ্ন দেখে পাকিস্তানের। তাদের পেয়ারে পাকিস্তানের কথা কখনো ভুলতেই পারে না। পেয়ারে পাকিস্তানের কথাও তাদের ভুলিয়ে ছাড়তে হবে যে এটা বাংলাদেশ। ওই পরাজিত শক্তির দালালি করলে চলবে না। পরাজিত শক্তির অস্তিত্ব এই বাংলাদেশে থাকবে না।’ বাংলাদেশকে নিয়ে বহু খেলা হয়েছে, আর কেউ যেন বাংলাদেশের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে সেভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।

বিএনপির নাম না নিয়ে দলটিকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে দল গঠন করা হয়েছিল অবৈধ উপায়ে তাদের মুখে শুনতে হয় গণতন্ত্রের কথা। তারা কোন প্রক্রিয়ায় দল গঠন করেছিল আর ক্ষমতায় এসেছিল? আজকে যে গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন তোলে? গণতন্ত্রের সংজ্ঞাটা কী, সেটুকু তারা জানে কি না? বা গণতন্ত্রটা বানান করতে পারবে কি না, সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে।’

প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বিএনপি নেতাদের নামে দায়ের হওয়া মামলা নিয়ে ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, ‘বিএনপির অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে মামলা। এ মামলা কীসের মামলা? এ মামলা তো অন্য কোনো কারণে না। যারা মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, যারা হুকুমদাতা, যারা অর্থ প্রদান করেছে; সবার বিচার বাংলার মাটিতে হবে। মামলা মামলা করে চিল্লালে হবে না।’ তিনি বলেন, ‘খুনি খুনিই। খুনিদের বিচার বাংলার মাটিতে হবেই। তাদের কেউ রক্ষা করতে পারবে না। সেটাই আমাদের কথা।’

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। এতে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ ও কেন্দ্রীয় নেতারা।