১খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৫: গত তিন মৌসুমের সাড়ে ১২ হাজার মেট্রিক টন অবিক্রিত চিনি ও ১৫০ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা মাথায় নিয়ে আজ আবার চালু হচ্ছে ঠাকুরগাঁও সুগার মিল।
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু শুক্রবার সকাল ১০টায় মিলের ২০১৫-১৬ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন করবেন বলে শিল্পমন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এনায়েত হোসেন জানান, উদ্বোধনের পর এ বছর ৫৬ দিন মিলটি চালু রেখে ৭৫ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৫ হাজার ২৫০ মেট্রিক টন টিনি উৎপাদন করা হবে। গেল তিন মৌসুম ধরে ঠাকুরগাঁও চিনিকলের উৎপাদিত চিনি বিক্রি হচ্ছেনা। বর্তমানে মিলটিতে মজুদ রয়েছে সাড়ে ১২ হাজার মেট্রিক টন চিনি। এর মধ্যে ২০১২-১৩ সালের উৎপাদিত ৪ হাজার মেট্রিক টনের বেশি চিনির গুণগত মান নষ্টের পথে। ২০১৩-১৪ সালে অবিক্রিত চিনি আছে ২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন এবং সর্বশেষ ২০১৪-১৫ সালের চিনি মজুদ আছে ৩ হাজার ৮৪৭ মেট্রিক টন। জেলার ২৩ জন চিনির ডিলার থাকলেও তারা দেশি চিনি বিক্রি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। ফলে চিনি অবিক্রিত থাকা আর শ্রমিক কর্মচারীর বেতন-ভাতা ও আখের দাম পরিশোধ করতে গিয়ে মিলটিতে দিনদিন লোকসানের পরিমাণ বাড়ছে।
মিলের শ্রমিক কর্মচারীদের অভিযোগ বেতনের বদলে চিনি দেওয়ায় বাহিরে চিনি বিক্রি করতে গিয়ে মূল বেতন থেকে কমে যাচ্ছে শতকরা ৬ থেকে ৮ ভাগ টাকা। অন্যদিকে সময় মতো আখের টাকা না পেয়ে আখচাষ থেকে বিমুখ হচ্ছেন কৃষকরা।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরো জানান, দীর্ঘদিনের পুরানো এ মিলটি বেশি সময় চালু রেখে লোকসান কমাতে মিল কর্তৃপক্ষ বহুমুখী কর্ম প্রস্তাবনা দিয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে। প্রস্তাবনা প্রকল্প চালু হলে আরো বেশি চিনি উৎপাদনের পাশাপাশি এখান থেকে বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে। মিলটি সংস্কার করে আখ সংকট রোধে সুগারবিটে উৎপাদন হবে চিনি। আর বায়োগ্যাস প্লান্টের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন, বায়োফার্টিলাইজার প্লান্টসহ বহুমুখী প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বাড়বে চিনি উৎপাদন ক্ষমতা, ফলে লোকসান কমে আসবে।
শুক্রবারের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন, দবিরুল ইসলাম, ইয়াসিন আলী, সেলিনা জাহান, জেলা পরিষদ প্রশাসক সাদেক কুরাইশী, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান একেএম দেলোয়ার হোসেন, মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এনায়েত হোসেন প্রমুখ।