খোলা বাজার২৪,বৃহস্পতিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৫: প্রশ্নোত্তরভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট কোরাতে গত মঙ্গলবার রাতে এক প্রশ্নোত্তর পর্বের আয়োজন করেন ফেসবুকের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা শেরিল স্যান্ডবার্গ। সেখানে অনেকের প্রশ্নের উত্তরে ফেসবুকে তাঁর কাজ, তাঁর ব্যক্তিগত জীবন এবং সেখানে কর্মপরিবেশ, নেতৃত্ব ও প্রযুক্তিতে নারীসহ বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা করেন। নির্বাচিত কিছু প্রশ্নের সংক্ষেপিত উত্তর নিয়ে এই আয়োজন—
তরুণ, হ্যাকার-সুলভ পরিবেশে ফেসবুকে আপনার শুরুর দিনগুলো কেমন ছিল?
শেরিল স্যান্ডবার্গ: আমার যোগ দেওয়ার সময় ফেসবুক ছিল সাড়ে ৫০০ কর্মীর এক প্রতিষ্ঠান। রাতদুপুরে মিটিং, সারা রাত ধরে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা তখন ফেসবুক সংস্কৃতির অংশে পরিণত হয়েছে। এমন এক পরিবেশে খাপ খাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না বলেই মনে হয়েছিল। এক রাতে মার্কের সঙ্গে কাজ করার কথা ছিল আমার। রাত নয়টার সময় ফোন দিয়ে বললাম, আমি আর আধা ঘণ্টা জেগে থাকব। পরদিন হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসে মার্ক জিজ্ঞেস করল, আমি অসুস্থ কি না। আমি বললাম, দুই সন্তান নিয়ে সব সময় সাড়ে নয়টার মধ্যেই আমাকে ঘুমিয়ে পড়তে হয়। মার্ক নিজেই এখন সন্তানের বাবা। সাড়ে নয়টায় সে হয়তো ঘুমিয়ে পড়ে না, তবে একদিন সে বুঝতে পারবে।
প্রযুক্তিতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে পুরুষদের করণীয় কী?
শেরিল স্যান্ডবার্গ: ফেসবুকে আমার পছন্দের একটি বাণী, ‘ফেসবুকে কোনো কিছুই আরেকজনের সমস্যা না।’ অসমতা কিন্তু সবারই সমস্যা। পুরুষ-নারী সবার জন্যই লিঙ্গবৈষম্য ক্ষতিকর। শিল্প ও অর্থনীতির জন্য সমতা যে জরুরি তা সবাইকে বোঝাতে হবে।
১৯৮৫ সালে কম্পিউটার বিজ্ঞানে ৩৫ শতাংশ ছাত্রী ছিল, এখন ১৮ শতাংশ। বৈষম্য দূর করতে নিজে যেমন শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে, অন্যকেও সে সুযোগ করে দিতে হবে। ঘরেও দুজনেরই সমান সমান অবদান রাখতে হবে।
ডেস্কটপ থেকে মোবাইল ফোনের জন্য সংস্করণ শুরুর সময়টাতে ফেসবুকের জন্য সবচেয়ে কঠিন কী ছিল?
শেরিল স্যান্ডবার্গ: মানুষ এত দ্রুত মোবাইলে ফেসবুক ব্যবহার শুরু করে যে তাল মেলানোটাই আমাদের জন্য সবচেয়ে কঠিন ছিল। ডেস্কটপ সংস্করণে প্রচুর বিনিয়োগ করা হয়েছিল। নতুন করে সবাইকে প্রশিক্ষণ দিতে হয়েছে। পরিবর্তনটা কঠিন ছিল, তবে আমরা কাজটা করে দেখিয়েছি।
কোরায় শেরিল স্যান্ডবার্গেল সঙ্গে আলাপনের পেজনিয়োগ দেওয়ার সময় ব্যক্তিগত কোন গুণগুলো আপনি দেখেন?
শেরিল স্যান্ডবার্গ: ফেসবুকে আমরা মূলত নির্মাতাদের চাই। এমন কাউকে চাই, যে আমাদের প্রযুক্তি, পণ্য এবং ব্যবসাকে সামনে এগিয়ে নিতে পারবে। নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে পারদর্শী না, বরং দুনিয়াটাকে এক সুতোয় বাঁধার যে লক্ষ্য আমাদের, তা বাস্তবায়নে সক্ষম মানুষেরই আমাদের দরকার।
দিনের পরিকল্পনা কীভাবে করেন?
শেরিল স্যান্ডবার্গ: বাচ্চাদের স্কুলে নিয়ে যাওয়া, কাজে যাওয়া, মিটিংগুলোকে যতটা সম্ভব কার্যকরী করে তোলা, রাতের খাবারটা পরিবারের সঙ্গে খাওয়া—সারা সপ্তাহের দিনগুলো এভাবেই কাটে আমার। ফেসবুকে আমরা চারদিকে পোস্টারে অনুপ্রেরণার বাণী ঝুলিয়ে রাখি। যার একটাতে লেখা, ‘ভবিষ্যৎটা অল্প কিছু মানুষের হাতেই, যারা এখনো নিজের হাত নোংরা করতে আগ্রহী।’
কোরা অবলম্বনে